দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক,খাগড়াছড়ি: সন্ত্রাসীদের ব্রাশ ফায়ারে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা  ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেকের স্ত্রী মোরশেদা বেগম নিহত ও ছেলে আহত হওয়ার প্রতিবাদে খাগড়াছড়িতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ । মানববন্ধনে এ হত্যাকান্ডের জন্য ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস সন্ত্রাসীদের দায়ী করে সন্ত্রাসীদের  গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।

আজ রবিবার সকালে খাগড়াছড়ি শহরের চেঙ্গী স্কয়ার থেকে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি আদালত সড়ক ঘুরে পৌর শাপলা চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগে করেন,জেলার দীঘিনালার বাবুছড়ার সোনা মিয়া টিলায় সন্ত্রাসীরা ৮১২ টি বাঙালি পরিবারের ভূমি কেড়ে নিয়ে সেখানে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ঘরে তুলেছে। আব্দুল মালেক দীর্ঘদিন ধরে বাঙালিদের দখলকৃত ভূমি উদ্বারে আন্দোলন করে আসছেন। এ কারনে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ ও আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস’র সন্ত্রাসীরা শুক্রবার দিবাগত রাত দেড় টার দিকে আব্দুল মালেককে হত্যার উদ্দেশে তার বাড়ীতে ব্রাশ ফায়ার করে। এ সময় তিনি প্রাণে বেঁচে গেলেও তার স্ত্রী মোরশেদা বেগম গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয় ও তার ছোট ছেলে মো: আহাদ আহত।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা সন্ত্রাসীদের গ্রেফতারে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, অন্যথায় খাগড়াছড়িসহ তিন পার্বত্য জেলাকে অচল করে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদে কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি মো: আবু তাহের, সিনিয়র সাধারন সাধারন সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর আব্দুল মজিদ,সিনিয়র সাধারন সাধারন সম্পাদক পৌর কাউন্সিলর এস এম মাসুম রানা,সাংগঠনিক সম্পাদক ও মাটিরাঙা উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: আনিছুজ্জামান ডালিম ও দপ্তর সম্পাদক লোকমান হোসেনসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
প্রসঙ্গত,শুক্রবার দিবাগত রাত দেড় টার দিকে সন্ত্রাসীরা সোনা মিয়া টিলা ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেকের বাড়ীতে এলোপাথারি গুলি ছুড়ে। এতে মোর্শেদা বেগম ও তাঁর ছেলে মো: আহাদ গুলিবিদ্ধ হয়। পরে স্থানীয়রা তাদেরকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দীঘিনালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোর্শেদা বেগমকে মৃত ঘোষনা করে। তার ছেলে আহাদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। সন্ত্রাসীরা আরো কয়েকটি বাড়ী লক্ষ্য করেও ব্রাশ ফায়ার করে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থল থেকে শতাধিক গুলির খোসা উদ্ধার করে।
সোনামিয়া টিলা ভূমি রক্ষা কমিটির সভাপতি আব্দুল মালেক জানান, দীর্ঘ কয়েক মাস ধরে বাবুছড়া গুচ্ছগ্রামে আঞ্চলিক সংগঠনের বেশকিছু কর্মী অবস্থান করছিল। তাদের বের করে দিতে ইউপিডিএফ প্রসীত গ্রুপ থেকে বেশ কয়েকবার হুমকি দেয়া হয়। স্থানীয় প্রশাসনকে জানানোর পরও কোন ব্যবস্থা নেয়নি। ইউপিডিএফ ও জেএসএস এর সন্ত্রাসীকে হামলার জন্য দায়ী করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার আব্দুল আজিজ জানান, আঞ্চলিক সংগঠনগুলো আধিপত্য বিস্তারের জেরে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে। মামলা হলে এ বিষয়ে পুলিশ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।
দীঘিনালায় থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব ( ১৬ আগষ্ট) জানান, এখনো পর্যন্ত এ ঘটনায় মামলা হয়নি। তবে আজকের মধ্যে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা হওয়ার কথা রয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট / টিআইএম/১৬.০৮.২০)