টি-টোয়েন্টিতেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: খালি হাতেই নিউজিল্যান্ড সফর শেষ হলো বাংলাদেশের। ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও টাইগারদের হোয়াইটওয়াশের লজ্জায় ডুবিয়েছে কিউইরা।
তিন টি-টোয়েন্টি সিরিজের শেষ ম্যাচে ৬৫ রানে হেরেছ বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি থেকে টি-টেন হয়ে যাওয়া ম্যাচটিতে ১৪২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ৯.৩ ওভারে সব উইকেট হারিয়ে ৭৬ রান করতে পারে টাইগাররা। এর আগে দুই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও ফিন অ্যালেনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে ১৪১ রান করে নিউজিল্যান্ড।
টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়ক হিসেবে ভুলে যাওয়ার মতো অভিষেক হলো লিটন দাশের। দলকে নেতৃত্ব দিতে যেমন ব্যর্থ হয়েছেন তেমনি ব্যাট হাতেও ব্যর্থ এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যান। এই সফরে উল্লেখযোগ্য কোনোকিছুই করে দেখাতে পারেননি লিটন। ধারাবাহিক ব্যাটিং ব্যর্থতার পর শেষ ম্যাচেও রানের খাতা খোলার আগে বোল্ড হন তিনি।
লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তার আগে ব্যর্থতার পরিচয় দেন সৌম্য সরকারও। সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে তার ব্যাট হাসলেও শেষ ম্যাচে ৪ চলে ২ চারে ১০ রানে টিম সাউদিকে উইকেট উপহার দেন তিনি। মাঠে নেমে কিউই পেসারের পরের বলে সাজঘরে ফেরেন লিটন। ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম (১৯) চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু রান পাহাড়ের নিচে চাপা পড়া বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানদের কোনো সুযোগই দেয়নি কিউই বোলাররা। একাদশে সুযোগ পাওয়াটা কাজে লাগাতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত (৮)। টড অ্যাশটেলের বলে বোল্ড হোন তিনি। কিউই স্পিনার এর আগে ফেরান নাঈমকে। এরপর পরের শিকার হিসেবে তুলে নেন আফিফ হোসেন (৮) ও মেহেদি হাসানকে (০)। মাঝখানে কেবল দুই অঙ্কের রান ছুঁয়েছেন একাদশে সুযোগ পাওয়া মোসাদ্দেক হোসেন (১৩)। শরিফুল ইসলাম (৬), তাসকিন আহমেদ (৫) কেবল রানের ব্যবধান সামান্যটুকু কমিয়েছেন।
টি-টোয়েন্টি থেকে টি-টেন হয়ে যাওয়া ম্যাচটিতে শুরু থেকে ঝড় তুলেন দুই কিউই ওপেনার মার্টিন গাপটিল ও অ্যালেন। টাইগারদের আবারও একের পর এক ক্যাচ মিসের মহড়ায় ৫.৪ ওভারে দলকে ৮৫ রান এনে দেন তারা। এই ম্যাচে পাঁচটি ক্যাচ মিস করেছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা।
তবে এর মাঝে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা গাপটিলকে ফেরান মেহেদি হাসান। সাজঘরে ফেরার আগে ১৯ বলে ১ চার ও ৫ ছয়ে ৪৪ রান করেছেন তিনি। গাপটিল ফিরলেও ১৮ বলে ফিফটি তুলেন নেন অ্যালেন। তাসকিন আহমেদের বলে সাজঘরে ফেরার আগে ২৯ বলে ১০ চার ও ৩ ছয়ে ৭১ রান করেন তিনি।
তার আগে গ্লেন ফিলিপসকে (১৪) আউট করেন শরিফুল ইসলাম। ইনিংসের শেষ বলে রান আউটের শিকার হন ড্যারিল মিচেল (১১)। কোনো বলের মুখোমুখি না হয়ে অপরাজিত থাকেন মার্ক চাপম্যান (০)।
এই ম্যাচে অধিনায়ক মাহমুদউদল্লাহ রিয়াদকে পায়নি টাইগাররা। উরুতে চোট পেয়ে ছিটকে গেছেন ৩৫ বছর বয়সী অলরাউন্ডার। মাহমুদউল্লাহর পরিবর্তে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব ওঠে লিটন দাশের হাতে। টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশের সপ্তম অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয় এই উইকেটরক্ষক-ব্যাটসম্যানের। এছাড়া শেষ ম্যাচে বাংলাদেশ মাঠে নামে তিন পরিবর্তন নিয়ে। একাদশে জায়গা পেয়েছেন নাজমুল হাসান শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেন ও রুবেল হোসেন।
মাহমুদউল্লাহ না থাকায় ২০০৬ সালের পর প্রথমবারের মতো পঞ্চপাণ্ডবকে ছাড়া আজ মাঠে নামল বাংলাদেশ। ওয়ানডে সিরিজে থাকলেও চোটের কারণে টি-টোয়েন্টিতে নেই মুশফিকুর রহিম। অন্যদিকে ওয়ানডে সিরিজ খেলে দেশে ফেরেন পঞ্চপাণ্ডবের আরেকজন তামিম ইকবাল।
সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচ জিতে আগেই ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায় কিউইরা। আজকের পরাজয়ে তিন ওয়ানডে সিরিজের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াইওয়াশের লজ্জায় ডুবলো বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে কখনও জয়ের স্বাদ পায়নি টাইগাররা। কিউইদের ঘরের মাটিতে ক্রিকেটের সব ফরম্যাট মিলিয়ে মোট ৩২ ম্যাচে হারলো বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
টস : বাংলাদেশ
নিউজিল্যান্ড : ১৪১/৩ (১০ ওভার)
অ্যালেন ৭১, গাপটিল ৪৪, ফিলিপস ১৪
শরিফুল ২১/১, তাসকিন ২৪/১, মেহেদী ৩৪/১
বাংলাদেশ : ৭৬/১০ (৯.৩ ওভার)
নাঈম ১৯, মোসাদ্দেক ১৩, সৌম্য ১০
অ্যাসেল ১৩/৪, সাউদি ১৫/৩
ফল : নিউজিল্যান্ড ৬৫ রানে জয়ী।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০১ এপ্রিল, ২০২১)