ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তৃতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশ
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আগেই সিরিজ নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশে। সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ১২০ রানের বড় ব্যাবধানে হারিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হোয়াইটওয়াশ করেছে টিম বাংলাদেশ। এ জয়ে হোয়াইটওয়াশ করার পাশাপাশি সুপার লিগের পয়েন্ট তালিকায় ত্রিশ পয়েন্ট পেয়ে এগিয়ে গিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের দেয়া ২৯৭ রানের জবাবে ৪৪.২ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৭৭ রান তোলে উইন্ডিজ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৪৭ রান আসে রোভেমন পাওলের ব্যাট থেকে।
এ নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তৃতীয়বারের মতো হোয়াইটওয়াশের স্বাদ দিল বাংলাদেশ। এর আগে ২০০৯ এবং ২০১৪ সালে তাদের হোয়াইটওয়াশ করেছে টাইগাররা।
আগে ব্যাট করে তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ২৯৭ রানের বিশাল পুঁজি নিশ্চিত করেছিল বাংলাদেশ। যা চট্টগ্রামের মাটিতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। জবাবে খেলতে নেমে ১৭৭ রানেই গুটিয়ে গেছে ক্যারিবীয়দের ইনিংস।
বড় লক্ষ্যে খেলতে নেমে শুরুতেই মুস্তাফিজুর রহমানের তোপের মুখে পরে ক্যারিবীয়রা। দলীয় ৩০ রানের মধ্যেই তারা টপ অর্ডারের দুই ব্যাটসম্যানকে হারায়। ব্যক্তিগত ১ রানে জর্ন কোটলেকে দারুণ এক আউট সুইঙ্গারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন মুস্তাফিজ। এরপর আরেক ওপেনার সুনীল অ্যামব্রিসকে ১৬ রানে ইন সুইঙ্গারে আউট করেন এই বাঁহাতি পেসার।
এরপর ১১ রান করা কাইল মায়ার্স এলবিডব্লিউ হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজের বলে। ক্যারিবীয় অধিনায়ক জেসন মোহাম্মদকে ১৭ রানে কাটারে মুশফিকুর রহিমের ক্যাচ বানিয়েছেন মোহাম্মদ সাইউদ্দিন। ১০০ রানের আগে আরও একটি উইকেট হারিয়েছে তারা। ৩১ রান করা এনক্রুমাহ বোনারকে বোল্ড করে দ্বিতীয় শিকার তুলে নিয়েছেন সাইফউদ্দিন।
এরপর নিয়মিত বিরতিতেই উইকেট হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। একপ্রান্ত আগলে রেখে রভম্যান পাওয়েল খেলেছেন ৪৭ রানের ইনিংস। তাঁকে লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলেছেন সৌম্য সরকার। শেষ দিকে রেমন্ড রেইফার (২৭) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও আর কেউ দাঁড়াতে না পারলে দুইশো রানের কোটাই পেরুতে পারেনি দলটি।
এর আগে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। দলীয় ১ রানেই ওপেনার লিটন দাসকে হারায় বাংলাদেশ। আলজারি জোসেফের ইন সুইঙ্গারে এলবিডব্লিউ হয়ে আউট হয়েছেন তিনি। তিন নম্বরে নেমে সফল হতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত।
সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে এই সিরিজে তিন নম্বরে খেলানো হচ্ছে তাঁকে। আগের দুই ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। প্রথম দুই ওয়ানডেতে করেছেন ১ এবং ১৭ রান। তৃতীয় ওয়ানডেতে কাইল মায়ার্সের ইন সুইঙ্গারে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরেছেন শান্ত। রিভিউ নিলে দেখা যায় আউট সাইড অফে পিচ করা বল লেগ স্টাম্পে আঘাত করেছে। ফলে আম্পায়ার্স কলের কারণে তাঁকে আউট হয়েই ফিরতে হয়েছে।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে অভিজ্ঞ সাকিবকে নিয়ে বাংলাদেশের রান বাড়াতে থাকেন তামিম। এই দুজনে যোগ করেন ৯৩ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ৪৪ রানে ফেরার পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক তামিম। তৃতীয় ম্যাচে আরেকটি পঞ্চাশোর্ধ ইনিংস খেলেছেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।
এদিন জেসন মোহাম্মদকে কভারে শট খেলে এক রান নিয়ে হাফ সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। এটি তাঁর ৪৯তম হাফ সেঞ্চুরি। ব্যক্তিগত ৬৪ রানে আলজারি জোসেফের বলে মিড উইকেটে আকিল হোসেইনের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হন। তামিমের পর সাকিবও তুলে নেন হাফ সেঞ্চুরি। তিনি ৫১ রান রেমন্ড রেইফারের স্লোয়ারে পরাস্ত হয়েছেন।
এরপর মুশফিকুর রহিম এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ বাংলাদেশের রানের চাকা সচল রাখেন। এই দুজনে পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৬১ বলে ৭২ রান যোগ করেন। ৩৯তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে আউট সাইড অফ স্টাম্পের বলে রেইফারকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৬৪ রানে জোসেফের হাতে ক্যাচ দেন।
মুশফিক ফিরে গেলে সৌম্যকে নিয়ে মারমুখী ব্যাটিং শুরু করেন মাহমুদউল্লাহ। ৪০ বলে তিনি ক্যারিয়ারের ২২তম হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। সৌম্য শেষ দিকে রান আউট হয়ে ফেরেন ৭ রান করে। মাহমুদউল্লাহ শেষ পর্যন্ত ৪৫ বলে ৬৪ রান করে অপরাজিত থাকেন। সাইফউদ্দিন মাঠ ছাড়েন ৫ রান করে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ২৯৭/৬ (৫০ ওভার) (তামিম ৬৪, সাকিব ৫১, মুশফিক ৬৪, মাহমুদউল্লাহ ৬৪*; জোসেফ ২/৪৮, রেইফার ২/৬১)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৭৭/১০ (৪৪.২ ওভার) (বোনার ৩১, পাওয়েল ৪৭, রেইফার ২৭; মুস্তাফিজুর ৪/২৪, সাইফউদ্দিন ২/৫১)
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৫ জানুয়ারি, ২০২১)