দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ম্যাচজুড়ে বেশ ভালোই খেললেন লিওনেল মেসি। সুযোগ পেলেন, সুযোগ তৈরি করলেন; কিন্তু কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় বল পাঠাতে পারলেন না। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর পায়ে অতটা বল দেখা গেল না, তবে দুটি সফল পেনাল্টিতে মূল কাজটা সেরে ফেললেন তিনি। তাতে তৈরি হয়ে গেল ম্যাচের ব্যবধানও। বার্সেলোনাকে তাদেরই মাঠে ৩-০ গোলে উড়িয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হলো জুভেন্টাস।

ম্যাচে প্রথম সুযোগটি জুভেন্টাস পেয়েছিল ৯ম মিনিটে। তবে বাম দিক থেকে সতীর্থের বাড়ানো বল ডি-বক্সে পেয়ে তুলনামূলক ভালো পজিশনে থাকা হুয়ান কুয়াদরাদোকে পাস না দিয়ে গোলরক্ষক বরাবর শট নেন রোনালদো। ৪ মিনিট পর তার সফল স্পট কিকেই এগিয়ে যায় সফরকারীরা।

বাম দিক দিয়ে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া রোনালদোকে ফাউল করে বসেন চোট কাটিয়ে ১ মাস পর সম্প্রতি ফেরা ডিফেন্ডার রোনালদো আরাহো। পেনাল্টির বাঁশি বাজাতে দ্বিতীয়বার ভাবতে হয়নি রেফারিকে। গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে বরাবর শটে বল কাঙ্ক্ষিত ঠিকানায় পাঠান পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড।

আসরে টানা তিন ম্যাচে গোল পেলেন রোনালদো। ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতায় বার্সেলোনার বিপক্ষে এ প্রথম জালের দেখা পেলেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ও রিয়াল মাদ্রিদের সাবেক ফুটবলার।

২০তম মিনিটে দারুণ নৈপুণ্যে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ম্যাককেনি। ডান দিক থেকে কুয়াদরাদোর ক্রস ৬ গজ বক্সের বাইরে পেয়ে শরীর পুরো শূন্যে ভাসিয়ে ডান পায়ের ভলিতে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন যুক্তরাষ্ট্রের এই মিডফিল্ডার।

২ মিনিট পর ব্যবধান কমার সম্ভাবনা জেগেছিল। তবে মেসির দূরপাল্লার নিচু শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান ৪২ বছর বয়সী গোলরক্ষক বুফ্ফন। প্রথমার্ধের শেষ ৫ মিনিটে বেশ চাপ বাড়ায় বার্সেলোনা। মেসির সামনে আবারও সুযোগ এসেছিল, কিন্তু এবার গোলরক্ষক সোজাসুজি শট নেন তিনি।

দ্বিতীয়ার্ধের সপ্তম মিনিটে রোনালদোর দ্বিতীয় গোলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায় জুভেন্টাস। বার্সেলোনার ডি-বক্সে ডিফেন্ডার ক্লেমোঁ লংলের হাতে বল লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজার রেফারি। এবার জোরালো কোনাকুনি শটে গোলটি করেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড গোলদাতা। প্রতিযোগিতায় তার মোট ১৩৩টি গোল হলো।

৬ মিনিট পর ভাগ্যের ফেরে গোল পায়নি বার্সেলোনা। মেসির ফ্রি-কিকে গ্রিজমানের হেড পোস্টে বাধা পান। ৬৫তম মিনিটে আবারও মেসিকে বিমুখ করেন বুফ্ফন। এবারও তারকা প্রতিপক্ষের ডি-বক্সের বাইরে থেকে নেয়া শট ঝাঁপিয়ে রুখে দেন অভিজ্ঞ ইতালিয়ান গোলরক্ষক। খানিক পর মেসি বাঁকানো ফ্রি-কিকে রক্ষণ প্রাচীরের ওপর দিয়ে বল পাঠালেও শেষ পর্যন্ত চলে যায় বুফ্ফন বরাবর।

৭০তম মিনিটে বার্সেলোনার পক্ষে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি, তবে আগমুহূর্তে গ্রিজমান অফসাইডে থাকায় সেটাও বাতিল হয়ে যায়। ৭৬তম মিনিটে খুব কাছ থেকে বোনুচ্চি জালে বল পাঠিয়ে ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার উচ্ছাসে মেতেছিলেন। কিন্তু অফসাইডে ছিলেন তিনি।

খেলার নির্ধারিত সময়ের শেষ মিনিটে আবারও মেসিকে হতাশ করেন বুফ্ফন। ডি-বক্সের মুখ থেকে তার বাম পায়ের শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান আগামী জানুয়ারিতে ৪৩ বছর পূর্ণ করার অপেক্ষায় থাকা বিশ্বকাপজয়ী এই গোলরক্ষক।

৬ ম্যাচে ৫ জয়ে জুভেন্টাসের পয়েন্ট ১৫। নকআউট পর্বে তাদের সঙ্গী বার্সেলোনার পয়েন্টও ১৫। অন্য ম্যাচে ফেরেন্সভারোসকে ১-০ গোলে হারিয়ে ইউরোপা লিগে খেলা নিশ্চিত করেছে দিনামো কিয়েভ। তাদের পয়েন্ট ৪। আর ১ পয়েন্ট নিয়ে তলানিতে হাঙ্গেরির দলটি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৯ডিসেম্বর, ২০২০)