হেফাজতের মদদে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর: ছাত্রলীগ
ঢাবি প্রতিনিধি: হেফাজতে ইসলামের প্রত্যক্ষ মদদে কুষ্টিয়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ভাঙা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়। ভাস্কর্য ভাঙচুরের পেছনে হেফাজতকেই ‘প্রত্যক্ষ মদতদাতা’ উল্লেখ করে কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই সংগঠনটি স্বাধীনতাবিরোধি জামায়াতে ইসলামকে ‘হেফাজত’ করছে বলেও অভিযোগ এই ছাত্রনেতার।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে রবিবার দুপুরে এক বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান জয়। গত শুক্রবার রাতের আঁধারে কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার প্রতিবাদে এই সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রলীগ।
হেফাজতে ইসলামকে জঙ্গিবাদের উস্কানিদাতা হিসেবে উল্লেখ করে সমাবেশে জয় বলেন, ‘আপনারা হেফাজতে ইসলাম, কিন্তু আপনারা কাদের হেফাজত করছেন? আপনারা আসলে জামায়াতে ইসলামির হেফাজত করছেন। আপনাদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা ছিল। কিন্তু শ্রদ্ধার সে জায়গায়টিতে আপনারা আঘাত হেনেছেন। আপনারা বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার জন্য প্রত্যক্ষ মদদ দিয়েছেন।’
বক্তব্যে হেফাজতের গতিবিধির উপর লক্ষ্যে রাখার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর প্রতি অনুরোধ রেখে ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, ‘ভাস্কর্য ভাঙার ঘটনায় জড়িতরা পাকিস্তানি প্রেতাত্মা। আমাদের নেতাকর্মীদের বলতে চাই, বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য অবমাননাকারীদের যেখানে পাবেন, সেখানেই গণধোলাই দিয়ে হাত-পা ভেঙে দিয়ে পুলিশের হাতে তুলে দেবেন।’
কুষ্টিয়ায় বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে আটকের কথা জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। রবিবার মন্ত্রণালয়ে নিজ দপ্তরে এ তথ্য নিশ্চিত করে মন্ত্রী বলেছেন, কুষ্টিয়ার ঘটনায় ইতোমধ্যে চারজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের দুজন জড়িত ছিল আর তাদের কথা মতো আরও দুজনকে আটক করা হয়।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আমাদের এ লড়াই কাঠমোল্লাদের বিরুদ্ধে। কিন্তু মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থীকে কাঠমোল্লা বলার সুযোগ নেই। মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের বন্ধু। তারা আমাদের সতীর্থ। আমাদের পাশেই ঢাকা আলিয়া মাদরাসা অবস্থিত। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন পর্যন্ত সকল মিছিলে তাদের মিছিল আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মিছিল এক হয়ে গিয়েছিলো।’
মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক ‘বাধ্যতামূলক শ্রমিকে’ পরিণত করা হয়েছে উল্লেখ করে সাদ্দাম বলেন, ‘আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, মাদ্রাসায় দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অসহায়ত্বকে পুঁজি করে এই কাঠমোল্লারা রাজনীতি করার চেষ্টা করছে।’
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যান্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সন্জিত চন্দ্র দাশ, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান, সাধারণ সম্পাদক জুবায়ের আহমেদ, মহানগর উত্তরের সভাপতি ইব্রাহিম হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান হৃদয় বক্তব্য রাখেন। এসময় সংগঠনটির কেন্দ্রীয় পর্যায়ের নেতাকর্মীরাসহ বিভিন্ন ইউনিটের অন্তত কয়েকশ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ডিসেম্বর, ২০২০)