দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকার সম্পূরক বাজেট সংসদে পাস হয়েছে।

আজ (সোমবার) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ‘নির্দিষ্টকরণ (সম্পূরক) বিল-২০২১’ উত্থাপন করেন। পরে বিলটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। আগামী ৩০ জুন শেষ হতে যাওয়া অর্থবছরের কার্যক্রম নির্বাহের জন্য সংযুক্ত তহবিল থেকে মঞ্জুরিকৃত অর্থের বেশি বরাদ্দ ও নির্দিষ্টকরণের কর্তৃত্ব প্রদানের জন্য এ সম্পূরক বিল আনা হয়।

বরাদ্দকৃত ব্যয়ের চাইতে কোনো মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট খাতের ব্যয় বৃদ্ধি হলে বা বরাদ্দকৃত টাকা খরচ করতে না পারলে তা অনুমোদন করতে যে বিল পাস করা হয় বা নতুন যে বরাদ্দ দেয়া হয়, তাই মূলত সম্পূরক বিল।

এর আগে সম্পূরক বাজেটের ওপর সরকারি ও বিরোধীদলের সদস্যরা আলোচনা করেন। এ সময় সবচেয়ে বেশি সমালোচনার মুখে পড়তে হয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে। প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম প্রশ্নে বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও স্বতন্ত্র এমপিদের নানান প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয় তাকে। উঠে আসে স্বাস্থ্যখাতের নানান অনিয়ম, দুর্নীতিও। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক এ বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি।

সম্পূরক বাজেটের উপর বিরোধীদল জাতীয় পার্টি, বিএনপি ও গণফোরামের ১১ জন সংসদ সদস্য ১৯০টি ছাঁটাই প্রস্তাব দেন। তবে সেগুলো কণ্ঠভোটে বাতিল হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলো দিয়েছেন জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, মুজিবুল হক চুন্নু, শামীম হায়দার পাটোয়ারী, লিয়াকত হোসেন খোকা, রওশন আরা মান্নান, বিএনপির হারুনুর রশীদ, রুমিন ফারহানা, মোশারফ হোসেন, গণফেরামের মোকাব্বির খান, স্বতন্ত্র রেজাউল করিম বাবলু।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের ১৯টি মঞ্জুরি দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সম্পূরক বাজেটটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। ছাঁটাই প্রস্তাবগুলোর মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়। বিদায়ী অর্থবছরের মূল বাজেটে ৬২টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের অনুকূলে পাঁচ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সংশোধিত বাজেটে ১৯টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ১৩ হাজার ৯৮৭ কোটি ২৭ লাখ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ৪৩টি মন্ত্রণালয়/বিভাগের বরাদ্দ ৪২ হাজার ৪৮১ কোটি ৮৭ লাখ টাকা হ্রাস পেয়েছে। সার্বিকভাবে ২৯ হাজার ১৭ কোটি টাকা হ্রাস পেয়ে সংশোধিত বরাদ্দ নিট দাঁড়িয়েছে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকা।

সম্পূরক বাজেটে স্থানীয় সরকার বিভাগ সর্বোচ্চ দুই হাজার ৮৯০ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে। ১২৬টি চলমান এবং ৩১টি নতুন প্রকল্পে অর্থের সংস্থান করায় এ অতিরিক্ত বরাদ্দ পাচ্ছে স্থানীয় সরকার বিভাগ। আর সবচেয়ে কম ১ কোটি ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ পেয়েছে পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় বিভাগ। এ বিভাগের ১২টি চলমান প্রকল্পের অর্থের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্দ দরকার।

২০২০-২১ অর্থবছরের মূল বাজেটের আকার ছিল ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। মহামারির সঙ্কটে সেই গতিপথ ঠিক থাকেনি। সংশোধনে তা ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৯৮৩ কোটি টাকায় নেমে এসেছে।

প্রসঙ্গত, গত ৩ জুন জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের সাধারণ বাজেট পেশ হয়। একই সাথে পেশ হয় চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেট।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৭ জুন, ২০২১)