রংপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতার দু’জন হলেন- প্রধান আসামি আসাদুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীর আলম।

হাকিমপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস ওয়াহিদ সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত পৌনে চারটার দিকে দিনাজপুরের কালিগঞ্জ সীমান্ত এলাকার বোনের বাড়ি থেকে আসাদুলকে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব) ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে। এছাড়াও অপর এক অভিযানে জাহাঙ্গীরকে আটক করেছেন র‍্যাব সদস্যরা। পরে তাদের রাতেই র‍্যাব-১৩ এর হেডকোয়ার্টার রংপুরে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে বৃহস্পতিবার ওয়াহিদা খানমের ভাই ঘোড়াঘাট থানায় বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিনগত রাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর কেটে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে তাকে রংপুরে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে জরুরিভিত্তিতে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স হাসপাতালে আনা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ইউএনওর সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর কেটে দুর্বৃত্তরা তার শয়নকক্ষে ঢুকে পড়েন। এর আগে দুর্বৃত্তরা ওই বাসভবনের নিরাপত্তা প্রহরীকে বেঁধে প্রহরী কক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখেন। ইউএনওর বাবা ওমর আলী প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে তিনি হাঁটতে বের না হওয়ায় সঙ্গীরা তার খোঁজ নেওয়ার জন্য বাসভবনে যান। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তারা থানায় খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউএনও, তার বাবা ও প্রহরীকে উদ্ধার করে। ইউএনওর বাবাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ (রমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ৫মিনিটের দিকে ইউএনও ওয়াহিদার অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়েছে। পরে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে ( আইসিইউ) নেওয়া হয়। তার শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে অস্ত্রোপচারের জন্য ইউএনও ওয়াহিদাকে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে নেওয়া হয়। অপারেশন থিয়েটারে নেওয়ার আগে সিটি স্ক্যান করা হয়। রক্তচাপ পরীক্ষা করে তা স্বাভাবিক পাওয়ায় অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

কর্তব্যরত চিকিৎসকরা জানান, দুর্বৃত্তের হামলায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথার বাম দিকটা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তার মাথার কিছু অংশ ভেঙে মস্তিষ্কের ভেতরে চাপ তৈরি করেছে। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সেটি অপসারণ করা গেলে অবস্থার উন্নতি হবে এমন আশা থেকে তার অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০)