দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বুক বিল্ডিং পদ্ধতির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২২৫ কোটি টাকা উত্তোলন করতে যাচ্ছে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানি বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার লিমিটেড।

আইপিও তহবিলের অর্থ ব্যবহার করে ২১৫ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি সাবসিডিয়ারি কোম্পানি-কর্ণফুলী পাওয়ার ও বারাকা শিকলবাহা পাওয়ারে১৪৪.৩৪ কোটি টাকা ইক্যুইটি বিনিয়োগের পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও প্রক্রিয়ার ব্যয় নির্বাহে খরচ করবে কোম্পানিটি।সাবসিডিয়ারি দুটির ৫১% শেয়ারের মালিক বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার।

কর্ণফুলী পাওয়ার ১১০ মেগা-ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ফার্নেস ওয়েল ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রতিষ্ঠান, যা ২০১৯ সালে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করে। বারাকা শিকলবাহা পাওয়ার বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে ২০১৯ সালের মে মাসে। এটি ১০৫ মেগা-ওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন এইচএফও ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র।একটির সাথে অন্য কোম্পানি মালিকানায় যুক্ত থাকায় বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকি কম বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০২০ সালের ৩০ জুনের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের মোট সম্পদের পরিমাণ ২ হাজার ৬৭ কোটি ৮৭ লাখ টাকা।

বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদনগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ২০১৯-২০ অর্থ বছরে কোম্পানিটি সম্মিলিতভাবে মুনাফা করেছে ৬৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা, যা আগের অর্থবছরের দ্বিগুণের বেশি।

বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারের প্রান্তসীমা মূল্য (কাটঅফ প্রাইস) নির্ধারণে নিলাম আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টা থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৫টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে।

কোম্পানিটির বিডিং অনুমোদনের সময় কমিশন থেকে দুটি শর্ত আরোপ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে কমিশন কর্তৃক সম্মতিপত্র ইস্যুর তারিখ থেকে আগামী পাঁচ বছর পর্যন্ত কোম্পানিটি বোনাস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মূলধন বাড়াতে পারবে না এবং সব সময় সাবসিডিয়ারি কোম্পানিতে ন্যূনতম ৫১ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে।

নিয়ন্ত্রক সংস্থার এমন শর্ত আরোপ করায় দীর্ঘ মেয়াদে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা লাভবান হবে বলে মনে করেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

৩০ জুন সমাপ্ত ২০২০ হিসাব বছরের আর্থিক বিবরণী অনুসারে, পুনর্মূল্যায়ন ছাড়া কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্মিলিত নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) ২৩ টাকা। একই সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্মিলিত আয় (ইপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪ টাকা ৩৭ পয়সা।

বিগত ৫ বছরের আর্থিক বিবরণী অনুসারে, কর-পরবর্তী নিট মুনাফার গড় হারে কোম্পানিটির সমন্বিত ইপিএস দাঁড়িয়েছে ৩ টাকা ২২ পয়সা।

এ বিষয়ে, কোম্পানিটির চেয়ারম্যান গোলাম রব্বানী চৌধুরী বলেন, সাধারণ বিনিয়োগকারীরা সম্পৃক্ত হওয়ার ফলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও সুশাসন বাড়াতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আর এ জন্য আমরা পুঁজিবাজারে আসছি। এতে করে জবাবদিহিতা বাড়ে। অন্যদিকে বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে করেসপন্ডিং ব্যাংকিং করতে গেলেও সুশাসন ও শেয়ার ধারণের অবস্থা দেখা হয়। সব মিলিয়ে শেয়ারবাজারে আসতে পারলে একটি প্রতিষ্ঠানের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বাড়ে।আমাদের লক্ষ্য হলো দেশজুড়ে আরও বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে বেসরকারি খাতের বৃহত্তম বিদ্যুৎ উত্পাদনকারী কোম্পানিতে উন্নীত হওয়া। এজন্য আমাদের সাবসিডিয়ারিগুলোকে আরও লাভজনক করার প্রক্রিয়া শুরু করেছি। আর এই লাভের অংশ সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের সঙ্গে ভাগাভাগি করতে চাই।

উল্লেখ্য, গত ৩১ ডিসেম্বর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ৭৫৫তম কমিশন সভায় বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ারকে বিডিংয়ের অনুমোদন দেয়া হয়।

দ্য রিপোর্ট/এএস/৮জানুয়ারি,২০২১