নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হয়ে যা বললেন সাকিব
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: মানুষ মাত্রই ভুল করে থাকেন। আমি একজন মানুষ তাই আমার ভুল হওয়াটাও স্বাভাবিক। তবে আমার মত ভুল যেন আর কেউ না করেন বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান।
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কের কুইন্স প্যালেস মিলনায়তনে এক সুধী সমাবেশে প্রবাসী বাংলাদেশিদের নানা প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন আগামী ৪ নভেম্বর দেশে ফিরছেন তিনি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সঙ্গে তার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে। নিয়মতান্ত্রিক উপায়েই দ্রুত ক্রিকেটে ফিরবেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বলেন, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপসহ সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশ বিশ্ব ক্রিকেটে ভালো করবে বলেই তার বিশ্বাস।
আইসিসির দুর্নীতি বিরোধী আইন লঙ্ঘনের দায়ে সাকিবকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল আইসিসি। তবে ভুল স্বীকার করায় এক বছর স্থগিত নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ফলে বাংলাদেশ সময় আজ বৃহস্পতিবার মাঠে ফিরতে পারবেন তিনি। সাকিবের নিষেধাজ্ঞার এই ঘটনা বাংলাদেশের ক্রিকেট তো বটেই, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই বড় একটা ধাক্কা হয়ে এসেছিল গত বছরের ২৯ অক্টোবর।
এক বছর পর ফিরছেন, কেমন লাগছে? হেসে সংক্ষেপে তিনি উত্তর দেন, ‘ভালো লাগছে। দোয়া করবেন, যেনো দেশের জন্যে ভালো খেলতে পারি। চেষ্টা সবসময়ই থাকবে।’
সাকিব ফিরবে বীরের বেশে। কিন্তু গত একটি বছর যে কারণে জীবন থেকে চলে গেল, সেটা নিয়ে কি সাকিবের কোনো আফসোস আছে? এমন প্রশ্নের জবাবে সাকিব বলেন, ‘আমার মতো ভুল যেনো কেউ না করে।’
২০১৯ সালের ২৮ অক্টোবর দিবাগত রাতে হঠাৎ গুঞ্জন ওঠে, নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছেন সাকিব আল হাসান। বিসিবিতে ভিড় জমান গণমাধ্যমকর্মীরা। দীর্ঘ অপেক্ষার পর সন্ধ্যা নামতেই গুঞ্জনটা নির্মম এক সত্য হয়ে আসে। জুয়াড়ির প্রস্তাব গোপন করায় আইসিসির অ্যান্টিকরাপশন (এসিইউ বা আকসু) কোডের ২.৪.৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিনটি অভিযোগ এনে সাকিবকে সব ধরনের ক্রিকেট থেকে দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। তবে ভুল স্বীকার করায় এক বছরের শাস্তি কমানো হয়।
গত এক বছরে সাকিব বাংলাদেশের হয়ে বেশ কিছু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মিস করেছেন, তবুও নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতে পারেন। কেননা করোনাভাইরাসের প্রকোপে বাংলাদেশ দলের অনেকগুলো আন্তর্জাতিক সিরিজ স্থগিত হয়েছে। গত অক্টোবরে আইসিসির দেওয়া নিষেধাজ্ঞার পর সাকিবকে ছাড়া মাত্র তিনটি সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ দল।
২০১৯ সালের নভেম্বরে ভারতের বিপক্ষে টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ, ২০২০ সালের জানুয়ারিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে সিরিজ ও চলতি বছরে মার্চে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে পারেননি সাকিব। সব মিলিয়ে বাংলাদেশ তাকে পায়নি চার টেস্ট, তিন ওয়ানডে ও সাতটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে।
নিষেধাজ্ঞায় থাকাকালিন বেশিরভাগ সময় যুক্তরাষ্ট্রেই কাটিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার। বাংলাদেশে করোনার প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার সময়টাতে অবশ্য দেশেই ছিলেন, লকডাউনের আশঙ্কা দেখে দিলে দ্রুত চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। যেখানে আগে থেকেই তাদের একমাত্র কন্যাকে নিয়ে ছিলেন স্ত্রী উম্মে আল হাসান শিশির। ওখানেই জন্ম নেয় তাদের দ্বিতীয় কন্যা।
তবে সাকিব গত প্রায় এক বছর যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিন অঙ্গরাজ্যে স্ত্রী-সন্তানের সাথে সময় কাটিয়েছেন। সম্প্রতি দ্বিতীয় কন্যা সন্তানের বাবা হয়েছেন তিনি।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৯ অক্টোবর, ২০২০)