দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: এক গবেষণায় দেখা গেছে, পৃথিবীতে এই মুহূর্তে মানুষের চেয়ে পাখির সংখ্যা কমপক্ষে ছয় গুণ বেশি৷ গবেষণায় পাওয়া ফল অনুযায়ী পাখির সংখ্যা পাঁচ হাজার কোটির মতো৷

অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীদের করা এই গবেষণা নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে প্রসিডিংস অব দ্য ইউএস ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস-এ৷

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নয় হাজার ৭০০ প্রজাতির পাখির তথ্য নিয়ে কাজ করে তৈরি করা প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, যে পাঁচ হাজার কোটি পাখি এখনো রয়েছে, তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছে চড়ুই (হাউস স্প্যারো) এবং ইউরোপিয়ান স্টার্লিং৷ চড়ুই রয়েছে ১৬০০ কোটি আর ইউরোপিয়ান স্টার্লিং ১৩০০ কোটি৷

কখনো ঝরা পাতার মতোন, কখনো ওড়ার চেষ্টা করা ঘুঘু, কিংবা কখনো সাঁতরে বেড়ানো বিশাল তিমি মাছের আকৃতি তৈরি করে পাখির ঝাঁক৷

বিজ্ঞানীরা ঠিক জানেন না, কিভাবে তারা এসব আকৃতি তৈরি করে৷ কিন্তু কেউ কেউ বলেন যে, এরা ইচ্ছে করে এমন করে না৷ বরং ঝাঁকের একটি পাখি তার নিকটবর্তী আরেকটির কাছ থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব তৈরি করে ওড়ে৷ তাতেই এমন আকৃতি তৈরি হয়৷

যুক্তরাষ্ট্রের পাখি বিশেষজ্ঞ জাকারি স্ল্যাভিন বলেন, ঠিক যেন মাছের মতো৷ এই ঝাঁকের কোনও নেতা নেই৷ কিন্তু তারা এমনভাবে থাকে যেন একসঙ্গে একটি গন্তব্যে পৌঁছায়৷ এদের একজন গতিপথ বদলালে এরা দ্রুত সেই পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারে৷

সাধারণত শীত ও বর্ষায় স্টারলিংয়ের এমন ঝাঁক দেখা যায়৷ গ্রীষ্মের শেষ দিকে এই পাখিগুলোর প্রজনন প্রক্রিয়া শেষ হয়৷ এরপর বড় বড় ঝাঁকে এরা অভিযাত্রা শুরু করে৷ পরে শীতের শেষে অথবা বসন্তের শুরুতে এরা তাদের প্রজননস্থলে ফিরে আসে৷

বিশ্লেষকদের মন্তব্য যে, পাখিগুলো দলবেঁধে ঘুরে বেড়ালে এদের হাজারো চোখে একসঙ্গে খাবার খোঁজা সহজ হয়৷ এতে একই খাবারের খোঁজে থাকা প্রাণিদের এ লড়াইয়ে পরাজিত করা সহজ হয়৷

আরও একটি কারণ, নিরাপত্তা৷ চিল, বাজপাখিদের হাত থেকে বাঁচতে এমন উপায় বেছে নিয়েছে তারা৷ বিশ্লেষকরা বলেন, তারা এমনভাবে ঘুরে যেন, বাজপাখিদের চোখে একেকটি পাখি আলাদা করে ধরা পড়া কঠিন হয়ে যায়৷

অন্যদিকে কিছু পাখি ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে৷ বিশেষ করে কিউই আর মেসাইটস৷ সারা বিশ্বে কিউই আছে মাত্র ৩০০০৷ এ ধরনের পাখি মূলত শুধু নিউজিল্যান্ডে দেখা যায়৷ মেসাইটস বেশি পাওয়া যায় মাদাগাস্কারে৷ সব মিলিয়ে তাদের সংখ্যা এক লাখ ৫৪ হাজারের মতো৷ সূত্র: ডয়েচে ভেলে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৯ মে, ২০২১)