পুঁজিবাজারে আইপিও অনুমোদনে কঠোর অবস্থানে বিএসইসি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: অসত্য তথ্য দিয়ে কোনো কোম্পানি যেন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে না পারে, সে লক্ষে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন নতুন কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদনের ক্ষেত্রে প্রসপেক্টাসে দেওয়া আর্থিক প্রতিবেদন কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।
সম্প্রতি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন এবং আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতি থাকায় পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির অপেক্ষোয় থাকা সাতটি কোম্পানির আইপিও বাতিল করে বিএসইসি। তবে যেসব কোম্পানির আইপিও বাতিল করা হয়েছে তারা পুঁজিবাজারে আসতে চাইলে আর্থিক প্রতিবেদন সংশোধন সাপেক্ষ পুনরায় বিএসইসিতে আবেদন করতে পারবে।
আইপিও বাতিল হওয়া কোম্পানিগুলো হলো- বি ব্রাদার্স গার্মেন্টস, বিডি পেইন্টস, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইজিট ম্যানুফেক্চারিং, বেকা গার্মেন্টস অ্যান্ড টেক্সটাইল, এসএফ টেক্সটাইল ইন্ডাস্ট্রিজ, আল ফারুক ব্যাগস ও ইনফিনিটি টেকনোলজি ইন্টারন্যাশনাল।
জানা গেছে, অতিরঞ্জিত ও অসত্য তথ্য এবং বিভিন্ন ধরনের সিকিউরিটিজ আইন ও হিসাবমান লঙ্ঘনের কারণে কোম্পানিগুলোর আইপিও আবেদন বাতিল করা হয়েছে। বিএসইসির নতুন চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামসহ তার সহযোগী কমিশনাররা কাজে যোগদানের পর থেকেই দুর্বল কোম্পানির আইপিও বাতিলের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে।
অতীতে আইপিওতে আসা বেশ কিছু কোম্পানির বর্তমান ব্যবসায়িক পরিস্থিতি হতাশাজনক অবস্থায় রয়েছে। কোম্পানির খারাপ পারফরম্যান্সের কারণে লোকসান গুণছেন বিনিয়োগকারীরা। বিতর্কিত বেশ কিছু কোম্পানির আইপিও অনুমোদনের কারণে বিগত কমিশনকে (বিএসইসি) অনেক সময় সমালোচনার সম্মখীন হতে হয়েছে। সে জন্য অতীত অভিজ্ঞতা থেকে বর্তমান কমিশন আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে বেশ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দুর্বল কোম্পানি যাতে আইপিও অনুমোদন না পায়, সে বিষয়ে কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সচেষ্ট রয়েছেন।
তবে দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর আইপিও বাতিলের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ইস্যু ম্যানেজারদের অভিযোগ, অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে ব্যবসা সম্প্রসারণ লক্ষ্য কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির আবেদন করে। সম্প্রতি কোম্পানিগুলোর আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতির কারণে বেশ কিছু কোম্পানির আইপিও বাতিল করেছে বিএসইসি। তবে দীর্ঘদিন অপেক্ষার পর কোম্পানিগুলোর আইপিও আবেদন বাতিল করাটা দুঃখজনক। এতে কোম্পানির ব্যবসা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা ব্যহত হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে নতুন কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসতে আগ্রহ হারাবে। তাই আইপিও অনুমোদনের ক্ষেত্রে দীর্ঘসূত্রিতা কমাতে হবে।
এ বিষয়ে বিএসইসির চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, অসত্য তথ্য দিয়ে আর কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হতে পারবে না। এ বিষয়ে আমরা কঠোর অবস্থান নিয়েছি। আইন ও বিধি-বিধান পরিপালন করে কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে আসতে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই বিনিয়োগকারীদের ক্ষতি হয় এমন কোনো সিদ্ধান্ত বিএসইসি নেবে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমবিএ) প্রেসিডেন্ট ছায়েদুর রহমান জানান, আইপিও অনুমোদনের বিষয়ে বিএসইসির কঠোর অবস্থানকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। তবে আইপিও অনুমোদনে দীর্ঘসূত্রিতা রয়েছে। এটি দূর করার বিষয়ে আমরা অনেকদিন ধরেই বলে আসছি।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১২আগস্ট, ২০২০)