করোনাকালে ফেরত পৌনে তিন লাখ প্রবাসী
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাস মহামারির প্রভাবে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের ফলে বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশি কর্মীদের দেশে ফেরার রথ যেন থামছেই না। প্রতিদিনই চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরছেন অসংখ্য প্রবাসী।
প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত এপ্রিল থেকে ১১ নভেম্বর পর্যন্ত ২৯টি দেশ থেকে দুই লাখ ৭২ হাজার ১৮৫ জন বাংলাদেশি কর্মী দেশে ফেরত এসেছেন। তাদের মধ্যে দুই লাখ ৪১ হাজার ১৫২ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৩৩ জন নারী কর্মী।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনার শুরুর দিকে দেশে ফেরত আসা কর্মীদের তথ্য নেয়া হয়নি। তাদের সংখ্যা ধরলে ফেরত আসা কর্মীদের সংখ্যা তিন লাখের বেশি হবে।
গত সাত মাসে সবচেয়ে বেশি কর্মী ফিরেছেন সৌদি আরব থেকে। সেখানে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাস এবং অনেকে কাজ হারিয়ে দেশে এসেছেন। ফিরে আসা ৭৯ হাজার ৯২২ জন কর্মীর মধ্যে নারী ১৩ হাজার ২৭০ জন।
সৌদি আরবের পর সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি শ্রমিক ফেরত পাঠায় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটি থেকে কাজ হারিয়ে ফিরে আসা ৭১ হাজার ৯০৩ জন কর্মীর মধ্যে ছয় হাজার ২২৪ জন নারী শ্রমিক।
কাজ না থাকায় কাতার থেকে ২৫ হাজার ৭০৪ জন শ্রমিককে দেশে ফেরত আসতে হয়। এদের মধ্যে পুরুষ ২৩ হাজার ২২৬ জন এবং নারী দুই হাজার ৪৭৯ জন।
আরব উপদ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব কোণায় অবস্থিত রাষ্ট্র ওমান থেকে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৬ হাজার ৯৫ জনকে। তাদের মধ্যে নারী দুই হাজার ১৪৭ জন।
মালদ্বীপে কর্মহীন হয়ে পড়েন বিদেশি কর্মীদের অনেকেই। সেখান থেকে ১২ হাজার ৬৮৯ জন বাংলাদেশি কর্মীকে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে পুরুষ ১৩ হাজার ২৪৪ জন এবং নারী ১৪৪ জন।
অন্যদিকে কুয়েত থেকে ২৯৭ জন নারী শ্রমিকসহ ফিরে এসেছেন ১১ হাজার ৯৫২ জন।
ইরাক থেকে ফেরত আসা নয় হাজার ৭৮৯ জনের মধ্যে ৬০ জন নারী।
কাজ না থাকায় মালয়েশিয়া থেকে ফিরতে হয়েছে ১২ হাজার ৩৬৮ জন শ্রমিককে। যাদের মধ্যে পুরুষ ১১ হাজার ৮৬৯ জন এবং নারী ৪৯৯ জন।
তুরস্ক থেকে ৭১৩ জন নারী কর্মীসহ ফিরে এসেছেন ১০ হাজার ৪৫৩ জন। লেবানন থেকে সাত হাজার ১৬৯ জন, নারী দুই হাজার ৪৫৩ জন।
কাজের চুক্তি শেষ হওয়ার পর মেয়াদ না বাড়িয়ে সিঙ্গাপুর থেকে ফেরত পাঠানো হয়েছে পাঁচ হাজার ৩১১ জনকে। যাদের মধ্যে পাঁচ হাজার ২৪৫ পুরুষ এবং ৬৬ জন নারী শ্রমিক।
চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ায় জর্ডান থেকে ফিরেছেন দুই হাজার ২০৪ জন। যাদের মধ্যে পুরুষ ৪০৮ জন এবং নারী ১৭ হাজার ৯৬ জন।
বাহরাইন থেকে দেশে ফিরেছেন দুই হাজার ২৩ জন। এসব শ্রমিক দেশটি থেকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করে আউটপাশ নিয়ে দেশে আসেন।
কাজের মেয়াদ শেষ হওয়ায় শ্রীলঙ্কা থেকে ৫৫৪ জন, মরিশাস থেকে ৪৫২ জন, লিবিয়া থেকে ৪৫৫ জন এবং ভিয়েতনাম থেকে ১২১ জন ফেরত এসেছে।
কাজ না থাকায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ২২০ জন, কম্বোডিয়া থেকে ১০৬ জন, থাইল্যান্ড থেকে ৮৯ জন, দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ৭১ জন এবং মিয়ানমার থেকে ৩৯ জন দেশে ফিরে আসেন।
রাশিয়া থেকে ফিরেছেন ১০০ জন, নেপাল থেকে ৫৫ জন, যুক্তরাজ্য থেকে ফিরেছেন ১৩৪ জন, হংকং থেকে ১৬ জন।
বাংলাদেশি শ্রমিকদের দেশে ফেরত আসাদের মধ্যে গত ৬ জুলাই ইতালি থেকে করোনা সন্দেহে দেশে ফেরত পাঠানো ১৫১ জনও তালিকায় রয়েছে।
এছাড়া আইএম জাপান চুক্তির মাধ্যমে তিন বছরের মেয়াদ শেষে জাপান থেকে ছুটিতে দেশে এসেছেন আটজন কর্মী। এবং অন্যান্য দেশ থেকে ফেরত এসেছে ১২৮ জন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৫নভেম্বর, ২০২০)