দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বয়স মাত্র ২৮ বছর। নিজেকে পরিচয় দিতো শিক্ষা সচিব বলে। সাথে থাকতো দামি গাড়ি ও পিএস। এ প্রতারক সচিব চাকরি দেয়ার কথা বলে সাধারণ মানুষকে ধোকা দিয়ে কোটি কোটি টাকা লুটে নিয়েছে।

তবে শেষ রক্ষা হয়নি, ধরা পড়েছে গোয়েন্দাদের জালে। সম্প্রতি তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ। তার নাম মোস্তাফিজুর রহমান। চলাফেরায় বেশ অভিজাত্য। সাথে নামিদামি সব গাড়ি। সঙ্গে একাধিক পিএস।

কৌশলে মন্ত্রী এমপিদের সাথে ছবি তুলে তা দেখাতেন সাধারণ মানুষকে। সবাইকে জানাতেন বেকারদের চাকরি দেয়ার ক্ষমতা তার। আর এই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে টাকা খুইয়েছেন শতশত যুবক।

তাদের একজন মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। বরিশালের একটি মাদ্রাসার শিক্ষক। গ্রামে নামডাকও বেশ। একই এলাকার ফারুকের মাধ্যমে সচিব পরিচয় দেয়া মোস্তাফিজের সাথে পরিচয়। এরপর ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে ডেকে নিয়ে তার এলাকার বেকার যুবকদের চাকরির অফার দেয় সে।

এরপর অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রলোভনে পরে মোস্তাফিজের কাছে কুরিয়ারে ৯০ লাখ টাকা পাঠান তিনি। এরপর থেকেই লাপাত্তা মোস্তাফিজ।

ভুক্তভোগী শিক্ষক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, 'প্রটোকলে গেছে। একজন সচিব গেছে। এলাকা ফাঁকা হয়ে গেছে। বিশাল আয়োজন করছে। পরে জানতে পারলাম সে কিছুই না।'

চাকরি প্রার্থীরা মহিউদ্দিনকে বাড়িছাড়া করেছেন। বাধ্য হয়ে রাজধানীর দক্ষিণখান থানায় মামলা করেন তিনি।

মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আরো বলেন, 'আমি শিক্ষক মানুষ। যাদের চাকরি দিব বলে টাকা আনছি, তারা বলছে- চাকরি লাগবে না টাকা দিয়ে দেন। আমার তো একটা সামাজিক মর্যাদা আছে।'

পরে মামলাটি তদন্ত করে ডিএমপির গোয়েন্দা বিভাগ। গ্রেপ্তার করা হয় ভুয়া সচিব পরিচয় দেয়া মোস্তাফিজ ও তার পিএস বাবুল মৃধাকে। পুলিশ বলছে, এই চক্রটি গত কয়েক বছরে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।

এ বিষয়ে ডিএমপি ডিবি সাইবার এন্ড স্পেশাল ক্রাইম সহকারী পুলিশ কমিশনার হাসান মুহতারিম বলেছেন, 'এই মামলাটির ক্ষেত্রে যেটা করেছে, নিজেকে শিক্ষা সচিক পরিচয় দিয়ে, দামি গাড়ি বহর এবং পিএস নিয়ে ওই এলাকায় যেয়ে নিজের পরিচয় প্রতিষ্ঠিত করেছে। এভাবে প্রতারণা করেছে।'

তিনি বলেন, শুধু তাই নয়, বিমানবন্দরে থার্ড টার্মিনালে শ্রমিক নিয়োগের নামেও অনেকের সাথে প্রতারণা করেছে চক্রটি। তাদের বিরুদ্ধে আগেও প্রতারণার বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৩ এপ্রিল, ২০২১)