এক মিনিটে করোনা শনাক্তের পদ্ধতি উদ্ভাবন!
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: সিঙ্গাপুরের গবেষকেরা দাবি করেছেন, তারা নিঃশ্বাস পরীক্ষার মাধ্যমে এক মিনিটের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্তের পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন। মঙ্গলবার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর (এনইউএস) এই উদ্ভাবনের ঘোষণা দিয়েছে। সিঙ্গাপুরভিত্তিক সংবাদমাধ্যম চ্যানেল নিউজ এশিয়ার প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, সন্দেহভাজন আক্রান্তের নিঃশ্বাস পরীক্ষার মাধ্যমে এই পদ্ধতিটি সচল জৈব উপাদান (ভোলাটাইল অর্গানিক কম্পাউন্ড- ভিওসি) শনাক্ত করতে সক্ষম। ১৯০ জন রোগীর ওপর চালানো পরীক্ষাটি ৯০ শতাংশ নির্ভুল ফলাফল পাওয়ার কথা জানিয়েছেন গবেষকেরা।
করোনাভাইরাস শনাক্তে বর্তমানে যেসব পরীক্ষা চালু রয়েছে সেগুলোতে লালা বা কফ-এর নমুনা বিশ্লেষণের মাধ্যমে ভাইরাসটির উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়ে থাকে। এসব পরীক্ষায় কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত সময় লেগে যায়। নতুন পদ্ধতিতে দ্রুত ভাইরাসটি শনাক্ত করা সম্ভব হলে এর বিস্তাররোধে ব্যবস্থা নেওয়া আরও সহজ হবে।
সিঙ্গাপুরের গবেষকদের উদ্ভাবিত পদ্ধতিটিতে সন্দেহভাজন আক্রান্ত ব্যক্তিকে প্রথমে হাই প্রেসিশন ব্রেথ স্যামপ্লেরারে সংযুক্ত একটি ডিসপোজেবল মাউথপিসের ভেতর দিয়ে শ্বাস ছাড়তে হবে।এরপর বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে সেই শ্বাস পরীক্ষা করে এতে থাকা ভিওসি বিশ্লেষণ করবে। আর এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে ফলাফল দিয়ে দেবে। সিঙ্গাপুরের বিশ্ববিদ্যালয়টি বলছে, ব্রেথোনিক্স নামের এই প্রযুক্তিটি কোভিড-১৯ শনাক্তের দ্রুত এবং সুবিধাজনক সমাধান দিতে পারবে।
ব্রেথোনিক্স নামের স্টার্ট-আপটির প্রধান নির্বাহী ড. জিয়া ঝুনান প্রক্রিয়াটি বিশ্লেষণ করে বলেন, মানুষের কোষে জৈবরাসায়নিক বিক্রিয়ায় ক্রমাগত তৈরি হতে থাকে বিভিন্ন ধরনের ভিওসি। তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন রোগের কারণে ওই উপাদানগুলোতে নির্দিষ্ট পরিবর্তন ঘটে। আর এতে মানুষের নিঃশ্বাসের নমুনায় শনাক্তযোগ্য পরিবর্তন হয়। সে কারণে ভিওসি পরিমাপ করে কোভিড-১৯ এর মতো রোগ শনাক্ত করা যায়।’
প্রতিষ্ঠানটির প্রধান পরিচালনা কর্মকর্তা ডু ফ্যাং জানান, প্রক্রিয়াটির ডিসপোজেবল মাউথপিসটিতে একমুখী ভালভ এবং লালারস প্রতিহতের ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে নিঃশ্বাসের বাতাস ছাড়া অন্য কোনও কিছু মেশিনে প্রবেশের সুযোগ নেই। তিনি বলেন, সে কারণেই পরীক্ষার সময় এক ব্যবহারকারীর মাধ্যমে অন্যজন আক্রান্ত হওয়ার সুযোগ নেই।
চ্যানেল নিউজ এশিয়া বলছে, নিঃশ্বাস পরীক্ষার মাধ্যমে প্রকৃত সময়েই ফলাফল পাওয়া যাওয়ায় যেসব এলাকায় ব্যাপক পরীক্ষার প্রয়োজন সেসব অঞ্চলের জন্য এটি চমৎকার সমাধান হয়ে উঠতে পারে। ড. জিয়া ঝুনান বলেন, আমাদের নিঃশ্বাস পরীক্ষা পরিচালনা সহজ আর এর জন্য বিশেষায়িত প্রশিক্ষিত কর্মী কিংবা ল্যাবরেটরি প্রক্রিয়ারও দরকার পড়বে না।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২২ অক্টোবর, ২০২০)