অক্সফোর্ডের টিকার অনুমোদন দিল যুক্তরাজ্য
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীদের উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস টিকার অনুমোদন দিয়েছে যুক্তরাজ্য। করোনা প্রতিরোধে দ্বিতীয় টিকা হিসেবে এটি যুক্তরাজ্যে অনুমোদন পেল। টিকাদান কর্মসূচির জন্য এটিকে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে দেশটিতে। খবর বিবিসি’র।
বুধবার (৩০ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ স্বাস্থ্য দপ্তর এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘কোভিড-১৯ এর টিকা হিসেবে ব্যবহারের জন্য ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা পণ্য নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সুপারিশে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ও আস্ট্রাজেনেকার টিকাকে গ্রহণ করেছে সরকার।’
এই অনুমোদনের অর্থ হচ্ছে যুক্তরাজ্যের নীতিনির্ধারকেরা মনে করছেন টিকাটি নিরাপদ এবং কার্যকর। এরই মধ্যে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাস্ট্রাজেনেকা থেকে টিকাটির ১০ কোটি ডোজের ক্রয়াদেশ দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এর আগে ডিসেম্বরেই ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের টিকা অনুমোদন দিয়েছিল যুক্তরাজ্য। দেশটিতে এরই মধ্যে ৬ লাখ মানুষকে এই টিকা দেয়া হয়েছে।
তবে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা টিকার অনুমোদন দেয়ার ফলে টিকাদানের গতি বেশ খানিকটাই বেড়ে যাবে। কারণ এই টিকাটি স্বল্পমূল্যের এবং সহজেই উৎপাদন করা যায়।
সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, এই টিকাটি সাধারণ ফ্রিজেই সংরক্ষণ করা যায়। যেখানে ফাইজার-বায়োঅ্যানটেকের টিকাটি সংরক্ষণ করতে হয় ৭০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার এই টিকাটি ২০২০ সালের প্রথম মাসেই তৈরি করা হয়। এপ্রিলে প্রথমবারের মত কোন স্বেচ্ছাসেবীর ওপর প্রয়োগ এবং এরপর হাজার-হাজার মানুষের ওপর টিকাটির ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল করা হয়।
যেভাবে এই টিকা কাজ করবে
শিম্পাঞ্জিদের সংক্রমিত করতে পারে এমন একটি সাধারণ ঠাণ্ডা-জ্বরের ভাইরাসের মধ্যে জিনগত পরির্তন এনে এই টিকাটি তৈরি করা হয়েছে। এটিকে এমনভাবে পরিবর্তন করা হয়েছে যাতে এটি মানবদেহে সংক্রমণ ঘটাতে না পারে এবং এর মধ্যে রয়েছে করোনাভাইরাসের মূল নকশার একটি অংশ। যা ‘স্পাইক প্রোটিন’ নামে পরিচিত।
যখনই এই মূল নকশাটিকে শরীরে প্রবেশ করানো হয়, তখনই সেটি মানবদেহে স্পাইক প্রোটিন তৈরি করতে শুরু করে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তখন এটিকে একটি হুমকি হিসেবে চিহ্নিত করে এবং এটিকে ধ্বংস করার চেষ্টা করে।
পরবর্তীতে যখন ওই ব্যক্তি আসল ভাইরাসে আক্রান্ত হবে, তখন তার শরীর আগে থেকে জানবে যে কীভাবে এই ভাইরাসটিকে প্রতিরোধ করা যায়।
করোনার মহামারি ঠেকাতে টিকা উদ্ভাবনে তোড়জোড় শুরু করে উন্নত দেশগুলো। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে ৬০টি টিকার ক্লিনিক্যাল উন্নয়ন হয়েছে এবং ট্রায়ালে আছে আরও ১৭২টি।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/৩০ ডিসেম্বর, ২০২০)