দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ব্রি উদ্ভাবিত হাই জিংক সমৃদ্ধ ‘ব্রি-১০০’ ধান অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় বীজ বোর্ড। শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে অবমুক্ত করা হবে।

মঙ্গলবার (৯ ফেব্রুয়ারি) কৃষি মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় বীজ বোর্ডের ১০৪তম সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি মো. মেসবাহুল ইসলাম সভায় সভাপতিত্ব করেন।

মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষ্যে ব্রি উদ্ভাবিত শততম জাতের (ব্রি ধান-১০০) অবমুক্তকরণ এটি। হাই জিংক সমৃদ্ধ এতে কেজিতে জিংকের পরিমাণ প্রতি ২৫ দশমিক ৭০ মিলিগ্রাম। দেশের ১০টি স্থানে ট্রায়াল করে হেক্টর প্রতি গড় ফলন পাওয়া গেছে ৭ দশমিক ৬৯ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে। জাতটির জীবনকাল ১৪৮ দিন। বোরো মৌসুমে চাষের জন্য অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

জাতীয় বীজ বোর্ডের সভাপতি মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেন, মুজিব শতবর্ষে উচ্চ জিংক সমৃদ্ধ ‘ব্রি ধান ১০০’ অবমুক্ত করতে পারা খুবই আনন্দের। আশা করা যায়, এটি একটি মেগা ভ্যারাইটি হবে। দেশের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর পুষ্টির অধিকাংশ ক্যালরি, প্রোটিন ও মিনারেল আসে ভাত থেকে। ভাত তাদের কাছে সহজলভ্য। জিংক সমৃদ্ধ এ জাতটি উদ্ভাবনের ফলে মানুষের জিংকের চাহিদা অনেকটাই পূরণ হবে।

ব্রির মহাপরিচালক ড. মো: শাহজাহান কবীর বলেন, ‘ব্রি ধান ১০০ মুজিব শতবর্ষে ব্রির শততম জাত হিসেবে অবমুক্ত হওয়ায় একটি বিশেষত্ব পাবে। এ জাত উচ্চমাত্রার জিংক সমৃদ্ধ। ফলন ব্রি ধান ২৯ থেকে বেশি এবং জীবনকাল ব্রি ধান ২৮ এর মত, যা আমাদের দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। আমাদের পরিকল্পনা অতিদ্রুত এ জাতটি কৃষকের কাছে জনপ্রিয় করে, একদিকে উৎপাদন বৃদ্ধি ও অন্যদিকে পুষ্টির যোগান দেওয়া সম্ভব হবে।

একই সভায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিজেআরআই) উদ্ভাবিত লবণাক্ততা সহিষ্ণু দেশি পাটের (বিজেআরআই দেশি পাট-১০) জাত অবমুক্ত করা হয়েছে। দেশি পাট-১০ জাতটি স্বল্পমেয়াদি ও মধ্যম মাত্রার লবণাক্ততা সহিষ্ণু। এটি দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত এলাকায় বপন উপযোগী। আরেকটি বৈশিষ্ট হলো গাছের বয়স ১০৫-১১৫ দিন হলেই কেটে রোপা আমন ধান লাগানো যায়। আমন কেটে রবি ফসল চাষ করা যায়। খুলনা ও বরিশালে ৫টি ট্রায়ালে হেক্টর প্রতি আঁশের ফলন ২.৫৭ টন ও পাট কাঠির ফলন ৭.২১ মেট্রিক টন পাওয়া গেছে।

অতিরিক্ত সচিব (গবেষণা) কমলারঞ্জন দাশ, অতিরিক্ত সচিব ও মহাপরিচালক (বীজ) বলাই কৃষ্ণ হাজরা, বিএডিসির চেয়ারম্যন মো. সায়েদুল ইসলাম, ব্রির মহাপরিচালক ড. মো. শাহজাহান কবীর, বিজেআরআইর মহাপরিচালক ড. আশম আনোয়ারুল হকসহ অন্যান্য সংস্থাপ্রধান ও বীজ বোর্ডের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বীজ ডিলার নিবন্ধন ও নবায়নের ক্ষেত্রে ‘সেবা সহজীকরণ’ এর সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এখন থেকে বীজ ডিলারদের নিবন্ধন ১ বছরের পরিবর্তে একসঙ্গে ৫ বছরের জন্য দেওয়া হবে। এ বিষয়ে সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম বলেন, সেবা সহজীকরণের ফলে ডিলারদের প্রতিবছর নবায়নের জন্য মন্ত্রণালয়ে আসতে হবে না। বীজ ডিলারদের হয়রানি অনেক হ্রাস পাবে।

সভায় আগামী মৌসুমের জন্য পাটবীজ আমদানির পরিমাণ নির্ধারণ করেছে বোর্ড। ২০২১-২২ উৎপাদন বর্ষে পাটবীজের চাহিদা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২১)