কঠোর লকডাউনই আশির্বাদ হলো পুঁজিবাজারের জন্য ?
আব্দুল্লাহ শুভ,দ্য রিপোর্ট: কমিশন,কোম্পানি কিংবা বিনিয়োগকারী- কপালে চিন্তার ভাজ সব পক্ষেরই ছিল। কঠোর লকডাউন, স্থবির সবকিছু ! প্রথমে প্রশ্ন উঠেছিল পুঁজিবাজার না আবার গত বছরের মত মাসের পর মাস বন্ধ থাকে। শেষে যখন সরকার ব্যাংক বন্ধের ঘোষণা দিল, বিনিয়োগকারীদের তখন হারেরে অবস্থা ! তবে তো পুঁজিবাজারও বন্ধ। প্রথম লকডাউনের দিন বন্ধই থাকলো পুঁজিবাজার। তবে, লকডাউনের দ্বিতীয় দিন সরকার ব্যাংক খোলার সিদ্ধান্ত নিল - সাথে খুলে গেল পুঁজিবাজার। এতে বাজারে চাঞ্চল্য আসলেও কপালের ভাজ কমার লক্ষণ দেখা গেলনা খুব একটা ! দেশ যখন স্থবির - পুঁজিবাজারের অবস্থা আর খারাপ না হয়ে কই যায় !
তবে, লকডাউনে সব চিন্তার হিসেব-নিকেশ পাল্টে দিয়েছে দেশের পুঁজিবাজার । বড় ধ্বসের আশংকা থেকে বের হয়ে পুঁজিবাজারে চলছে টানা উত্থান। এখন বিনিয়োগকারী থেকে কমিশন- চিন্তার বলিরেখা আর কারও কপালে দেখা যাচ্ছেনা।
দেশকঠোর লকডাউনে যাওযার আগের সপ্তাহের তুলনায় লকডাউনের সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) টাকার অংকে লেনদেন কিছুটা কমলেও দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে । আগের সপ্তাহের চেয়ে দৈনিক গড় লেনদেন ৮.৫৮ শতাংশ বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে মুলধন এবং অধিকাংশ কোম্পানির দর। কঠোর লকডাউনের মধ্যে বাজার মুলধনও বেড়েছে। কঠোর লকডাউনের আগে ৪ লাখ ৫৯ হাজার ২৩৯ কোটি ৯৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা মুলধন নিয়ে লেনদেন শুরু হয় যা কঠোর লকডাউনের শেষ দিনে ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩১৫ কোটি ৩৫ লাখ ১২ হাজার ২৬৮ টাকায় দাড়ায় । অর্থ্যাৎ, লকডাউনের মধ্যে বাজারে ৪৫১৪ কোটি টাকা মুলধন বেড়েছে।
অন্যদিকে, ডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স লকডাউনের এক সপ্তাহে ৯৪ পয়েন্ট বেড়েছে। সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএস-৩০ আগের সপ্তাহের চেয়ে ৪৪ দশমিক ৪৩ পয়েন্ট বেড়েছে।অন্যদিকে শরীয়াহ সূচক বেড়েছে ৩০ পয়েন্ট ।
ডিএসইতে গত সপ্তাহে ৩৭৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড লেনদেনে অংশ নেয়। এর মধ্যে দাম বেড়েছে ২১৭ টির, কমেছে ৯০টির অপরিবর্তিত ছিল৬০টির ।
এ সপ্তাহে লেনদেন হয়েছে রবিবার এবং সোমবার। রবিবার ডিএসই প্রধান সূচকডিএসইএক্স ২১ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করে ৫ হাজার ৩৩১ পয়েন্টে। সোমবার সূচকটি আরও ১৮ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫৩৪৯ পয়েন্টে । রোববার আগের কার্যদিবসের তুলনায়৪৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট বেশি লেনদেন হয় । আজডিএসইতে ৬৯৬ কোটি ৮৯ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আজ ডিএসইতে রোববার থেকে ৯৪ কোটি ১৩ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে। অর্থ্যাৎ লেনদেনও টানা উত্থানে আছে।
আজ সোমবারডিএসইতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্সডিএসইএক্স ১৮পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৫ হাজার ৩৪৯ পয়েন্টে । অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক পয়েন্ট ৪ এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে যথাক্রমে ১ হাজার ২১৬ এবং ২ হাজার ৪৬ পয়েন্টে।
এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩৪৬ টি কোম্পানির মধ্যে দর বেড়েছে ১২৬ টির, কমেছে ১৫২ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৬৮ টির শেয়ার দর।
অপরদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই৬৪ পয়েন্ট বেড়েঅবস্থান করছে১৫ হাজার ৪৭৮ পয়েন্টে ।
সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৩৯ টি কোম্পানি ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের শেয়ারের মধ্যে দর বেড়েছে ১০৭ টির, দর কমেছে ১০৩ টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ২৯ টি। লেনদেন হয়েছে৩৪ কোটি ৩৮ লাখ শেয়ার ও ইউনিট।
এ নিয়ে টানা৬ কর্মদিবস ধরে উত্থান রয়েছে পুঁজিবাজারে। অর্থ্যৎ কঠোর লকডাউনের পুরো সময়টাতেই উত্থানে রয়েছে পুঁজিবাজার।
এদিকে, সরকার ঘোষিত এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউনের মেয়াদ আরও এক সপ্তাহ বেড়েছে। বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন - পুঁজিবাজার যে হালতে আছে তাতে লকডাউন নিয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই।
এ বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটি এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি)নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম দ্য রিপোর্টকে বলেন- বাজার স্থিতিশীল উত্থানে রয়েছে। বাজার নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।
দ্য রিপোর্ট/এএস/১৯ এপ্রিল ,২০২১