স্প্রিন্টারের ব্যাথা নিয়েই বেঁচে আছেন রহিছ খান
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় স্প্রিন্টারের আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের রহিছ খান। দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে শরীরে কয়েকটি স্প্রিন্টারের ব্যথা নিয়ে আজও বেঁচে আছেন তিনি।
মাঝে মাঝে অসহ্য ব্যাথায় কাতরে উঠেন রহিছ খান। এখন পর্যন্ত তিনবার শরীরে অপারেশন করতে হয়েছে তার। সেদিনের ভয়াবহতার স্মৃতি মনে হলে এখনও কেঁদে উঠে রহিছ খান। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী গ্রামের মরহুম ইউনুস মিয়ার ছেলে আওয়ামী লীগ নেতা এম. রহিছ খান।
২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় সেদিন আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী নিহত হন, আহত হন কয়েকশ নেতাকর্মী।স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে রহিছ খান বলেন,সেদিন বিকেলে রাজধানীর বনানী থেকে আমাদের এমপি ক্যাপ্টেন তাজুল ইসলামের সাথে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের জনসভায় যাই। জনসভা শুরু হলে শেখ হাসিনা ট্রাকের উপর স্থাপিত মঞ্চে দাঁড়িয়েছিলেন। বক্তৃতা শুরুর আগে মঞ্চের প্রায় ১০গজ দূরে দাঁড়িয়ে বক্তব্য শুনছিলাম। বক্তব্যর শেষ পর্যায়ে গ্রেনেডের বিকট শব্দে আমরা দৌঁড়ে পালানোর চেষ্টা করি। কিন্তু গ্রেনেডের স্প্রিন্টারের আঘাতে আমি রাস্তায় পড়ে যাই। প্রচুর রক্ত বের হলে আমি একপর্যায়ে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরে প্রত্যক্ষদর্শীরা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করায়। ওখানে অপারেশন করে কয়েকটি স্প্রিন্টার বের করা হয়। পাঁচদিন পর কিছুটা সুস্থ হয়ে উঠি। পরবর্তীতে আবারো ব্যথা হলে দ্বিতীয় দফায় ২০১১ সালে ঢাকার সিএমএইচে অপারেশন করাই।
এখনো ঘুমের ঘরে স্বপ্নে সেই দিনের গ্রেনেডের স্মৃতি ভেসে আসে বারবার। মনে হয় বুঝি তখনই গ্রেনেডের স্প্রিন্টারে বিদ্ধ হচ্ছি আমি।রহিছ খান আরো বলেন, আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়েছেন। সেদিন ঘটনার পর বিএনপি সরকার জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে গ্রেনেড হামলার বিচারের পথ বন্ধ করার ষড়যন্ত্র করেছিল। শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে ঘটনার বিচারের রায় হয়েছে। রায়ের বাস্তবায়ন এখনো অনেক দূর। কেবল উচ্চ আদালতে পেপারবুক তৈরি হয়েছে। শুনেছি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে আসামীরা আপীল করেছে। আমি চাই বিচারের রায় বহাল রেখে অপরাধীদের শাস্তি কার্যকর করা হোক। বেঁচে থাকতে আমি বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে তা দেখে যেতে চাই।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগ নেতা রহিছ খান বাঞ্ছারামপুর উপজেলার রূপসদী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের বর্তমান সহ-সভাপতি। ১৯৮৭ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত রূপসদী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক, পরে ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত সভাপতি, ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন যুবলীগের আহবায়ক ও উপজেলা যুবলীগের সদস্য ছিলেন। ২০০৪ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক, ২০১২ সাল থেকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২১আগস্ট, ২০২০)