বিতর্কিত নিয়োগ দিয়েই ক্যাম্পাস ছাড়লেন রাবি ভিসি
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বৃহস্পতিবার (০৬ মে) ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের দ্বিতীয় মেয়াদে উপাচার্য হিসেবে শেষ কর্মদিবস। এদিন তার বাসভবনের বাইরে চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষের মধ্যেই চলছিল নিয়োগ কার্যক্রম। অবশেষে যাওয়ার আগে অ্যাডহকভিত্তিতে শতাধিক চাকরিপ্রত্যাশীকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান।
তবে ইস্যুকৃত নিয়োগপত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম স্বাক্ষর করেননি। এক সহকারী রেজিস্ট্রারকে রেজিস্ট্রার বানিয়ে স্বাক্ষর করিয়ে নেওয়া হয়েছে। রেজিস্ট্রার আব্দুস সালামকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে।
এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বাক্ষরিত নিয়োগের একটি তালিকা পাওয়া গেছে। উপাচার্য স্বাক্ষরিত ওই নিয়োগ তালিকায় ৮৫ জন উচ্চমান সহকারী, ১১ জন শিক্ষক ও ইমামসহ বেশ কয়েকজন তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীসহ ১৪২ জনের নাম রয়েছে। এরই মধ্যে চাকরিতে যোগদানের চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন নতুন নিয়োগপ্রাপ্তরা।
অব্যাহতির বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক আব্দুস সালাম বলেন, নিয়োগ দেওয়া হবে জানতে পেরে আমি গতকাল থেকে বাইরে চলে এসেছি, যেন আমাকে না পায়। নিয়োগপত্রে ইউসুফ আলী বা মামুনুর রশীদ নামে একজন সহকারী রেজিস্ট্রারের স্বাক্ষর রয়েছে বলে শুনছি। কোনো অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে থাকবো না বলেই আড়ালে আছি।
এদিকে দুপুর দেড়টার দিকে পুলিশ পাহারায় উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহান ক্যাম্পাস ত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়োগ নিয়ে কর্মচারী-কর্মকর্তাসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালান মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সংঘর্ষ ও পুলিশের লাঠিচার্জে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চাকরিপ্রত্যাশী মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সেকশন অফিসার মাসুদের ওপর হামলা চালান। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
এ সময় রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এগিয়ে এলে তাদের ওপরও হামলা করা হয়। পরে রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে ধাওয়া করলে মহানগর ছাত্রলীগেরর নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় পুলিশ লাঠিচার্জ করলে মহানগর ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস থেকে বেড়িয়ে যান।
রাবির সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও সেকশন অফিসার কামরুজ্জামান চঞ্চল বলেন, রাবি উপাচার্য অধ্যাপক এম আব্দুস সোবহানের দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ দিন ছিল আজ। তিনি চাকরিপ্রত্যাশী ১২৫ জন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীকে নিয়োগ দিয়েছেন বলে প্রচার হলে মহানগর ছাত্রলীগের চাকরিপ্রত্যাশীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন। এ সময় তারাও চাকরি দাবি করেন। তাদের এমন ভাব যেন এখনই তাদের নিয়োগ দিতে হবে। এ নিয়ে সেকশন কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তারা হামলা চালান। এ সময় আমি এগিয়ে গেলে তারা আমাকেও লাঞ্ছিত করেন।
তিনি বলেন, ঘটনার সময় রাবি ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মী সেখানে ছিলেন। তারা এগিয়ে আসলে তাদের উপরও হামলা করা হয়। পরে রাবি ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সংগঠিত হয়ে তাদের ধাওয়া দেন।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ মে, ২০২১)
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৭ মে, ২০২১)