পল্লবীর ঘটনায় কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি : ডিবি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পল্লবী থানায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ও গ্রেপ্তারকৃতদের বিষয়ে কথা বলেছেন মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি’র) অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুল বাতেন। এ ঘটনায় কোনো জঙ্গি সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। বৃহস্পতিবার (৩০ জুলাই) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় পল্লবী থানায় দুটি মামলা হয়েছে। যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদ ও তদন্তে আমরা যা পাচ্ছি এটা ‘স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার সংশ্লিষ্ট একটি ক্রিমিনাল অ্যাক্টিভিটিস (অপরাধ কর্মকাণ্ড)’। জঙ্গির কোনো সংশ্লিষ্টতা আমরা এখনো পাইনি। তারা কেন কাকে কীভাবে হত্যা করার জন্য পরিকল্পনা করেছিল সে বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। এর বেশি কিছু পেলে আমরা পরবর্তীতে জানাবো।
পল্লবী থেকে গ্রেপ্তার তিনজনের একজন শহীদুল, তাকে ৩ দিন আগে একটি মাইক্রোতে তুলে নেয়া হয়েছিল বলে দাবি করছে তার পরিবার। এ বিষয়ে থানায় জিডি আছে। তার পরও তাকে কীভাবে আগের রাতে গ্রেপ্তার করা হলো?
এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আব্দুল বাতেন বলেন, আপনার বক্তব্য আমরা তদন্ত করে দেখবো। আমরা এ ধরনোর কোনো তথ্য পাইনি। আমরা তাদের হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেছি। যে বস্তুটি উদ্ধার করেছি (বোমা) সেটা আপনারা দেখেছেন। এর বাইরে যদি কোনো বিষয় থাকে সেটা আমরা তদন্ত করে দেখব।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে আব্দুল বাতেন বলেন, এখন যদি আপনি সব প্রশ্নের উত্তর চান তাহলে দেয়া যাবে না। আবার অনেক কিছু আছে যা তদন্তের স্বার্থে আপনাকে বলাও যাবে না। আপনাকে বিস্তারিত সবকিছু খুলে বলার মতো আমার কাছে তথ্য নাই। তিনি বলেন, এই সংক্রান্তে আমাদের এতটুকুই।
উল্লেখ্য, রাজধানী ঢাকার মিরপুরের পল্লবী থানায় বুধবারের (২৯ জুলাই) বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেট (আইএস)। অনলাইনে জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণকারী মার্কিন সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপ পল্লবী থানায় বিস্ফোরণের দায় আইএস স্বীকার করেছে বলে রাতে তাদের ওয়েবসাইটে জানিয়েছে। সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপের পরিচালক রিটা কাটজ এক টুইট বার্তায় বলেছেন, বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় পুলিশের একটি দপ্তরে হামলার দায় স্বীকার করেছে আইএস।
যদিও পল্লবী থানায় বিস্ফোরণের ঘটনাটি জঙ্গি সংশ্লিষ্ট নয় বলে গতকালই জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায়। তিনি বলেন, স্থানীয় একটি অপরাধীচক্র কোনো অপরাধ সংগঠনের চেষ্টা করছিল সে সংবাদটির জানার পর পুলিশ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর ওই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
উল্লেখ্য, বিস্ফোরণের ব্যাপারে বুধবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ডিসি (মিডিয়া) ওয়ালিদ হোসেন বলেন, ভোরে পল্লবী এলাকা থেকে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে পল্লবী থানা হেফাজতে রাখা হয়। মিরপুর এলাকার একজন রাজনীতিক নেতাকে খুন করার জন্য তাদের ভাড়া করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, গ্রেপ্তারের পর তাদের থানায় আনা হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দু’টি অস্ত্র ও কিছু জিনিসপত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এগুলো থানার ইনস্পেক্টর অপারেশনের রুমে রাখা হয়। উদ্ধারকৃত জিনিসপত্রগুলোর মধ্যে ওজন মাপার মেশিন-সদৃশ্য একটি বস্তু ছিল। সকাল ৭টায় হঠাৎ সেটি বিস্ফোরণ হয়।
বিস্ফোরণে চার পুলিশ সদস্যসহ অন্তত পাঁচজন আহত হন। তারা হলেন, ইনস্পেক্টর অপারেশন ইমরান, উপ-পরিদর্শক (এসআই) সজিব খান, শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শক (পিএসআই) রুমি, শিক্ষানবিশ উপ-পরিদর্শক (পিএসআই) অঙ্কুশ। এছাড়া, রিয়াজ নামে একজন অফিস স্টাফ আহত হন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/৩০জুলাই, ২০২০)