জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকার ট্রায়াল স্থগিত
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বৈশ্বিক মহামারি কোভিড-১৯ এর ভ্যাকসিন আবিষ্কারের দৌড়ে অনেকটাই এগিয়ে গেছে মার্কিন বহুজাতিক কোম্পানি জনসন অ্যান্ড জনসন। কিন্তু হঠাৎই তাতে ছেদ পড়লো। ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে সংস্থাটি।
এই ভ্যাকসিন নেয়ার পর একজন অংশগ্রহণকারী অসুস্থ হয়ে যাওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জনসন অ্যান্ড জনসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এক বিবৃতিতে বলা হয়, ট্রায়ালে একজন অংশগ্রহণকারী অজানা রোগে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আমরা আমাদের সমস্ত করোনা ভ্যাকসিন প্রার্থীর ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা সাময়িকভাবে স্থগিত করছি।
গত সেপ্টেম্বরে করোনা ভ্যাকসিনের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়াল শুরু করে জনসন অ্যান্ড জনসন। যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিলসহ বিশ্বের ২০০টির বেশি জায়গায় প্রায় ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর ওপর এই ট্রায়াল হওয়ার কথা ছিল।
গত মাসের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে বড় পরিসরে ৬০ হাজার স্বেচ্ছাসেবীর দেহে তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল শুরু করে সংস্থাটি। সে সময় জনসনের পক্ষ থেকে বলা হয় যে, পরীক্ষামূলক প্রয়োগে জনসনের এই ভ্যাকসিন শক্তিশালী রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতে সক্ষম হয়েছে।
ভ্যাকসিনের ট্রায়ালের একটি অন্তবর্তীকালীন ফলাফলও সে সময় প্রকাশ করা হয়। ওই ফলাফল অনুযায়ী, করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিনের প্রথম এবং দ্বিতীয় দুই ধাপেই আশানুরূপ ফলাফল এসেছে। দুটি ধাপেই দেখা গেছে যে, এই ভ্যাকসিন রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করতে কার্যকর। কিন্তু সম্প্রতি এই ভ্যাকসিন গ্রহণ করা এক স্বেচ্ছাসেবী হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় সাময়িক সময়ের জন্য সব ধরনের ট্রায়াল স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জনসন অ্যান্ড জনসন।
শুধু তাই নয়, নতুন স্বেচ্ছাসেবী নিয়োগের জন্য যে অনলাইন রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল তাও বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া স্বেচ্ছাসেবীদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ও পরিসংখ্যান নতুন করে খতিয়ে দেখতে একটি নিরপেক্ষ সংস্থাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
জনসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ওই স্বচ্ছাসেবীর অসুস্থ হওয়ার খবর প্রকাশ হতেই ট্রায়াল প্রক্রিয়া স্থগিত করতে গবেষকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তবে এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।
সংস্থাটি বলছে, ওই স্বেচ্ছাসেবীর পরিচয় সংক্রান্ত গোপনীয়তা বজায় রাখা জরুরি। এছাড়া ওই স্বেচ্ছাসেবীর অসুস্থতা সম্পর্কিত তথ্য যাচাই না করেই কিছু বলা যাচ্ছে না।
গবেষকরা বলছেন, এ ধরনের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কিছু প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে। কারও মধ্যে দুর্বলতা, অসুস্থতা দেখা দিতে পারে। এটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
যুক্তরাষ্ট্রের দুই শতাধিক স্থান ছাড়াও আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, কলম্বিয়া, মেক্সিকো, পেরু এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বিশাল পরিসরে ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাচ্ছিল জনসন অ্যান্ড জনসন।
এর আগে এক স্বেচ্ছাসেবীর দেহে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়ায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল। পরে অবশ্য স্বস্তির খবর দেয় অক্সফোর্ড। পরবর্তী সময়ে আবারো শুরু হয় ট্রায়াল প্রক্রিয়া।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল বিজ্ঞানী এবং ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি অ্যাস্ট্রেজেনেকার যৌথ উদ্যোগে করোনার এই সম্ভাব্য ভ্যাকসিন তৈরি হচ্ছে। যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ বছরের শেষের দিকেই হয়তো অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেবে দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৩ অক্টোবর, ২০২০)