দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বল হাতে ব্যাটসম্যানদের ঘায়েল করতে যেমনি পটু, ঠিক তেমনি ব্যাট হাতে প্রতিপক্ষের ব্যাটসম্যানদের সমানে শাসন করতেও বেশ দক্ষ।পারফরম্যান্স গুণে নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন এক অনন্য উচ্চতায়। ভদ্রলোকদের খেলা ক্রিকেটে তিনি ভদ্র তো বটেই, কিন্তু দল এবং দেশের স্বার্থে কাউকে ছাড় দিতেও রাজি নন। হ্যাঁ, বলছি বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসানের কথা। ঘ্যাড়ত্যাড়া-বেয়াদব ছেলেটির ৩৪তম জন্মদিন আজ। শুভ জন্মদিন সাকিব।

১৯৮৭ সালের ২৪ মার্চ মাগুরা জেলায় জম্মগ্রহণ করেন তিনি। বাবা মাশরুর রেজা ফুটবলের ভক্ত হলেও ছেলে বড় হতে থাকেন ব্যাট-বল নিয়ে। মাগুরার স্থানীয় একটি ক্লাবে খেলে ক্রিকেটটা রপ্ত করতে থাকেন সাকিব। বাঁহাতি ব্যাটিং ও বোলিংয়ে দ্রুতই সমবয়সীদের ছাড়িয়ে যেতে থাকেন এই ক্রিকেটার। ক্রিকেটের প্রতি ছেলের আগ্রহ দেখে বাবা তাকে ভর্তি করে দেন বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (বিকেএসপি)।

পরে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে দ্যুতিময় পারফরম্যান্সই সাকিবকে নিয়ে আসে পাদপ্রদীপের আলোয়। ২০০৫ ও ২০০৬ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের হয়ে ১৮টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ৩৫.১৮ গড়ে রান করেন ৫৬৩ এবং ২০.১৮ গড়ে উইকেট নেন ২২টি।

২০০৬ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে লাল-সবুজের জার্সি গায়ে আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেটে অভিষেক হয় সাকিবের। অভিষেকে ১০ ওভার বোলিং করে ৩৯ রান খরচায় নিয়েছিলেন ১ উইকেট। আর ব্যাটিংয়ে ৪৯ বলে ৩০ রান করে অপরাজিত ছিলেন। তারপর থেকে ফর্মের কারণে কখনোই দল থেকে বাদ পড়তে হয়নি বাঁহাতি এই ক্রিকেট জাদুকরকে। ফলে তাকাতে হয়নি পিছু ফিরেও।

ওয়ানডে অভিষেকের পরের বছরই ভারতের বিপক্ষে চট্টগ্রামে টেস্টে অভিষেক হয় সাকিবের। আর ২০০৬ সালে খুলনায় জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ক্রিকেটের সংক্ষিপ্ত ফরম্যাট টি-টোয়েন্টিতে প্রথম ম্যাচ খেলেন তিনি।

২০০৯ সালে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ওয়ানডে ফরম্যাটে আইসিসির অলরাউন্ডার র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠেন সাকিব। আর ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে বিশ্বের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে তিন ফরম্যাটেই অলরাউন্ডার র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে তার নাম।

বাংলাদেশের জার্সিগায়ে এখন পর্যন্ত ২০৯ ওয়ানডে, ৫৭ টেস্ট ও ৭৬ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন সাকিব। টেস্টে ৩৯৩০ রান এবং ২১০ উইকেট শিকার করেছেন। ওয়ানডেতে ৬৪৩৬ রান এবং ২৬৬ উইকেট সংগ্রহ করেছেন সাকিব। টি-টোয়েন্টিতে ১৫৬৭ এবং ৯২ উইকেট শিকার করেছেন।

আর ১২-১২-১২ তারিখে উম্মে আহমেদ শিশিরের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন ৩৪ বছর বয়সী এই টাইগার ক্রিকেটার। তাদের পরিচয়টা ২০১০ সালে। উস্টারশায়ারে কাউন্টি খেলতে তিনি। অন্যদিকে যুক্তরাস্ট্রের উইসকনসিন রাজ্যে পরিবারের সাথে থাকতেন শিশির।

খেলার ফাঁকে সাকিবও ঘুরতে বেড়ান। টিভির পর্দায় সাকিবকে খেলার মাঠে দেখেছেন শিশির। মুখোমুখি হওয়ায় সাকিবকে চিনতে কষ্ট হয়নি শিশিরের। সাকিবের কাছে শিশির ছিলেন একেবারেই অচেনা। সাকিবকে শুভেচ্ছা জানান শিশির। অবিবাহিত বলে সাকিবের প্রতি আকর্ষণ বেশিই থাকে শিশিরের। এর পরে ফেসবুকে যোগাযোগ তাদের মধ্যে। হয় ফোনালাপ। প্রেমের সম্পর্ক গভীর হয়। সবকিছু জেনে যায় দুই পরিবার। অবশেষে এসে যায় ১২.১২.১২ দিনটি।

এখন সাকিব-শিশির সংসারে রয়েছে তিনটি ফুটফুটে সন্তান। ২০১৬ সালে সাকিবের প্রথম কন্যা আলাইনা হাসান অব্রির জন্ম হয়। এরপর গত বছরের এপ্রিল মাসে দ্বিতীয়বারের মতো বাবা হন তিনি। আর চলতি মাসের ১৬ তারিখে তাদের ঘর আলো করে প্রথম পুত্র সন্তান জন্ম নেয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৪মার্চ, ২০২১)