দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: করোনার সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত সাত দিনের বিধিনিষেধ আজ শেষ হচ্ছে। আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে অপেক্ষাকৃত কঠোর ও সর্বাত্মক লকডাউন। এর মাঝের ২ দিন, ১২ ও ১৩ এপ্রিল, প্রথম ধাপের ধারাবাহিকতায় চলবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, চলমান মহামারিকালে জীবনের পাশাপাশি জীবিকার চাকা সচল রাখতে আমাদের আস্থার ঠিকানা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর আস্থা রাখুন।

তিনি বলেন, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বিশেষজ্ঞদের পরামর্শের ভিত্তিতে শেখ হাসিনা সরকার সর্বাত্মক প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এ ধারাবাহিকতায় সরকার লকডাউন ঘোষণা করেছে। আজ শেষ হচ্ছে প্রথম দফার লকডাউন, আগামী ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হবে সর্বাত্মক লকডাউন।

আজ রোববার (১১ এপ্রিল) সকালে তার সরকারি বাসভবনে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে মন্ত্রী এ কথা বলেন।

প্রয়োজনীয় নির্দেশনাসহ সরকার সময়মতো প্রজ্ঞাপন জারি করবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, আমাদের বৃহত্তর স্বার্থে ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনে জরুরি সেবা ছাড়া সবাইকে ঘরে অবস্থান করতে হবে।

১২ ও ১৩ এপ্রিল তাহলে কী হবে? জানতে চাইলে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, প্রথম ধাপের বা চলমান লকডাউনের ধারাবাহিকতা চলবে ১২ ও ১৩ এপ্রিল।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, সোম ও মঙ্গলবার যথারীতি শুধু দেশের সিটি করপোরেশন এলাকায় শর্তসাপেক্ষে সমন্বিত ভাড়ার অর্ধেক আসন খালি রেখে গণপরিবহন চলবে এবং দূরপাল্লার যাত্রী পরিবহন বন্ধ থাকবে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত।

দেশের মানুষকে এই সংকটকালে ধৈর্য ধারণের আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বাস্থ্যবিধির প্রতি সামান্য অবহেলা আমাদের চিরচেনা জীবন থেকে ছিটকে দিতে পারে।

তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, সবার প্রচেষ্টা এবং পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে নিশ্চয়ই এ মহামারি থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে আবারও ফিরবে পৃথিবী নিজ রূপে।

আওয়ামী লীগ নাকি নিজস্ব ইতিহাস তৈরি করছে- বিএনপি নেতাদের এমন অবান্তর অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগের নিজস্ব ইতিহাস তৈরির কোনো কারখানা নেই, আওয়ামী লীগ ইতিহাসের মীমাংসিত সত্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং এর চর্চা অনুসরণ করে।

মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত স্বাধীনতার পূর্বাপর ইতিহাস বিকৃতিভাবে উপস্থাপন করা হয়েছিল উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের মহানায়ককে বাদ দিয়ে রচনা করতে চেয়ছিল খণ্ডিত ও বিকৃত ইতিহাস।

তিনি বলেন, ইতিহাসের নায়কদের বিএনপি ভিলেনে রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা করেছিল, তারা স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠককে ঘোষক বানাতে চেয়েছিলেন। ইতিহাসের ফুটনোটকে তারা ইতিহাসের নায়ক বানাতে চেয়েছিলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, হাতের তালু দিয়ে যেমনি সূর্যকে ঢাকা যায় না, তেমনি স্বাধীনতার ইতিহাসও আজ স্বমহিমায় সমুজ্জ্বল। যারা ইতিহাসের পায়ে শিকল পরিয়েছিল, আজ তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, জনগণ এখন সজাগ রয়েছে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃতি ও স্বাধীনতার মূল্যবোধ বিনষ্টের বিরুদ্ধে।

এর আগে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশন-বিআরটিসির ২৪২ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী জন্য তিন কোটি টাকার গ্রাচুইটি প্রদান এবং মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

এ সময় মন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিআরটিসিকে এগিয়ে নিতে এর বহরে সহস্রাধিক বাস ও ট্রাক সংযোজনসহ নানান উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।

তিনি বলেন, এখন প্রয়োজন বিআরটিসির নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা দক্ষতা উন্নয়ন।

সড়ক পরিবহন মন্ত্রী বলেন, জনগণের দুর্ভোগের কথা বিবেচনা করে শেখ হাসিনা সরকার ঢাকাসহ অন্যান্য সিটি করপোরেশন এলাকাধীন সড়কে শর্তসাপেক্ষে গণপরিবহন চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

তিনি বিআরটিসিসহ পরিবহন মালিক শ্রমিক সংগঠনসমূহকে সরকারি নির্দেশনা মেনে পরিবহন চালানোর অনুরোধ জানান

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১১ এপ্রিল, ২০২১)