তিন আসামি নিয়ে ঘটনাস্থলে পিবিআই, একজনের স্বীকারোক্তি
নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতনের চাঞ্চল্যকর ঘটনায় দুটি মামলার তিন আসামিকে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মাঈন উদ্দিন সাহেদ নামের এক আসামি।
শনিবার সকালে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন নোয়াখালী ইন্সেপেক্টর মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী আসামি বাদল, কালাম ও সাজুকে নিয়ে বেগমগঞ্জের একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বাড়িতে যান। এ সময় পিবিআইয়ের তদন্ত কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তারা ওই বাড়িতে প্রায় ৪৫ মিনিটের মতো অবস্থান করে নির্যাতনের শিকার ওই নারীর বসতঘর ও আশপাশ ঘুরে দেখেন। তবে এসময় তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।
নোয়াখালী জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) গুলজার আহমেদ জুয়েল জানান, শনিবার দুপুরে গৃহবধূ নির্যাতনের ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত মাঈন উদ্দিন সাহেদকে দুই দিনের রিমান্ড শেষে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ২নং আমলি আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের জ্যেষ্ঠ হাকিম এস এম মোসলে উদ্দিন মিজান ১৬৪ ধারায় আসামির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে ষষ্ঠ দিনেও ধর্ষক ও নির্যাতনকারীদের বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে জেলা সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও শিল্পী সমাজ নোয়াখালী, বেগমগঞ্জ উপজেলা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা, কোম্পানীগঞ্জ চরপাবর্তী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সংগঠন।
গত ২ সেপ্টেম্বর রাতে ওই নারীর আগের স্বামী দেখা করতে তার বাবার বাড়ি একলাশপুর ইউনিয়নের জয়কৃষ্ণপুর গ্রামে আসেন। বিষয়টি দেখেন স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী ও দেলোয়ার বাহিনীর প্রধান দেলোয়ার। রাত ১০টার দিকে দেলোয়ার তার লোকজন নিয়ে ওই নারীর ঘরে ঢুকে পরপুরুষের সঙ্গে অনৈতিক কাজ ও তাদের কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মারধর শুরু করেন। এক পর্যায়ে পিটিয়ে নারীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করেন। ৪ অক্টোবর দুপুরে ওই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে দুটি মামলা করেন।
৮ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে গৃহবধূর দায়ের করা নির্যাতন ও পর্নোগ্রাফি মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআইতে হস্তান্তর করা হয়। ঘটনায় এ পর্যন্ত ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যার মধ্যে পাঁচজন স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১০ অক্টোবর, ২০২০)