অর্থপাচার: পিকে হালদারের ৩৩ সহযোগীর বিরুদ্ধে দুদকের ৫ মামলা
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: অর্থপাচারের অভিযোগে কানাডায় পালাতক প্রশান্ত কুমার হালদারের (পিকে হালদার) সংশ্লিষ্টতায় ৩৫০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হকসহ ৩৩ জন ও পাঁচ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে পৃথক পাঁচটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
আজ সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের একথা জানান সংস্থাটির সচিব ড. মু আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান রবিবার উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে একটি এবং অন্যান্য আসামিসহ তাদের বিরুদ্ধে আরও ৪টি মামলা দায়ের করেন।
দুদক সচিব বলেন, ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় মোট ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও মানি লন্ডারিংয়ের আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে ৩৫০ কোটি ৯৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। পরবর্তীতে ওেই অর্থ বিভিন্ন কোম্পানি ও ব্যক্তির হিসাবে স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে পাচার করে অপরাধ করেছেন তারা।
দুদক সচিব আরও বলেন, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের সাবেক চেয়ারম্যান এম এ হাশেম, সাবেক এমডি মো. রাশেদুল হক, ৯ জন বোর্ড মেম্বার, পিপলস লিজিংয়ের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী, পিকে হালদারের আত্মীয় স্বজন ও সহযোগীসহ ৩৩ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও বোর্ডের সদস্যরা অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার পূর্বক প্রতারণার মাধ্যমে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ করে ভুয়া ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের নামে অর্থ আত্মসাৎ করেন।
দুদক থেকে আরও জানানো হয়, আনান কেমিক্যাল লিমিটেডের নামে ৭০কোটি ৮২ লাখ টাকা, সুখাদা প্রপার্টিজ লিমিটেডের নামে ৬৯ কোটি ৮০ লাখ টাকা, মেসার্স বর্ণ এর নামে- ৬৬ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, রাহমান ক্যামিকেলস লিমিটেডের নামে ৫৪কোটি ৫৫ লাখ টাকা ও মুন এন্টারপ্রাইজের নামে ৮৩ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এই পাঁচ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।
দণ্ডবিধি, ১৮৬০ এর ৪০৯, ৪২০, ৪৬৮, ৪৭১, ১০৯ ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ (২), (৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় দুদক পাঁচটি মামলা দায়ের করে।
এছাড়া গতকাল পিপলস লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডের চেয়াররম্যান উজ্জ্বল কুমার নন্দী ও ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসর সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রাশেদুল হকের বিরুদ্ধে ৭০ কোটি ৮২ লাখ টাকা আত্মসাৎ ও অর্থপাচারের অভিযোগে তাদের গ্রেপ্তার করে দুদক। আজ আবারও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়।
অন্যদিকে পিকে হালদারের সহযোগীদের অর্থ লোপাটের বিষয়ে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেসের ৮৩ জন ব্যক্তির ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬২ জনের হিসাবে ১ হাজার ৫৭ কোটি ৮০ লাখ টাকা ফ্রিজ করা হয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৫ জানুয়ারি, ২০২১)