পিএসজির প্রথম নাকি বায়ার্নের ষষ্ঠ?
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ঘরোয়া ডাবল জেতা হয়ে গেছে দুই দলেরই। এবার ট্রেবল জয়ের পালা। কিন্তু জিতবে কারা? প্রথমবারের মতো চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল ওঠা প্যারিস সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) নাকি একাদশতম বারের মতো ফাইনালে ওঠা বায়ার্ন মিউনিখ?
উত্তর জানতে চোখ রাখতে হবে রাত ১টায়, সনি টেন ২ তে। পর্তুগালের লিসবনের এস্তাদিও দ্য লুজ স্টেডিয়াম থেকে দর্শকদের জন্য ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার হবে।
ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে নিজেদের ক্লাব ক্যারিয়ারের পঞ্চাশতম বছরে এসে প্রথমবারের মতো শিরোপার সামনে দাঁড়িয়ে পিএসজি। অপরদিকে জার্মান চ্যাম্পিয়ন বায়ার্ন মিউনিখ ইতিমধ্যে পাঁচবার জিতেছে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। আজ ষষ্ঠ শিরোপার লক্ষ্যে নামবে তারা। অভিজ্ঞতার দিক থেকে তাই বায়ার্ন অনেকদূর এগিয়ে। কিন্তু এবারের পিএসজি যেন পরিপূর্ণ এক প্যাকেজ।
কাতারি কোম্পানি ফরাসি ক্লাবটি কেনার পর থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার খরচ করে গেছে ইউরোপিয়ান শিরোপা অর্জনের জন্য। রেকর্ড অর্থ খরচ করে দলে ভিড়িয়েছে ব্রাজিলিয়ান নেইমারের মতো তারকাকে। এছাড়াও শক্তিশালী আক্রমণভাগে আরও আছেন ফরাসি বিশ্বকাপজয়ী তারকা কিলিয়ান এমবাপ্পে। আর্জেন্টাইন অ্যাঙ্গেল ডি মারিয়া তো সেমিফাইনালে দলে ফিরেই নিজের কথা জানান দিয়ে সতর্ক করে রাখলেন বায়ার্ন শিবিরকে। মাউরো ইকার্দিকে নিয়েও আলাদ করে ভাবতে হবে বায়ার্ন কোচ হান্স ফ্লিককে।
পিএসজির এই দলে চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলা ফুটবলার আছেন তিনজন। নেইমার, নাভাস এবং ডি মারিয়া। এই ম্যাচে তাই এদের দিকে তাকিয়ে থাকবে দল। তবে এই ম্যাচে পিএসজির বড় পরীক্ষা হবে ডিফেন্সে। দলটির কোচ থমাস টুখেল কী পরিকল্পনা সাজিয়েছেন বায়ার্নের আক্রমণ রুখতে সেটি দেখার বিষয়। বায়ার্নের সহকারী কোচের দায়িত্ব পালন করে আসা ৪৬ বছর বয়সী টুখেল প্রতিপক্ষ সম্বন্ধে ভালোই ধারণা রাখেন। তবে অপ্রতিরোধ্য হয়ে ওঠা বায়ার্ন আক্রমণভাগকে আটকাতে পারবে তো পিএসজির রক্ষণ?
ফরাসি ক্লাবটির অধিনায়ক থিয়াগো সিলভা অবশ্য প্রাণপণেই চেষ্টা করে যাবেন নিশ্চয়ই। কারণ, চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল দিয়েই পিএসজির হয়ে লম্বা ক্যারিয়ারের ইতি টানতে চলেছেন এই ব্রাজিলিয়ান। শিরোপা জয়ে রাঙিয়ে তাই বিদায় নিতে চাইবেন তিনি।
যদিও বড় সংশয়ের নাম বায়ার্নের আক্রমণভাগ। যেখানে প্রতিনিধিত্ব করছেন রবার্ট লেভানদোভস্কি, সার্জিও জিন্যাব্রি এবং থমাস মুলার। কী দুর্দান্ত ফর্মেই না আছেন এই তিন ফুটবলার। আলাদা করে অবশ্যই লেভানদোভস্কির কথা বলতে হয়। ৩১ বছর বয়সী এই ফুটবলার নিজের ক্যারিয়ারের সেরা সময় পার করছেন। ঘরোয়া লিগে তাণ্ডব চালানোর পর চ্যাম্পিয়নস লিগেও নিজেকে প্রমাণ করে যাচ্ছেন অসাধারণভাবে।
এই মৌসুমের সর্বশেষ ম্যাচ খেলতে নামার আগে এই পোলিশ স্ট্রাইকারের নামের পাশে গোলসংখ্যা ৪৬ ম্যাচে ৫৫টি। যেখানে চ্যাম্পিয়নস লিগে আছে ১৫ গোল। আর মাত্র দুই গোলের অপেক্ষা। তাহলে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার এক লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতার রেকর্ডে ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে ভাগ বসাবেন। তবে কেবল লেভানদোভস্কিকে নিয়ে ভাববেন? সে উপায় নেই থমাস টুখেলের সামনে। চ্যাম্পিয়নস লিগে দারুণ ফর্মে আছেন জিন্যাব্রিও। ইতিমধ্যে ৯ ম্যাচে করে ফেলেছেন ৯ গোল। সেমিফাইনাল জয়ের নায়কও তিনি। এদিকে মুলার, ফিলিপ কৌতিনহো, জসুয়া কিমিচরা তো নিজেদের প্রমাণ করেই যাচ্ছেন হরহামেশাই। এদিকে বায়ার্নের নতুন সেনসেশন আলফানসো ডেভিসের দিকে নজর তো রাখতেই হবে।
মাঠের পর্যালোচনা তো করা হলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কে জিতবে চ্যাম্পিয়নস লিগের শিরোপা। পিএসজির নেইমার জানিয়ে রেখেছেন শিরোপা জেতা ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না তিনি। এমবাপ্পে বলেছেন, ইতিহাসের অংশ হতেই পিএসজির হয়ে শিরোপা জিততে চান। ফাইনালে জয়ে ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না বায়ার্ন কোচ হান্স ফ্লিকও। দুই দলের এমন তীব্র আকাঙ্খাকে সঙ্গী করে দর্শকদের মনে তাই প্রশ্ন উঠেই আসবে, তবে কি পিএসজির প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ই সত্য হয়ে ধরা দেবে নাকি ষষ্ঠবারের মতো ইউরোপিয়ান শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে জিতে যাবে বায়ার্ন মিউনিখ?
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৩আগস্ট, ২০২০)