ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগ সভাপতি ৩ দিনের রিমান্ডে
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় গ্রেপ্তার ফরিদপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহামুদ শামীমকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। মানি লন্ডারিং আইনে কাফরুল থানার মামলায় শনিবার (২২ আগস্ট) তদন্ত কর্মকর্তা সাতদিনের রিমান্ডে আবেদন করে নিশানকে আদালতে হাজির করেন। আবেদন বিবেচনায় নিয়ে বিচারক বাকী বিল্লাহ তাকে তিনদিনের রিমান্ডে পাঠানোর আদেশ দেন।
আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন ( জিআর) শাখা থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
এর আগে, শুক্রবার (২১ আগস্ট) বিকেলে ঢাকার উত্তরা এলাকা থেকে সিআইডির একটি দল তাকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান।
গত ২৬ জুন শহর আওয়ামী লীগের অব্যাহতিপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত ও তার ভাই ইমতিয়াজ হাসান রুবেলকে প্রধান আসামি করে অবৈধ উপায়ে দুই হাজার কোটি টাকা আয় ও পাচারের অভিযোগে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলাটি দায়ের করে সিআইডি। সেই মামলায় আদালতের মাধ্যমে রুবেল ও বরকতকে পাঁচদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। সেসময় এর সঙ্গে জড়িত অনেকের নাম প্রকাশ করেন তারা।
রুবেল-বরকতের স্বীকারোক্তি ও তথ্যানুযায়ী ছাত্রলীগের সভাপতি নিশান মাহামুদ শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর আগে, এই মামলায় আরো গ্রেপ্তার হয়েছেন শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার লেভী ও জেলা শ্রমিক লীগের অর্থ সম্পাদক বেল্লাল হোসেন।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলীমুজ্জামান গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, দুই হাজার কোটি টাকা পাচারের মামলায় শামীমের নাম আসায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি। তার বিরুদ্ধে ফরিদপুরে চাঁদাবাজি ও হামলার মামলা রয়েছে। সিআইডির জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ফরিদপুরে নিয়ে আসা হবে।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ জুন রাতে শহরের মোল্লাবাড়ি সড়কে অবস্থিত জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সুবল সাহার বাড়িতে দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে সুবল চন্দ্র সাহা গত ১৮ জুন ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন। ৭ জুলাই পুলিশের বিশেষ অভিযানে সুবল সাহার বাড়িতে হামলার মামলায় গ্রেপ্তার হন ফরিদপুর শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বরকত তার ভাই ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি ইমতিয়াজ হাসান রুবেলসহ আরো সাতজন। এর পরে সিআইডি পুলিশ বরকত ও রুবেলের অবৈধ সম্পদ অর্জনের বিষয়ে তদন্তে নামে। তদন্তে প্রাথমিকভাবে দুই হাজার কোটি টাকা অবৈধ উপায়ে অর্জন ও পাচারের তথ্য পাওয়া গেলে ঢাকার কাফরুল থানায় মামলা করে সিআইডি।
এ ঘটনার পর বরকতকে শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং রুবেলকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা সুবল সাহার বাড়িতে হামলার ঘটনার পর ফরিদপুরে পুলিশের বিশেষ অভিযানে শুক্রবার পর্যন্ত ১৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উল্লেখযোগ্যদের মধ্যে রয়েছে- শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজমুল ইসলাম খন্দকার, জেলা শ্রমিক লীগের কোষাধ্যক্ষ বিল্লাল হোসেন, শহর যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসিবুর রহমান ফারহান, ছাত্রলীগ সভাপতি নিশান মাহামুদ শামীম প্রমুখ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২২আগস্ট, ২০২০)