সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: আজ শুক্রবার। আরবিতে এ বারকে বলা হয় ‘ইয়াউমুল জুমুআ’। ‘জুমুআ’ অর্থ সমাবেশ কিংবা সপ্তাহ। এদিনটি মুসলমানদের সমাবেশের দিন। সপ্তাহের এই একদিন মুসলমানরা বেশি মসজিদে সমবেত হয়। তাই একে ইয়াউমুল জুমুআ বলা হয়। বাংলায় জুমার দিন, জুম্মাবার কিংবা শুক্রবার।
দিনটি স্বমহিমায় মহিমান্বিত, অনুপম মর্যাদায় শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে এদিনটির আলাদা বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আছে আলাদা মর্যাদা এবং শ্রেষ্ঠত্ব।
আল্লাহতায়ালা নভোমণ্ডল, ভূমণ্ডল এবং গোটা জগতকে ছয় দিনে সৃষ্টি করেছেন। এই ছয় দিনের শেষ দিন ছিল জুমুআর দিন। এদিনেই আদি পিতা হজরত আদম (আ.) সৃজিত হন। এদিনেই তাকে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয় এবং এদিনেই তাকে দুনিয়ায় পাঠানো হয়। কেয়ামত এদিনেই সংঘটিত হবে। এই দিনে এমন একটি মুহূর্ত আসে, তখন মানুষ যে দোয়াই করে, তা-ই কবুল হয়। - ইবনে কাসির
ইসলাম-পূর্বকালেও জুমুআর দিনকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হতো। জুমুআর দিন সম্পর্কে হাদিসে এসেছে- ‘জুমার রাত হলো উজ্জ্বল রাত। আর জুমআর দিন প্রোজ্বল। - মিশকাত
অন্য আরেক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘পাঁচটি এমন রাত আছে, যে রাতে দোয়া ফিরিয়ে দেয়া হয় না। এক, জুমআর রাত। দুই. রজবের প্রথম রাত। তিন. শাবানের পনেরোতম রাত। চার. ঈদুল ফিতরের রাত। পাঁচ. ঈদুল আজহার রাত। - বায়হাকি
আল্লাহতায়ালা প্রতি সপ্তাহে মানবজাতির সমাবেশ এবং ঈদের জন্য এদিনটি রেখেছিলেন। কিন্তু পূর্ববর্তী উম্মতরা তা পালন করতে ব্যর্থ হয়। ইহুদিরা শনিবারকে নিজেদের সমাবেশের নির্ধারিত করে নেয়। খ্রিস্টানরা নির্ধারিত করে রোববারকে। আল্লাহতায়ালা শুধু এই উম্মতকে সুযোগ দিয়েছেন, তারা এই দিনকেই তাদের সমাবেশের দিন হিসেবে মনোনীত করে। - ইবনে কাসির
হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, নিশ্চয়ই জুমার দিনে এমন মুহূর্ত আছে, কোনো মুসলমান যদি এর মধ্যে কল্যাণ কামনা করে, আল্লাহ তাকে অবশ্যই তা দান করবেন।’- মিশকাত
হজরত আনাস (রা.) থেকে একটি হাদিস বর্ণিত হয়েছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জুমার দিনের কাঙ্ক্ষিত সময়টা হলো আসরের পর থেকে সূর্যাস্তের পূর্ব পর্যন্ত। (মুসনাদে ইবনে আবি শাইবা : ৫৪৬০ , তিরমিজি : ৪৮৯)
জুমার দিনে আরেকটি ফজিলত হলো, যদি কেউ এদিন মারা যায়, তবে সে কবরের আজাব থেকে মুক্তিলাভ করবে। এমন এক সুন্দর সুসংবাদ দিয়েছেন আমাদের নবীজি (সা.)। তিনি বলেছেন, ‘যে মুসলমান জুমার দিন কিংবা জুমার রাতে মারা যায়। আল্লাহতায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে নিরাপদ রাখেন। ’- তিরমিজি
হজরত সালমান (রা.) হতে একটি হাদিস বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিনে সুন্দর করে গোসল করবে, অতঃপর তেল ব্যবহার করবে এবং সুগন্ধি নেবে, তার পর মসজিদে গমন করবে, দুই মুসল্লির মাঝে জোর করে জায়গা নেবে না, সে নামাজ আদায় করবে এবং ইমাম যখন খুতবা দেবেন, চুপ করে মনোযোগসহকারে তাঁর খুতবা শুনবে। দুই জুমার মধ্যবর্তী সময়ে তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে। (মুসনাদে আবু দাউদ : ৪৭৯)
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/৪ সেপ্টেম্বর, ২০২০)