পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু: ৩ এসআইয়ের যাবজ্জীবন, ২ সোর্সের ৭ বছর জেল
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পুলিশ হেফাজতে ইশতিয়াক হোসেন জনি নামের এক তরুণকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় পল্লবী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জাহিদুর রহমান জাহিদ, রাশেদুল ইসলাম ও কামরুজ্জামান মিন্টুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং পুলিশের সোর্স রাশেদ ও সুমনকে সাতবছর করে কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। সেইসঙ্গে পুলিশের তিন এসআই’র প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা এবং অনাদায়ে ছয় মাস করে কারাদাণ্ড দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দুই সোর্সের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও তিন মাস করে কারাদণ্ডের আদেশ দেন আদালত। বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই প্রথম পুলিশ হেফাজতে মৃত্যুর মামলায় রায়।
বুধবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন। এর আগে গত ২৪ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায়ের এ তারিখ ঠিক করে দেন বিচারক।
মামলার আসামিদের মধ্যে এসআই জাহিদুর রহমান জাহিদ ও পুলিশের সোর্স সুমন কারাগারে আছেন। একই থানার এসআই রাশেদুল ইসলাম জামিনে থেকে আদালতে হাজিরা দিয়ে যাচ্ছেন। ওই থানার আরেক এসআই কামরুজ্জামান মিন্টু ও পুলিশের সোর্স রাসেল সম্প্রতি জামিন নিয়েছেন। তবে জামিন নেওয়ার পর থেকেই তারা পলাতক রয়েছেন। আদালতে হাজির না হওয়ায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৪ সালের ৭ আগস্ট পুলিশ হেফাজতে নির্যাতন করে জনিকে হত্যার অভিযোগ এনে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে মামলাটি দায়ের করা করেন জনির ভাই ইমতিয়াজ হোসেন রকি। ওইদিন আদালত মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন।
২০১৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি মহানগর হাকিম মারুফ হোসেন বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেন। ২০১৬ সালের ১৭ এপ্রিল এসআই জাহিদসহ পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে এই মামলার বিচার কাজ শুরু করেন আদালত।
এ মামলার বিচার কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে রাষ্ট্রপক্ষে মোট ২৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছেন আদালত। গত ৯ ফেব্রুয়ারি আসামিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে বক্তব্য দেওয়ার পর ১৯ ফেব্রুয়ারি যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু হয়। মাঝখানে করোনাভাইরাসের কারণে মামলাটির কার্যক্রমে কিছুটা শিথিলতা এলেও আগস্টে এসে সে প্রক্রিয়া শেষ হয়। সেই হিসাবে অভিযাগ গঠনের প্রায় সাড়ে চার বছর পর মামলাটির রায় ঘোষণা হলো আজ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৯সেপ্টেম্বর, ২০২০)