দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহাল ও আটক বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের মুক্তির দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোটের ডাকা ৮৪ ঘণ্টার হরতালের দ্বিতীয়দিন সোমবার রাজধানীর চিত্র ছিল প্রথমদিন থেকে ভিন্ন। দ্বিতীয়দিনের হরতালে রাজধানীতে গণপরিবহন চলাচল স্বাভাবিক থাকলেও যাত্রীসংখ্যা ছিল বেশ কম।

হরতালের দ্বিতীয় দিন সকাল থেকেই রাজধানীর রাস্তায় যথেষ্ট গণপরিবহন দেখা গেলেও অধিকাংশ বাস ছিল যাত্রীশূন্য। নগরীর অধিকাংশ সিগন্যাল পয়েন্টে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশকে অলস সময় কাটাতে দেখা গেছে। অন্যদিকে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ব্যবহৃত রাস্তাগুলো (ভিআইপি রাস্তা) রয়েছে রিকশার দখলে।

হরতালের দ্বিতীয় দিনে রাজধানী আদাবর, শিয়া মসজিদ, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড ও তাজমহল রোড থেকে বিভিন্ন রুটে ছাড়তে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানির গণপরিবহন। বিআরটিসির বাস কাউন্টারে যোগাযোগ করে জানা যায়, বিগত দুই দফা ৬০ ঘণ্টার হরতালে সরকারি এই গণপরিবহন সংস্থার কোনো দ্বিতল বাস রাজধানীতে চলাচল করেনি। তবে বিরোধী জোটের ডাকা তৃতীয় দফা হরতালের প্রথম দিন থেকেই রাজধানীর বিভিন্ন রুটে দ্বিতল বাস চলাচল শুরু করেছে।

এ ব্যাপারে মোহাম্মদপুরের বিআরটিসির কাউন্টার ম্যানেজার জুয়েল দিরিপোর্ট২৪কে বলেন, ‘আগের হরতালে আমাদের ডাবলডেকার বাস (দ্বিতল) নামানোর ব্যাপারে নিষেধ ছিল। তবে এবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ব্যবহৃত পুরনো ডাবলডেকার বাসগুলো দিয়ে সার্ভিস দিচ্ছি।’

জুয়েল বলেন, ‘গতকাল (রবিবার) হরতালের মধ্যেও বেশ যাত্রী দেখা গেছে। কিন্তু আজ তেমন যাত্রীর ভিড় নেই। তাই বাস ছাড়তে বেশ সময় নেওয়া হচ্ছে।’

বিআরটিসি ছাড়াও মোহাম্মদপুর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী অন্যান্য গণপরিবহন কোম্পানির বাসচলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। তবে স্বাভাবিক দিনের তুলনায় যাত্রীসংখ্যা কম হওয়ায় এসব কোম্পানির বাসসংখ্যাও কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

এদিকে রাজধানীর আসাদগেট, ধানমন্ডি ৩২ নম্বর, সিটি কলেজ, বাটা সিগন্যাল, কাঁটাবন, শাহবাগ ও মৎস্যভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিগন্যালগুলোতে কোনো যানজট দেখা যায়নি। যানজটহীন নগরীতে অধিকাংশ ট্রাফিক পুলিশকে দেখা গেছে অলস সময় কাটাতে।

সকাল সাড়ে ৯টায় আসাদগেট সিগন্যাল পয়েন্টের দায়িত্ব থাকা কোনো ট্রাফিক পুলিশ কনস্টেবলকে দেখা যায়নি। পরে এই সিগন্যাল পয়েন্টে দায়িত্বে থাকা দুজন কনস্টেবল মকবুল ও আনিসকে পাওয়া যায় একটি চায়ের দোকানে।

তারা দিরিপোর্ট২৪কে বলেন, ‘হরতালের সময় এই সিগন্যালে কোনো জ্যাম থাকে না। সবদিকের রাস্তা ফাঁকা থাকে। তাই আমাদের গাড়ি দাঁড় করানো বা ছেড়ে দেওয়ার কাজগুলো করতে হচ্ছে না।’

কনস্টেবল মকবুল বলেন, ‘এই সিগন্যালে মাত্র দুটি ক্রসিং লাইন রয়েছে। যে কারণে এখানে হরতাল ছাড়া অন্যদিনে অনেক জ্যাম হয়। কিন্তু হরতালের দিন গাড়ি কম থাকায় কোনো জ্যাম হয় না। আবার ক্রসিং লাইন দুটিতে চলাচলকারী গাড়িগুলোও নিজেদের দায়িত্বে গাড়ি থামিয়ে দেয় আবার লাইন ক্লিয়ার হলে ছেড়ে যায়। রাস্তা ফাঁকা থাকায় কারও তেমন তাড়া থাকে না।’

(দিরিপোর্ট২৪/আরএইচ/এএস/এমসি/নভেম্বর ১১, ২০১৩)