দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মিয়ানমারের সেনা অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে দেশটির সঙ্গে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের যে আলোচনা চলছিল তা বাধাগ্রস্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। চলতি মাসের (ফেব্রুয়ারি) শুরুতে মিয়ানমার ও বাংলাদেশের মধ্যে ওয়ার্কিং কমিটির যে বৈঠকের কথা ছিল তা অনিশ্চয়তায় পড়েছে।

মঙ্গলবার (০২ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ইস্যুতে ৪ ফেব্রুয়ারি যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

অভ্যুত্থানের আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন বলেছিলেন, ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহে পূর্ব নির্ধারিত আলোচনার মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর ব্যাপারে মিয়ানমার ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।

এর আগে গত ১৯ জানুয়ারি চীনের উদ্যোগে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করে বাংলাদেশ। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের শুরুতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের বৈঠক হওয়ার সিদ্ধান্তও হয়।

যদিও মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কোনো প্রভাব পড়বে না বলে আশ্বস্ত করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে মোমেন বলেছিলেন, আমরা কোনো ব্যক্তির সঙ্গে নেই, সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছি, তাই আমরা আলোচনা এগিয়ে নিতে চাই।

২০১৭ সালের আগস্ট থেকে পরের কয়েক মাসে গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা এসে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এর আগে থেকে কয়েক লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আসে। সবমিলিয়ে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা নিয়ে সংকটে রয়েছে বাংলাদেশ।

বিভিন্ন সময় মিয়ানমার তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে আশ্বাস দিলেও গত সাড়ে তিন বছরে নানা ছলচাতুরির আশ্রয় নিয়ে একজন রোহিঙ্গাকেও ফিরিয়ে নেয়নি। সবশেষ চীনের মধ্যস্থতায় মিয়ানমার প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর আশ্বাস দিয়েছিল। যৌথ ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে বলে আশা করছিল বাংলাদেশ। তবে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের কারণে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন সংকটে পড়ল বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০২ ফেব্রুয়ারি, ২০২১)