নবজাতক সোহানাকে হত্যা করে তার মা : এসপি
বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ঘুমন্ত মা ও বাবার মাঝ থেকে তুলে নিয়ে ১৭ দিন বয়সী শিশু সোহানাকে হত্যার জট খুলেছে। মা শান্তা আক্তার পিংকি হত্যার বর্ণনা দিয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) পঙ্কজ চন্দ্র রায় জানান, মা পিংকি নবজাতক সোহানাকে হত্যা করেছেন বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন।
শনিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে বাগেরহাটের পুলিশ সুপার পঙ্কজ চন্দ্র রায় বলেন, শিশুর বাবা সুজন খান ও মা পিংকিকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এক পর্যায়ে পিংকি নিজের সন্তানকে হত্যা করার কথা স্বীকার করেন এবং পুলিশের কাছে হত্যার বর্ণনা দেন। পরে শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে বাগেরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. খোকন হোসেনের কাছে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন পিংকি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মোরেলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ঠাকুর দাস বলেন, পিংকি ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার বনগঞ্জ গ্রামের মো. ইউনুছ শেখের মেয়ে। ২০১৯ সালে পিংকির সঙ্গে মোরেলগঞ্জ উপজেলার গাবতলা গ্রামের সুজন খানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে তাদের বিয়ে হয়। সুজন ও পিংকির দুইজনেরই এটা দ্বিতীয় বিয়ে। তবে পিংকি পূর্বের বিয়ে ও সন্তানের কথা গোপন রাখেন।
পুলিশ পরিদর্শক ঠাকুর দাস বলেন, সুজনের আগের স্ত্রী ও পিংকির আগের স্বামীসহ বিভিন্ন পারিবারিক ঝামেলার জন্য পিংকি তার সন্তানকে হত্যা করতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, পিংকি জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছেন, তিনি রাতে ঘুমানোর পরে তার শরীরে জ্বালা শুরু হয়। নিজের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে বের হয়ে বাড়ির সামনের খাল, বাগান ও পুকুরের পাড়ে দৌঁড়াদৌঁড়ি করেন। এক পর্যায়ে ঘরের সামনের পুকুরের ঘাটে সন্তানকে ফেলে দিয়ে ঘরে গিয়ে শুয়ে পড়েন। রাত দেড়টার দিকে ঘুম ভেঙে সন্তানের জন্য কান্নাকাটি শুরু করেন।
সুজনের বোন রোজিনা বেগম বলেন, ‘পিংকি আমাদের বাড়িতে আসার পর বেশ কয়েক বার অস্বাভাবিক আচরণ করে বেহুশ হয়ে পড়েন। আমরা তাকে স্থানীয় ওঝা-কবিরাজও দেখিয়েছি।’
১৫ নভেম্বর রাতে গাবতলা গ্রামে বাবা সুজন খান ও মা শান্তা আক্তার পিংকির মাঝখানে ঘুমিয়ে ছিল সোহানা। মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে তারা দেখেন শিশুটি হারিয়ে গেছে। ১৮ নভেম্বর ভোরে পুকুর থেকে শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৮নভেম্বর, ২০২০)