দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ৭নং ফেরি ঘাটে পদ্মায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে ওই ঘাট দিয়ে ফেরি লোড-আনলোড বন্ধ রয়েছে। একই সঙ্গে ঘাট সংলগ্ন অর্ধশতাধিক বসতবাড়িও নদী ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। দৌলতদিয়ার অন্য ঘাটগুলোও ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। দৌলতদিয়ায় ঘাট ও ফেরি সংকটে গত দুইদিন ধরে যানজট চলছে।

দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী মো. ফিরোজ শেখ জানান, ঘাট দেখভালের কাজ করেন বিআইডব্লিউটিএ। আমরা শুধু ফেরি সার্ভিস দেখি। ৭ নং ফেরিঘাট চালুর পর থেকেই ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই বিআইডব্লিউটিএর কর্তৃপক্ষকে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে।

২০১৯ সালের ৪ অক্টোবর নদীতে বিলীন হয়ে যায় দৌলতদিয়ার এক নম্বর ফেরিঘাট। এর কয়েকদিন পরই দুই নম্বর ঘাটটিও পদ্মায় ভেঙে যায়। তারপর থেকে ছয়টি ঘাটের মধ্যে চারটি ঘাট দিয়ে যানবাহন ফেরিতে ওঠানামা করে আসছে। এর মধ্যে ছয় নম্বর ফেরিঘাটটি শুধু সচল থাকে বর্ষা মৌসুমে। ফলে ছয়টি ঘাটের মধ্যে সারা বছর সচল থাকে তিন, চার ও পাঁচ নম্বর ঘাট।

ঘাট সঙ্কটের কারণে গত বছর নতুন করে তৈরি করা হয় সাত নম্বর ফেরিঘাট। প্রতি বছর নদীতে পানি বৃদ্ধি এবং কমার সময় নদীর পাড় এলাকায় ভাঙন শুরু হয়। এবারও বর্ষা শুরু হওয়ার আগেই নদীতে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে দৌলতদিয়ায় ৭ নং ফেরিঘাট এলকায় দেখা দিয়েছে ভাঙন। সেই সঙ্গে ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে ঘাট এলাকার অর্ধশত বসতবাড়ি-ঘরসহ অন্য ঘাটগুলো।

দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে ফেরিঘাটগুলো নদীতে বিলীন হয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

৭ নং ফেরিঘাট এলাকার বাসিন্দা আলেয়া বেগম জানান, নদীতে কয়দিন ধরে ভাঙন দেখা দিয়েছে। কখন কী হয় বলা যায় না। জায়গা-জমি যা ছিল তা অনেক বছর আগেই নদীর পেটে চলে গেছে। থাকার মধ্যে শুধু এখন এই বাড়ি ভিটেটুকুই আছে। এটুকু নদীতে চলে গেলে কোথায় যাব, সেই জায়গা নেই।

স্থানীয় হাফিজ মোল্লা জানান, চেয়ারম্যান-মেম্বাররা কোনো খোঁজ নেয় না। শুকনো মৌসুমে পদক্ষেপ নিলে ঘাটগুলো ভাঙনের মুখে পড়ত না। এখন যেভাবে ভাঙছে এবারের বর্ষায় একটা ফেরিঘাটও থাকবে না।

বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক মো. ফিরোজ শেখ জানান, ঘাট দেখভালের কাজ করে বিআইডব্লিউটিএ। আমরা শুধু ফেরি সার্ভিস দেখি। ৭ নং ফেরিঘাট চালুর পর থেকেই ঘাট এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যেই বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকেও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা অঞ্চলের নির্বাহী প্রকৌশলী নিজাম উদ্দিন জানান, ইতোমধ্যেই বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যানসহ আমরা ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছি। সাত নম্বর ফেরিঘাট এলাকায় ভাঙন রোধে কাজ শুরু হয়ে গেছে। এ ছাড়াও যে ঘাটগুলো সমস্যা মনে হচ্ছে, সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৮ জুন, ২০২১)