দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: করোনা পরিস্থিতির কারণে আগামী জানুয়ারি মাসে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা হচ্ছে না। আগামী বছর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০০তম জন্মদিবস ১৭ মার্চ এ মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এবারের মেলা কত দিনব‌্যাপী হবে, সে বিষয়ে সরকারের কাছে তিনটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। ২১ বা ২৫ দিন অথবা দুই মাসব্যাপী হতে পারে এ মেলা। আগারগাঁওয়ে নয়, এবার মেলা হবে পূর্বাচলে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নামের স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্রে।

রোববার (১৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) মহাপরিচালক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘২০২১ সালের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা আয়োজনের বিষয়ে গত সপ্তাহে ইপিবির বোর্ড সভা হয়েছে। সভার সিদ্ধান্ত প্রস্তাবনা আকারে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ইপিবির মহাপরিচালক জানান, করোনা পরিস্থিতি, রমজান মাস এবং জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজনের বিষয় মাথায় রেখে বাণিজ্যমেলা আয়োজনের বিষয়ে প্রস্তাবনা তৈরি করা হয়েছে। যেহেতু প্রতিবছর প্রধানমন্ত্রী এ মেলা উদ্বোধন করেন, তাই প্রধানমন্ত্রীর চূড়ান্ত সম্মতির ওপর নির্ভর করছে সবকিছু।

ইপিবি সূত্র জানিয়েছে, এবার মেলা ৩০ দিনব‌্যাপী হচ্ছে না। রমজান শুরুর আগে শেষ করতে হলে ২১ বা ২৫ দিন হতে পারে এবারের বাণিজ্যমেলা। আর রমজানসহ ঈদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে মেলা আয়োজন করা হলে তা দুই মাসব‌্যাপী করার পরিকল্পনা আছে ইপিবির। এবার মেলায় ভার্চুয়াল অংশগ্রহণের বিষয়টিও যোগ করা হতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রে আগামী জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিতে ভার্চুয়ালি দুটি আন্তর্জাতিক মেলা হবে। এতে বাংলাদেশের অনেক প্রতিষ্ঠানও অংশ নেওয়ার কথা। বাংলাদেশেও একই প্রক্রিয়া অনুসরণের বিষয়ে ভাবা হচ্ছে।

ইপিবির মহাপরিচালক বলেন, ‘এখনই মার্চ মাসের করোনা পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে না। যেহেতু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানও মেলায় অংশ নেয়, তাই করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়েই সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’

এদিকে, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, ২০২১ সাল থেকেই ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলা হবে রাজধানীর পূর্বাচলে। এজন্য নির্মিত হচ্ছে বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার নামের স্থায়ী বাণিজ্যমেলা কেন্দ্র।

ইপিবি জানিয়েছে, ৩১ ডিসেম্বর বাণিজ্যমেলার স্থায়ী কেন্দ্রটি হস্তান্তর করবে চীনা নির্মাতা প্রতিষ্ঠান। পূর্বাচল উপশহর এলাকায় ২০ একর জমির ওপর বাণিজ্যমেলা কেন্দ্রটির নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। ফলে মার্চে বাণিজ্যমেলা হলে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়ার যথেষ্ট সময় পাওয়া যাবে।

এতদিন অস্থায়ীভাবে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে আন্তর্জাতিক বাণিজ‌্যমেলার আয়োজন করা হতো। স্থায়ী ভেন্যুর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার পূর্বাচলে বিশাল পরিসরে মেলা কেন্দ্র নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বাণিজ্যমেলার স্থায়ী কেন্দ্র হলে স্থানীয় পণ্যের ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল কম্পিটিটিভনেস’ বাড়বে। দেশে বিনিয়োগ বাড়বে। ভাবমূর্তিও উজ্জ্বল হবে।

পূর্বাচলে স্থায়ীভাবে বাণিজ্যমেলা করার জন্য সরকারের কাছে ৩৮ একর জমি চেয়েছিল ইপিবি। এর বিপরীতে ২৬ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই আরও ১২ একর জমি দেওয়া হবে। ২০ একর জমির ওপর এক্সিবিশন সেন্টার নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। ৬ একর জমিতে নির্মাণ করা হবে ওয়্যার হাউজ, পাওয়ার প্ল্যান্ট, স্থায়ী ফুড সেন্টার ও অংশগ্রহণকারীদের জন্য আবাসিক ব্যবস্থাসহ প্রশাসনিক ভবন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৩ডিসেম্বর, ২০২০)