লা মেরিডিয়ানের হয়ে ডিএসইর কারসাজি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কোনো ধরণের অনুমোদন ছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান লা মেরিডিয়ান হোটেলকে সরকারি মালিকানার কোম্পানি দেখিয়ে সরাসরি তালিকাভুক্তির উদ্যোগ নিয়েছিলেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রভাবশালী এক সদস্য। যিনি ১৯৯৬ ও ২০১০ সালে দুবারের শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারির জন্য অভিযুক্ত।
জালিয়াতির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে শতশত কোটি টাকা পকেটে তোলার যাবতীয় পরিকল্পনা সম্পন্ন হওয়ার শেষ মূহুর্তে বিষয়টি বিএসইসির নজরে আসায় আপাতত এ পরিকল্পনা ভেস্তে গেলেও এটিকে পুঁজিবাজারের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা ।
জানা যায়,লা মেরিডিয়ানকেসরকারি কোম্পানির তকমা দিয়ে সরাসরি তালিকাভূক্তিতে ডিএসইর পর্ষদ সভার অনুমোদনের জন্য আলোচ্যসূচির অন্তর্ভূক্ত করতে ১৬ ডিসেম্বর বুধবারসরকারী ছুটির দিনটিকে বেছে নেওয়া হয় যাতেনিয়ন্ত্রক সংস্থা এ বিষয়ে কোনো ব্যবস্থা নিতে না পারে।বিএসইসির আইনে বেসরকারি খাতের কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তি বন্ধ রাখা হলেও সরকারি কোম্পানির সরাসরি তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে এ ধরনের বিধিনিষেধ নেই। এর আগে লা মেরিডিয়ানপ্লেসমেন্টের মাধ্যমে রাষ্ট্রমালিকানাধীন সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংকের কাছ থেকে প্রায় ১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার মূলধন সংগ্রহ করে।ব্যাংকগুলো প্রাইভেট প্লেসমেন্টে প্রতিটি শেয়ার ৬৫ টাকায় কেনে। ব্যাংকগুলোর এই শেয়ারের অংশকে সরকারি মালিকানা দেখিয়ে মূলত ডিএসইর ওই পরিচালক লা মেরিডিয়ানকে সরকারি প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে সরাসরি তালিকাভূক্তির চেষ্টা করছিলো।
এ বিষয়ে বিএসইসির মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান, বিষয়টি বিএসইসির নজরে আসার পর কমিশনের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা যায়, লা মেরিডিয়ানে ৫২.০১ শতাংশই ব্যক্তির মালিকানা। এছাড়া ৪৭.৯৯ শতাংশ মালিকানা রয়েছে প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের। এরমধ্যে সরকারি ৪ ব্যাংক সোনালি ব্যাংকের ৮.৮৩%, জনতা ব্যাংকের ৮.৮৩%, অগ্রনি ব্যাংকের ৬.৬২% ও রূপালি ব্যাংকের ৫.৩০% শেয়ার রয়েছে।
লা মেরিডিয়ানের বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন ৮৭১ কোটি টাকা। কোম্পানিটির সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ি শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা। এই ইপিএস নিয়ে কোম্পানিটির শেয়ার অফলোড করতে চায় সর্বনিম্ন ৬৫ টাকা করে। অর্থাৎ প্রতিটি শেয়ারে সর্বনিম্ন ৫৫ টাকা প্রিমিয়াম নিতে চায়। যেখানে এরচেয়ে ভালো ব্যবসার হোটেল কোম্পানিগুলোর শেয়ার তলানিতে।
এদিকে প্রতিটি ৬৫ টাকায় শেয়ারবাজারে ৪.৩৫ কোটি শেয়ার অফলোড করতে চায় লা মেরিডিয়ান। যা হবে মোট শেয়ারের ৫ শতাংশ। এটা ডাইরেক্ট লিস্টিংয়ের নিয়ম বর্হিভূত। এই লিস্টিংয়ের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ২৫ শতাংশ শেয়ার অফলোডের কথা বলা আছে। এছাড়া ডাইরেক্ট লিস্টিং রুলসে দর নির্ধারনের প্রক্রিয়া বলা আছে। সে হিসাবে দর কত হবে, তা আগেই নির্ধারন করে দেওয়ার সুযোগ নেই।
দ্য রিপোর্ট/এএস/১৭ ডিসেম্বর,২০২০