দ্বিতীয় দিনেও সর্বোচ্চ দরে ওয়ালটনের শেয়ার
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে লেনদেনের শুরুর দ্বিতীয় দিনও সর্বোচ্চ ৫৬৭ টাকা দরে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন হচ্ছে। আগের দিনের মতোই বৃহস্পতিবার (২৪ সেপ্টেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) কোম্পানিটির শেয়ার ৫০ শতাংশ বেড়েছে। ফলে দ্বিতীয় কার্যদিবসে সকাল ১০টায় লেনদেন শুরুর মাত্র কয়েক মিনিটের মধ্যেই কোম্পানিটির শেয়ার দর বেড়ে সার্কিট ব্রেকারের সবোর্চ্চ সীমা স্পর্শ করেছে।
প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) বিজয়ীরা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করতে চাচ্ছেন না বিধায় বিক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার।
বিএসইসির নিদর্শনা অনুযায়ী, আইপিওর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ার লেনদেনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন ৫০ শতাংশ সার্কিট ব্রেকার আরোপ করা রয়েছে। অর্থাৎ লেনদেনের প্রথম ও দ্বিতীয় দিন ৫০ শতাংশের বেশি শেয়ার দর বাড়তে বা কমতে পারবে না। সে অনুযায়ী ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের শেয়ার দর ৫০ শতাংশ বেড়ে ৫৬৭ টাকা দরে লেনদেন হচ্ছে। আর তৃতীয় দিন কোম্পানির শেয়ারে ১০ শতাংশ বাড়তে বা কমতে পারবে।
ডিএসইর লেনদেন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরুতে প্রথম একজন ক্রেতা ৭৫টি শেয়ার ৫৪০ টাকা দরে কেনার জন্য ক্রয় আদেশ দেয়। প্রথম পাঁচ মিনিটের মধ্যে ক্রেতারা সর্বোচ্চ ৫৬৭ টাকা দরে ওয়ালটন হাই-টেকের শেয়ার ক্রয় করতে চায়। কিন্তু বিপরীত দিকে কোনো বিক্রেতা ছিল না। এদিন কোম্পানির শেয়ার সার্কিট ব্রেকারের সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে হলট্রেড হয়েছে।
জানা গেছে, ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজের আইপিও আবেদন গত ৯ আগস্ট শুরু হয়ে ১৬ আগস্ট শেষ হয়। সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য নির্ধারিত ৩৯ কোটি ৩ লাখ টাকার বিপরীতে ৩৭৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকার আবেদন জমা পড়ে ওয়ালটনের আইপিওতে। যা ৯ দশমিক ৫৯ গুণ বেশি।
ফলে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে লটারির মাধ্যমে গত ৬ সেপ্টেম্বর ওয়ালটনের শেয়ার বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদিকে ২০ সেপ্টেম্বর লটারিতে বরাদ্দপ্রাপ্ত শেয়ার বিনিয়োগকারীদের বিও হিসাবে সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) মাধ্যমে জমা হয়েছে।
গত ২৩ জুন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭২৯তম কমিশন সভায় ওয়ালটনকে আইপিওর মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের অনুমোদন দেয়।
বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। এর মধ্যে যোগ্য বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৬০ কোটি ৯৬ লাখ ৫৭ হাজার ৮০৫ টাকা এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৯ কোটি ৩ লাখ ৪২ হাজার ১৯৫ টাকা সংগ্রহ করেছে। সংগৃহীত টাকা থেকে ৬২ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যবসা সম্প্রসারণ, ৩৩ কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ ও ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা আইপিও পরিচালনা বাবদ ব্যয় করা হবে।
এর আগে গত ২ থেকে ৫ মার্চ পর্যন্ত ওয়ালটনের নিলাম (বিডিং) শেষ হয়। দেশে সর্বপ্রথম ডাচ পদ্ধতিতে বিডিংয়ের মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ারের কাট-অব প্রাইস নির্ধারণ করা হয় ৩১৫ টাকা।
আইন অনুসারে, কাট-অব প্রাইসের চেয়ে ১০ শতাংশ কমে অর্থাৎ ২৮৩ টাকা দরে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে কোম্পানির শেয়ার ইস্যু করার কথা ছিল। তবে করোনা মহামারি, ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের স্বার্থরক্ষা ও দেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়নের কথা বিবেচনা করে কাট-অব প্রাইসের ১০ শতাংশের পরিবর্তে ২০ শতাংশ কমে অর্থাৎ ২৫২ টাকা দরে শেয়ার ইস্যু করেছে ওয়ালটন হাই-টেক কর্তৃপক্ষ। ওয়ালটন হাই-টেকের ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে এএএ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৪সেপ্টেম্বর, ২০২০)