বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে ৫ হাজার ঘেরের মাছ। পুঁজি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন অনেক মাছ চাষি।

বাগেরহাট জেলা মৎস্য বিভাগ জানায়, অতিবৃষ্টি ও ভরা মৌসুমে জোয়ারের পানি কয়েক ফুট বেড়ে লোকালয়ে প্রবেশ করেছে। এরফলে বাগেরহাট সদর, মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা, রামপাল, মোংলা, চিতলমারী এই ৬ উপজেলার প্রায় ৫ হাজার মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। এতে চাষিদের বিপুল পরিমাণ আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে মোংলা ও মোরেলগঞ্জের মাছ চাষিদের। মোংলায় ১ হাজার ৭৬৫ ও মোরেলগঞ্জে ২ হাজার ২৬৫ ঘের ডুবে গেছে। সরকারি হিসেবে ঘূর্ণিঝড় আম্ফানে বাগেরহাট জেলায় চার হাজার ৬৩৫টি মাছের ঘের তলিয়ে চাষিদের ২ কোটি ৯০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছিল। যদিও চাষিরা ক্ষতির পরিমাণ আরও বেশি বলে দাবি করেছিলেন।

রামপাল উপজেলার মাছ চাষি কাজী কামরুল ইসলাম বলেন, ‘আম্ফাণের কারণে আমাদের চার ভাইয়ের মাছের ঘের ভেসে গিয়ে অনেক টাকার ক্ষতি হয়। পরে ধার দেনা করে আবারও মাছ চাষ শুরু করি। মাত্র ১৫ দিন মাছ বিক্রি করার পর জোয়ারের পানিতে ভেসে গেলো কোটি টাকার মাছ। এবার সব শেষ হয়ে গেলো।’

বাগেরহাট জেলা চিংড়ি চাষি সমিতির সভাপতি ফকির মহিতুল ইসলাম সুমন বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের পর আমরা ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা করছিলাম। যখনই চাষিরা মাছ বিক্রি শুরু করলো তখন জোয়ারের পানিতে ঘেরগুলো তলিয়ে মাছ ভেসে গেলো। জোয়ারের পানিতে মাছ চাষিদের শত কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে।’

বাগেরহাট জেলা মৎস্য কর্মকর্তা ড. মো. খালেদ কনক বলেন, ‘জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের ৬টি উপজেলার প্রায় ৫ হাজার মাছের ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চাষিদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে বিষয়টি নিরূপণ করতে মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছি আমরা।’ তাদের ক্ষতি পোষাতে সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের দাবি জানান এ মৎস‌্য কর্মকর্তা।

তিনি জানান, এবার জেলায় প্রায় ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে বাগদা ও গলদা চিংড়ির চাষ হয়। গত অর্থবছরে সাড়ে ১৬ হাজার মেট্রিক টন বাগদা ও সাড়ে ১৫ হাজার মেট্রিক টন গলদা চিংড়ির চাষ হয়েছিল।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৪আগস্ট, ২০২০)