শুভ জন্মদিন ‘ফাইটার’ খালেদ মাহমুদ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক খালেদ মাহমুদ সুজনের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)।
ফেসবুকে খালেদ মাহমুদকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আইসিসি পোস্ট করেছে, ‘পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ পেসার ৩১ রানে ৩ উইকেট পেয়েছিলেন ১৯৯৯ আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ ম্যাচে। ঐতিহাসিক সেই জয়ের পাশাপাশি বাংলাদেশকে টেস্ট স্ট্যাটাস পেতে তার পারফরম্যান্স বড় ভূমিকা রেখেছিল। শুভ জন্মদিন খালেদ মাহমুদ।’
জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়কের বিশ্বকাপের কীর্তির পাশাপাশি তার পারফরম্যান্সের পরিসংখ্যান দিয়েছে আইসিসি। ১২ টেস্ট ও ৭৭ ওয়ানডেতে ৮০ উইকেট পেয়েছেন খালেদ মাহমুদ।
১৯৭১ সালে আজকের দিনে ঢাকা জন্মগ্রহণ করেন খালেদ মাহমুদ। ছোটবেলা থেকেই ক্রিকেটে অন্তপ্রাণ তিনি। নব্বইয়ের দশকে খালেদ মাহমুদ ছিলেন ঢাকার যে কোনো মাঠের ক্রিকেটে প্রতিপক্ষের কাছে এক আতঙ্ক। টেপ টেনিস ক্রিকেট দিয়ে পথ চলা শুরু হলেও দ্রুত ক্রিকেট বলে আলোড়ন তোলেন। দেশের বিভিন্ন মাঠে ‘খ্যাপ’ খেলে খালেদ মাহমুদ ঢাকার ক্লাব ক্রিকেটে প্রবেশ করেন।
ক্লাব ক্রিকেট থেকে জাতীয় দলে। শুরু থেকেই ব্যাট-বলে সমান অবদান রাখা শুরু করেন। ক্যারিয়ারের সবথেকে বড় ব্রে থ্রু পান ৯৯’ বিশ্বকাপে। পাকিস্তানের বিপক্ষে তার ২৭ রান ও ৩ উইকেটে ইতিহাস সৃষ্টি করে বাংলাদেশ। খালেদ মাহমুদ হয়ে যান ইতিহাস স্রষ্টা। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
বাংলাদেশের তৃতীয় টেস্ট অধিনায়ক তিনি। টেস্টে তার নেতৃত্ব ও পারফরম্যান্স নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা হলেও মুলতানে যা করেছিলেন সেজন্য ক্রিকেট বিশ্ব তাকে মনে রেখেছে। তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে হারানোর দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গিয়েছিল বাংলাদেশ। ইনজামাম অবিস্মরণীয় ইনিংস না খেললে খালেদ মাহমুদ হতে পারতেন বাংলাদেশের প্রথম টেস্টজয়ী অধিনায়ক। লড়াকু মাহমুদ সেদিন হার মেনেছিলেন। চোখের জলে ছেড়েছিলেন মুলতানের মাঠ। কিন্তু ক্রিকেট বিশ্ব সেদিন বাহবা দিয়েছিল মাহমুদের অদম্য লড়াই করার মানসিকতাকে।
খেলা ছাড়ার পর খালেদ মাহমুদ কোচ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সেখানেও তিনি সফল। দেশের একাধিক শীর্ষ ক্রিকেটার তিনি উঠিয়ে এনেছেন মাঠ থেকে। কখনো নিজ দলে খেলিয়েছেন, কখনো দল পাইয়ে দিয়েছেন। কোচ হিসেবে তার সাফল্য ভান্ডারও ভরপুর। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জিতেছেন।
সংগঠক হিসেবে তার অর্জনের শেষ নেই। কোচিংয়ের পাশাপাশি বিসিবির শীর্ষ পরিচালকদের একজন তিনি। বিসিবির গেম ডেভেলাপমেন্টের চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তার বিচক্ষণতা ও দীর্ঘ পরিকল্পনাতেই আকবর আলীরা এ বছর জিতেছে যুব বিশ্বকাপ। এছাড়া জাতীয় দলের ম্যানেজার হিসেবেও সফল খালেদ মাহমুদ।
বর্ণাঢ্য ক্রিকেট জীবনে কড়া সমালোচনার শিকার খালেদ মাহমুদ। নিয়মিত ট্রল, সমালোচনা হচ্ছে তাকে ঘিরে। সেসবে কার্পণ্য না করে খালেদ মাহমুদ ক্রিকেটের প্রতি নিবেদিত প্রাণ হিসেবে এগিয়ে চলছেন দুর্বার গতিতে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাস যতদিন থাকবে ততদিন খালেদ মাহমুদও বেঁচে থাকবেন। যত সমালোচনাই থাকুক না কেন, ক্রিকেট পাড়ায় একটা সত্য সবাই মানেন, খালেদ মাহমুদ মাঠের মানুষ। ব্যাট-বল নিয়েই থাকতে পছন্দ করেন।’ এমন ক্রিকেটপ্রেমির জন্মদিনে রাইজিংবিডির শুভেচ্ছা।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৬জুলাই, ২০২০)