কুমিল্লা প্রতিনিধি, দ্য রিপোর্ট : কুমিল্লা জেলার দাউদকান্দিতে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও তার চাচাতো ভাইয়ের পৈত্রিক বসতভিটার প্রবেশ পথে লোহার গেইট ও বাড়ির চারপাশে দেয়াল নির্মাণ করে বাড়িতে ঢোকার পথ বন্ধ করে দিয়েছে এক প্রতিবেশি।

উপজেলার বারপাড়া ইউনিয়নের বারইকান্দি গ্রামে ১ অক্টোবর এ ঘটনাটি ঘটেছে। রনজিৎ রায় নামে ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের কাছে সাহায্যেরে আবেদন করেও কোনো প্রতিকার পায়নি। 

এর আগেও গত জুন মাসে ওই মুক্তিযোদ্ধার প্রতিবেশি মুজিবুর রহমান ও তার লোকজন বাড়ির প্রবেশ পথ টিন দিয়ে বন্ধ করে দিয়েছিল। পরে স্থানীয় প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের বিষয়টি জানানো হয়। তাদের হস্তক্ষেপে ওইদিন রাতেই বেড়া সরিয়ে নেওয়া হয়।

কিন্তু এবার মজিবুর লোহার গেইট নির্মান করলেও ওই মুক্তিযোদ্ধার সাহায্যে কেউই এগিয়ে আসেনি। এর আগে বাড়ির চারদিকে দেয়াল নির্মান করার সময়ও ওই বীর মুক্তিযোদ্ধা স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসনের কাছে সাহায্যেরে আবেদন করে কোনো প্রতিকার পায়নি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা রনজিৎ রায় জানান, একই গ্রামের অধিবাসী এবং আমার প্রতিবেশী মুজিবুর রহমান ভূইয়া, তার ছোট ভাই মোশারফ হোসেন ভূইয়া গং আমাকে ও আমার স্বজনদের পৈত্রিকা ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে দীর্ঘদিন ধরেই অত্যাচার-নির্যাতন এবং হামলা-মামলা চালিয়ে আসছে। তাদের অত্যাচার ও নির্যাতনের কারণে আমি এখন এলাকা ছেড়ে যাওয়া ছাড়া কোন পথ দেখছি না।

বাড়ির প্রবেশের পথ বন্ধ করে গেইট ও দেয়াল নির্মাণ করা ছাড়াও গত ২৪ জুন আমার উপর হামলা চালায় মুজিবুর ও তার লোকজন। হামলা প্রতিহত না করলে আমার মৃত্যুও ঘটতে পারতো। হামলার একটি ভিডিওচিত্রে দেখা যায়, মুজিবুর ধাতব কোন বস্তু দিয়ে ‘এক্কেরে হাইরা লামু’হুমকি ও অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে আমার মাথায় আঘাতের চেষ্টা করছে।

২৮ জুন, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ তারিখে রাতে আমার উপর হামলার ঘটনায় দাউদকান্দি মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। কিন্তু আজ পর্যন্ত আমার অভিযোগের ভিত্তিতে কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

চক্রান্তের অংশ হিসেবে মুজিবুর ও তার লোকজন গত বছর আমার কাকাতো ভাই নিত্যানন্দ রায়ের পরিবারের সদস্যদের বাড়িতে না থাকার সুযোগে তাদের বসতঘর, আসবাবপত্র, রান্নাঘর, টিউবওয়েল, পায়খানা ও গাছগাছালিসহ বাড়ির সকল স্থাপনা গায়েব করে দেয়। নিত্যানন্দ রায়ের ছোট ছেলে নির্মল রায় এ ঘটনার বিচার চেয়ে দাউদকান্দি মডেল থানায় ২০১৯ সালের ১০ জুলাই একটি মামলা (মামলা নং-১৬) করে। ইতোমধ্যে পুলিশ এ মামলায় চার্জশিট দিয়েছে। তবে নির্মল নারাজি দেওয়ায় বিজ্ঞ আদালত পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। এর আগে নির্মল রায় ২০১৪ সালেও নিজের পরিবার ও স্বজনদের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় একটি সাধারন ডায়েরি করেছিল।

(দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/০২-১০-২০)