দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শুরুটা ভালো লাগা দিয়ে, তারপর প্রেম। সেই প্রেম থেকে বিয়ে, সংসার। মধুর এই সংসারে থাকে অসংখ্য স্মৃতি, হাসি, আনন্দ, উচ্ছ্বাস। সবকিছুর পরেও থাকে বিরহের সুর। সেই সুরের নাম ‘বিচ্ছেদ’। সম্পর্কের এই ভাঙা-গড়ার খেলায় নিত্যই ডুবে থাকে শোবিজ। আজ এই তারকার বিয়ে তো কাল ওই তারকার ছাড়াছাড়ি! এসব বিচ্ছেদের খবর ছড়িয়ে যায় মুহূর্তের মধ্যে।

তারকাদের বিচ্ছেদ নিয়ে কৌতুহলেরও শেষ নেই সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাই তারকাদের সম্পর্কের নানা গল্প নিয়েই পাঠকদের জন্য আজকের আয়োজন। কারণ, করোনার এ বছরেও শোবিজের অনেক জনপ্রিয় তারকা দম্পতির সংসার ভেঙেছে। অনেকের আবার বিচ্ছেদ চূড়ান্ত না হলেও ঝুলে আছে আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষায়। চলুন তবে এক নজরে জেনে আসি তাদের সম্পর্কে।

বছরের ‍শুরুতেই স্বামী অনিককে ছেড়েছেন চিত্রনায়িকা শাবনূর

বিদায়ের অপেক্ষায় থাকা এ বছরের ২৬ জানুয়ারি প্রথম বিচ্ছেদের খবরটা জানান জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা শাবনূর। বনিবনা না হওয়ায় স্বামী অনিককে ডির্ভোস দেন তিনি। তালাকের নোটিশ পাঠান ৪ ফেব্রুয়ারি। সেখানে শাবনূর জানান, উভয়ের মধ্যে বনিবনা না হওয়াতেই এ বিচ্ছেদ। শাবনূরের মতো তারকার ডিভোর্স নিয়ে মিডিয়াপাড়ায় আলোচনা চলতে থাকে দীর্ঘদিন।

২০১১ সালের ৬ ডিসেম্বর অনিকের সঙ্গে আংটি বদল হয় শাবনূরের। পরে বছর ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন তারা। এর পরের বছর তাদের প্রথম সন্তান আইজান নেহানের জন্ম হয়। বর্তমানে ছেলেকে নিয়ে স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় বসবাস করছেন বহু ব্যবসাসফল ছবির নায়িকা শাবনূর।

লকডাউনের বিয়ে লকডাউনে শেষ পরীমনির

লকডাউন উপেক্ষা করে গত ১০ মার্চ হুট করে তিন টাকার দেনমোহরে নাট্যনির্মাতা কামরুজ্জামান রনিকে বিয়ে করেন আলোচিত ও সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। কিন্তু তিন টাকার বিয়ে তিন মাসও টেকেনি। বিয়ের কয়েকদিন পরই তারা আলাদা থাকা শুরু করেন। এর পরই ডিভোর্সের পথে হাটেন পরীমনি। যদিও এ বিষয় নিয়ে সরাসরি কিছু বলেননি তারা।

এর আগে বিনোদন সাংবাদিক তামিম হাসানের সঙ্গে ২০১৯ সালের ১৪ এপ্রিল বাগদান সম্পন্ন হয়েছিল পরীমনির। কথা ছিল, ২০২০ সালের ১৪ এপ্রিল তারা বিয়ে করবেন। কিন্তু তাদের আর বিয়ে করা হয়নি। বিয়ের আগেই দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়।

দ্বিতীয় সংসারটাও টেকেনি নাট্য অভিনেতা অপূর্বর

সুখের আশায় দ্বিতীয়বার বিয়ে করেছিলেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় তারকা অভিনেতা জিয়াউল ফারুক অপূর্ব। কিন্তু দেশে যখন সরকার ঘোষিত লকডাউন চলছে ঠিক তখনই খবর আসে, দীর্ঘ নয় বছরের দাম্পত্যে ইতি টেনেছেন তারা। ফেসবুক স্ট্যাটাসে এ খবর জানান অপূর্ব ও অদিতি। তাদের বিচ্ছেদের জন্য কেউ দায়ী নন বলেও উল্লেখ করেন। তবে ঠিক কি কারণে তাদের বিচ্ছেদ হয়েছে, এ নিয়ে কেউ মুখ খুলেননি।

এর আগে ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাদিয়া জাহান প্রভাকে ভালোবেসে বিয়ে করেছিলেন অপূর্ব। কিন্তু বিয়ের আগে রাজিব নামে এক ছেলের সঙ্গে প্রেম ও অবাদ মেলামেশায় জড়িয়েছিলেন প্রভা। অপূর্বর সঙ্গে বিয়ের কিছুদিন পর প্রকাশ হয় অভিনেত্রীর কিছু আপত্তিকর ভিডিও, যেগুলো তিনি রাজিবের সঙ্গে করেছিলেন। ব্যাস, এর পরই প্রভাবে তালাকের নোটিশ ধরিয়ে দেন অপূর্ব।

দুই সন্তান নিয়ে স্বামী ছাড়েন চিত্রনায়িকা মুনমুন

এক সময়ের জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা মুনমুনের বিচ্ছেদ হয় ২০১৯ সালে। তবে এ খবর প্রকাশ্যে আসে চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে। ২০০৯ সালে মোশাররফ হোসেন নামে যাত্রাপালার এক অভিনেতাকে বিয়ে করেছিলেন মুনমুন। এই সংসারে সালমান ও যশ নামে নায়িকা দুই ছেলে সন্তান রয়েছে।

দুই বছরও টেকেনি শবনম ফারিয়ার সংসার

বিয়ের এক বছর নয় মাসের মাথায় ভেঙে যায় ছোটপর্দার অভিনেত্রী শবনম ফারিয়ার সংসার। বিয়ের পরই গুঞ্জন ছিল, স্বামী হারুন অর রশীদ অপুর সঙ্গে দাম্পত্য জীবন ভালো যাচ্ছে না তার। অবশেষে সেই গুঞ্জনই সত্যি হয়। গত ২৭ নভেম্বর দুজনে ডিভোর্স পেপারে সই করেন।

২০১৯ সালের ১ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনের মাধ্যমে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া ও বেসরকারি চাকুরীজীবী হারুন অর রশীদ অপু। ২০১৫ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয়। এরপর ভালো বন্ধুত্ব। তিন বছর পর বন্ধুত্বের সীমানা পেরিয়ে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে আংটি বদল হয় তাদের।

এদিকে ডির্ভোসের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত চিত্রনায়িকা তমা মির্জা। অমানবিক নির্যাতনের স্বীকার হয়ে তিনি স্বামী হিশাম চিশতির বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন এবং যৌতুকের জন্য মারপিটসহ হুমকি প্রদানের অপরাধে মামলা করেছেন। গত ৫ ডিসেম্বর বাড্ডা থানায় মামলাটি করেন নায়িকা।

এদিকে, সংসার টেকানোর ইচ্ছে নেই হিশাম চিশতিরও। কাজেই, খুব শিগগিরই তাদের ডির্ভোস হয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গত বছরের মে মাসে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার ব্যবসায়ী হিশাম চিশতির সঙ্গে বিয়ে হয় তমা মির্জার। এছাড়াও ছোট ও বড়পর্দার বেশ কয়েক জন তারকার সংসার ঝুলে আছে। তাই যেকোনো সময় আসতে পারে নতুন কোনো সংসার ভাঙার খবর।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০১ জানুয়ারি, ২০২১)