দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: নিষেধাজ্ঞা শেষে নতুন বিতর্কে সাকিব আল হাসান। সম্প্রতি কলকাতায় কালীপূজার অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন তিনি। অনেকেই বলছেন, সাকিব সেখানে পূজার উদ্বোধন করতে গিয়েছিলেন। মিডিয়াতেও এমন খবর প্রকাশ হয়েছে। তবে, সোমবার ইউটিউবে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে সাকিব জানালেন, তিনি পূজার উদ্বোধন করেননি। তিনি সেখানে যাওয়ার আগেই পূজার উদ্বোধন করা হয়। তবে, তিনি যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকেন তার জন্য তিনি ক্ষমাপ্রার্থী।

ইউটিউবে সাকিব আল হাসানের বক্তব্যের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো:

‘আসসালামু আলাইকুম। আশা করি সবাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেন। দুটি বিষয় পরিষ্কার করার জন্য এই ভিডিওটি করা। প্রথমটি ফোন ভাঙা নিয়ে। আমি কখনোই বুঝতে পারি না যে, অন্য একজনের ফোন ভাঙলে আমার কী উপকার হবে বা আমি কী বেনিফিট পাব। আপনারা হয়তো এটার ভালো উত্তর দিতে পারবেন। যার ফোন ভাঙা নিয়ে কথা হচ্ছে আমি কখনোই তার ফোনটি ইচ্ছা করে ভাঙিনি। যেহেতু করোনাকালীন সময়, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার চেষ্টা করছিলাম। যেহেতু ওখানে অনেক ভিড় ছিল, সবাই চেষ্টাও করছি ছবি তুলতে, আমিও চেষ্টা করছিলাম কীভাবে তাদের কাছে না গিয়ে আমি আমার ইমিগ্রেশনের কাজগুলো সম্পন্ন করতে পারি।

স্বাভাবিকভাবে একজন উৎসুক ব্যক্তি আমার শরীরের উপর দিয়ে এসে ছবিটি তুলতে যায়। আমি তাকে সরিয়ে দিতে গেলে তার হাতের সাথে আমার হাতটি লাগে এবং তার ফোনটি পড়ে যায়, পরে হয়তো ভেঙেও গিয়েছে। তার ফোন ভাঙার জন্য আমি আন্তরিকভাবে দুঃখিত। কিন্তু আমার মনে হয়, তারও সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ ছিল। বিশেষ করে করোনার সময় সবারই সাবধানতা অবলম্বন করা উচিৎ।

দ্বিতীয় যে ঘটনাটি, অবশ্যই খুবই সেনসিটিভ। আমি প্রথমেই বলতে চাই যে, আমি নিজেকে একজন গর্বিত মুসলমান হিসেবে মনে করি এবং আমি সেটাই চেষ্টা করি পালন করার। ভুল ত্রুটি হবেই। ভুল ত্রুটি নিয়েই আমরা জীবনে চলাচল করি। আমার কোনো ভুল হয়ে থাকলে অবশ্যই আমি আপনাদের কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করছি। আপনাদের মনে কষ্ট দিয়ে থাকলে সেজন্যও আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি।

এখন আসি আসলে পূজার বিষয় নিয়ে। সব মিডিয়াতে নিউজ এসেছে যে, আমি ওখানে পূজা উদ্বোধন করতে গিয়েছি। যেটা আমি আসলে কখনো যায়ওনি কিংবা করিওনি। এটির প্রমাণ আপনারা অবশ্যই পাবেন। অনেক সাংবাদিক ভাইবোনেরাই ওখানে ছিলেন। আপনারা যদি ইনভাইটেশন কার্ডটা দেখেন তাহলে দেখবেন কে আসলে ওটার উদ্বোধন করেছে। সেটি উদ্বোধন হয়েছে আমি যাবার আগেই। যে জায়গাতে প্রোগ্রামটি হয়েছে সেটি অবশ্যই পূজা মণ্ডপ ছিল না। পাশে আরেকটি স্টেজ ছিল সেখানেই করা হয়েছিল। প্রায় ৪০-৪৫ মিনিটব্যাপী সে অনুষ্ঠানে আমি ছিলাম। এখানে কোনো ধর্ম, বর্ণ কোনো কিছু নিয়ে কোনো কথা হয়নি।

অনুষ্ঠান শেষে যখন আমাকে গাড়িতে উঠতে হবে, ওখানে অন্যসব পথ বন্ধ ছিল, পূজা মণ্ডপের সামনে দিয়েই যাওয়ার পথ ছিল। সেখান দিয়েই আমি গিয়েছি। যাওয়ার সময় পরেশ দা, যিনি আমাকে ইনভাইট করেছিলেন, তার অনুরোধে আমি প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করি। যেহেতু কলকাতায় আমি অনেক দিন খেলেছি, কলকাতার মানুষ আমাকে পছন্দ করে, ওখানকার সাংবাদিকরা অনেক উৎসুকও ছিল। সবার অনুরোধে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের সময় একটি ছবি তোলা হয়।

দুই মিনিটের যে সময়টা আমি পূজা মণ্ডপে ছিলাম সেটা নিয়ে সবাই বলেছে। তারা ধারণা করছে যে, আমি পূজার উদ্বোধন করেছি। যেটি আমি কখনোই করিনি এবং সচেতন মুসলমান হিসেবে সেটি আমি করব না। তারপরও হয়তো ওখানে যাওয়াটাই আমার ঠিক হয়নি। সেটি যদি আপনারা মনে করে থাকেন অবশ্যই আমি এর জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখিত, ক্ষমাপ্রার্থী। ভবিষ্যতে যেন এমনটি আর না ঘটে সেজন্য আমি চেষ্টা করব।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৭নভেম্বর, ২০২০)