এমপি পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন পাপুল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কুয়েতে মানব ও অর্থপাচারের দায়ে আটক লক্ষ্মীপুর-২ আসনের স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুল সংসদ সদস্যের পদ হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছেন। সংবিধান অনুযায়ী দুই বছর জেল হলেই সংসদ সদস্য পদ হারানোর বিধান রয়েছে। এছাড়া দণ্ডিত হওয়ার পর মুক্তি পেলে পাঁচ বছর তিনি নির্বাচনও করতে পারবেন না।
পাপুলের সদস্য পদ নিয়ে কোনো বিতর্ক দেখা দিলে এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হবে।
আটক পাপুলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হলে ১৫ বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা হতে পারে। গ্রেপ্তার পাপুলের এমপি পদের ভবিষ্যৎ কী হতে পারে- জানতে চাইলে সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, “আমাদের সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে ‘সংসদে নির্বাচিত হওয়ার যোগ্যতা ও অযোগ্যতা’ সম্পর্কে বলা আছে। সেখানে বর্ণিত বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
সংবিধানের ৬৬ অনুচ্ছেদে বলা আছে- কোনো ব্যক্তি সংসদ সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার এবং সংসদ সদস্য থাকার যোগ্য হবেন না, যদি-
>> কোনো উপযুক্ত আদালত তাকে অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা করে;
>> তিনি দেউলিয়া ঘোষিত হওয়ার পর দায় হতে অব্যাহতি না পেয়ে থাকেন;
>> তিনি যদি কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব অর্জন করেন কিংবা কোনো বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য ঘোষণা বা স্বীকার করেন;
>> তিনি নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হয়ে অন্যূন দুই বছরের কারাদণ্ডে দণ্ডিত হন এবং মুক্তির পর পাঁচ বছর অতিবাহিত না হয়ে থাকেন।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৬৬ (২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নৈতিক স্খলনজনিত কোনো ফৌজদারি অপরাধে দুই বছর কারাদণ্ডে দণ্ডিত হলে মুক্তি পাওয়ার পর পাঁচ বছর পর্যন্ত তিনি আর সংসদ সদস্য হওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না।
মানবপাচার, ভিসা বিক্রি, অর্থপাচার ও ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে কুয়েতে গ্রেপ্তার বাংলাদেশি সংসদ সদস্য শহিদ ইসলাম পাপুল অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। পাশাপাশি দেশটির সরকারি কর্মকর্তাদের দুর্নীতিগ্রস্ত হিসেবে অভিযোগ তুলেছেন।
গত ৬ জুন সংসদ সদস্য পাপুল দেশটির পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হন। রিমান্ডে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সর্বশেষ গত ২৪ জুন তাকে ২১ দিনের জন্য কুয়েতের কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। রিমান্ডে থাকা অবস্থায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনটি জোটের দল জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। কিন্তু নির্বাচনে মোহাম্মদ নোমান সরে দাঁড়ালে সেখানে নির্বাচিত হন পাপুল। এ বিষয়টি সামনে আসায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করেন জাপা চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।
অন্যদিকে পাপুলের স্ত্রী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সেলিনা ইসলামও জাতীয় পার্টির সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি হন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭আগস্ট, ২০২০)