নতুন আলু ১৫০ টাকা কেজি!
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: এমনিতেই আলুর যে চড়া দাম যাচ্ছে তার ওপর বাজারে নতুন আলু উঠলেও আপাতত দাম কমার কোনো সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। বরং তিনগুণ বেশি দামে কেজিতে ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে নতুন আলু। শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীর শান্তিনগর কাঁচাবাজার, শাহজাহানপুর, মালিবাগ, মগবাজার, রামপুরা কাঁচাবাচারসহ অধিকাংশ খুচরা বাজারে পুরাতন আলুর পাশাপাশি বিক্রেতাদের দোকানে নতুন আলু দেখা যায়।
দাম বেশি হওয়ায় অল্প করে নতুন আলু রাখছেন সবজি বিক্রেতারা। দামের কারণে কোনো কোনো ক্রেতা এক বা আধা কেজি পরিমাণ করে নতুন আলু নিচ্ছেন।
মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা মো. আনোয়ার বলেন, পুরাতন আলু ৪৫ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এটাই মূলত ক্রেতারা নিচ্ছেন। একদিন আগে তিনি দোকানে ১০ কেজি নতুন আলু তুলেছেন, এর মধ্যে অর্ধেক বিক্রি হয়েছে।
তিনি বলেন, নতুন আলু ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে। অল্প পরিমাণ আসছে, তার পরও ঢাকার বাজারগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে। নতুন আলু উঠলেও পুরাতন আলুর দামে কোনো প্রভাব পড়েনি, পড়বেও না। কারণ আমাদের দেশে এখন আলু চাষের কেবল সময় হয়েছে। এই আলু উঠলে তখন দাম কমতে থাকবে।
মগবাজার এলাকার বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন বলেন, দেখলাম বাজারে নতুন আলু উঠেছে, কিন্তু দাম কমার লক্ষণ দেখছি না। আগের সেই আলু ৪৫ টাকার কমে কোথাও বিক্রি হচ্ছে না। বাধ্য হয়ে এই দামে কিনেছি।
এদিকে, আলুর চড়া দামের মধ্যে বেগুন, করলা, টমেটো, শিমসহ আরো কিছু সবজির কেজি ১০০ টাকা বা তারও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর কাঁচাবাজারগুলোতে বেগুনের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৪০ টাকা, করলা ৮০ থেকে ১০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ৮০ টাকা, গাজর ৮০ টাকা, কচুরমুখি, পটল, শসা, জিঙ্গা ৬০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। তবে পেপে ৫০ টাকা, প্রতিহালি কাঁচাকলা ৪০ টাকা, ছোট আকারের প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, আকারভেদে লাউ ৬০ থেকে ৭০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, গত কয়েক মাস ধরে বাজারে কাঁচামরিচের ঝাল যেন কমছেই না। কেজি ২০০ থেকে ২৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ।
শান্তিনগরের সবজি বিক্রেতা মো. বাদল মিয়া বলেন, গত কয়েক মাস ধরেই সবজির দাম চড়া। কখনো কখনো কোনো কোনো সবজিতে পাঁচ-সাত টাকা বাড়ে কমে। একবার কমলে দুদিন পর আবার বাড়ে। গত সপ্তাহে তুলনায় গাজর ও শসার দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। আবার বরবটি, বেগুন একটু বেড়েছে।
এদিকে, হাওরের মাছ ধরার মৌসুমে রাজধানীর বাজারগুলোতে দেশি মাছে ভরপুর। এর পাশাপাশি চাষের মাছও বিক্রি হচ্ছে। তবে মাছের দাম কম নয় বলে জানিয়েছেন ক্রেতা-বিক্রেতারা।
বাজারে দুই ধরনের টেংরা মাছই ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। বেলে মাছ ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। শিং সাড়ে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, তারা বাইম, আইড় মাছ ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, সাধারণ বাইম ৫০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। নদীর পাবদা, রিটা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, চিংড়ি মাছ ৮০০ থেকে হাজার টাকা, শোল, গজার, মাগুর সাড়ে ৫০০ থেকে সাড়ে ৭০০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
মাছ ব্যবসায়ীরা জানান, হাওর ও নদীতে মাছ ধরা পড়ছে। কিন্তু দাম তেমন কমছে না। এর কারণ হিসেবে তারা বলেন, ইলিশ মাছ ধরা বাধা-নিষেধের কারণে বাজারে দেশি মাছ ভরপুর থাকলেও দাম কমেনি।
ডিমের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও ব্রয়লার মুরগি দাম কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। ফার্মের ডিমের ডজন ১১৫ টাকা, আর হালি ৪০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ব্রয়লার মুরগির কেজি ১২০ টাকা, কক মোরগ ২২০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২১০ থেকে ২২০ টাকা, দেশি মুরগি কেজি ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা বাজারের মুরগি ব্যবসায়ী আব্দুল আলীম বলেন, কদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগি কেজিতে ১০ টাকা কমেছে। তবে অন্যান্য মুরগি আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/৩০ অক্টোবর, ২০২০)