ফিটনেসে চমকে দিলেন এনামুল, আশরাফুল, নাফীসরা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: করোনায় বন্ধ ছিল ক্রিকেট। ক্রিকেটাররা ছিলেন গৃহবন্দী। ব্যাট-বল নিয়ে সবুজ ঘাস ও ২২ গজে নামার সুযোগ না হলেও অলস সময় কাটাননি রাজ্জাক, আশরাফুল, এনামুল, নাফীসরা। চার দেয়ালে ফিটনেস ট্রেনিং করে প্রতিনিয়ত নিজেদের ফিট রেখেছেন তারা। অতীতের থেকে তারা এখন অনেক ফিটনেস সতেচন, তা বোঝা গেল সোমবার ফিটনেস টেস্টের প্রথম দিনে।
করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল ঘরোয়া ক্রিকেট। বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ দিয়ে আবার মাঠে ফিরছে ক্রিকেট। ঘরোয়া ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় থাকা ৭৩ ক্রিকেটার সোমবার বিপ টেস্ট দিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞা শেষে ক্রিকেটে ফেরার অপেক্ষায় থাকা সাকিবেরও আজ বিপ টেস্ট দেওয়ার কথা ছিল। মিরপুরে এলেও তিনি বিপ টেস্ট দেননি। অনুপস্থিতের তালিকায় রয়েছেন অলক কাপালিও।
স্কোরের ন্যূনতম মানদণ্ড বেঁধে দেওয়া হয়েছে এবার ১১। ৭৩ ক্রিকেটারের মধ্যে ছিলেন আব্দুর রাজ্জাক, মোহাম্মদ আশরাফুল, শাহরিয়ার নাফীস ও এনামুল হক জুনিয়ররা। মোহাম্মদ আশরাফুল ১১.৪, শাহরিয়ার নাফিস ১১.১ স্কোর গড়েছেন। এনামুল হক জুনিয়রের স্কোর রীতিমত বিষ্ময় জাগানিয়া, ১২.২। রাজ্জাকের স্কোর ১১ পেরিয়েছে।
৭৩ ক্রিকেটারের মধ্যে ১১ বেঞ্চ মার্ক তুলতে ব্যর্থ হয়েছেন ৮ জন। সেই তালিকায় আছেন সোহাগ গাজী (৯.৪), অভিষেক মিত্র (১০.৬), ইরফান হোসেন (১০.১০), শুভাশিস রায় (৯.৮) ।
ফিটনেস নিয়ে ক্রিকেটাদের ভাবনার পরিবর্তনের কথা শোনালেন নাফীস, ‘প্লেয়াররা ফিটেনেসের ব্যাপারে সচেতন। যখন তারা বাসায় থাকে, তত বেশি কাজ করে। আশাব্যঞ্জক ব্যাপার হলো, আমি সেকেন্ড রাউন্ডে ছিলাম, ফার্স্ট রাউন্ডে ৭ জন ছিল, পরের রাউন্ডে ৭ জন। ১৮ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন ১১তে পৌঁছাতে পারেনি। আর সবাই ১১ সহজেই পেয়েছে। এটা দিয়ে একটা বিষয় প্রমাণিত যে বাংলাদেশের যারা জাতীয় দলের বাইরে আছেন, ঘরোয়া ক্রিকেট খেলছেন, তারা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সচেতন- ফিটনেস নিয়ে, স্কিল নিয়ে।’
নিজের ফিটনেস নিয়ে এনামুল হক জুনিয়র বলেন, ‘গত ৭ মাসে বাংলাদেশের ক্রিকেটে একটি সুন্দর পরিবর্তন যদি এসে থাকে, আমি বলবো ফিটনেস নিয়ে এসেছে। লকডাউনে আমাদের ক্রিকেটাররা প্রথম থেকেই নিজেদের সাধ্যমতো যে পরিশ্রম করেছে, সেটির প্রতিফলন এখানে পড়ছে। আগে যারা ৯ বা ১০ স্কোর করতো, এবার প্রায় সবাই বিসিবির দেওয়া মানদণ্ডে পাশ করেছে।’
আশরাফুলের কণ্ঠেও একই সুর, ‘ফিটনেস টেস্টে ১১.৪ হয়েছে। আরেকটু ভালো হলে ভালো হতো। শেষ তিন চারদিন ঠাণ্ডার কারণে যেটা আশা করেছিলাম সেটা দিতে পারিনি। তারপরও খুশি। আমি খুবই আত্মবিশ্বাসী। আমি আসলে নতুন করে শুরু করতে চাই। অনূর্ধ্ব-২৩ ছেলেদের সঙ্গে যে ফিটনেস লেভেল লাগবে, আমি সেটা করছি।’
জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের পাশাপাশি বিসিবির পুলের ক্রিকেটারদের ফিটনেস ঠিক রাখার জন্য ছক তৈরি করে দিয়েছিলেন বিসিবিরে ট্রেনার নিক লি। ফিটনেসে ক্রিকেটাররা ভালো অবস্থানে রয়েছে বলে মনে করছেন নিক লি। সোমবার তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমি যা দেখেছি, বেশিরভাগ খেলোয়াড়ই ভালো করেছেন। অল্প কয়েকজন সমস্যায় পড়েছে। আমার মনে হয় যে ফলগুলো এসেছে তাতে নির্বাচকরা খুশি হবেন। আমার যেটি ভালো লেগেছে সেটি হলো, করোনাভাইরাসের কারণে তারা ক্রিকেট খেলতে না পারলেও এটি ক্রিকেটারদের আরও ফিট হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আপনি যদি বেশিরভাগ খেলোয়াড়কে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে তারা বলবে তারা আগের চেয়ে এখন বেশি ফিট। কারণ এই সময়ের মধ্যে তারা ক্রিকেট খেলতে পারেনি এবং ফিটনেসের দিকে মনোযোগ দিতে পেরেছিল।’
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১০নভেম্বর, ২০২০)