পরীমনিকেই দুষলেন নাসির উদ্দিন
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ঢালিউডের অন্যতম চিত্রনায়িকা পরীমনিকে হেনস্থার দায়ে আলোচনায় ডেভেলপার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ। চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি তিনি। গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তারের আগে গণমাধ্যমে কথা বলেছেন নাসির উদ্দিন। নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে পরীমনিকেই দুষেছেন তিনি।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর উত্তরা সেক্টর-১ নম্বরের একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পরীমনির দায়ের করা মামলায় তিন রক্ষিতা ও সহযোগী অমিসহ গ্রেপ্তার হন নাসির উদ্দিন। গ্রেপ্তারের আগে তিনি একটি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি ১০ জুন রাতে যখন ক্লাব থেকে বের হই তখন তারা (পরীমনি ও তার বন্ধু) ক্লাবে ঢোকে। তারা তখন মদ্যপ অবস্থায় ছিল। তাদের মধ্যে একটি ছেলে উশৃঙ্খল ছিল। ক্লাবে ঢোকার পর আমাদের বারের কাউন্টার থেকে বড় বড় ও দামি ড্রিংকসের বোতল জোর করে নেওয়ার চেষ্টা করে তারা।’
তিনি আরও বলেন, ‘তখন আমি তাদের কাছে গিয়ে বলি, আপনারা ড্রিংকসগুলা নিতে পারেন না। আমি তাদের বাধা দেই। আমি বলি, এটা শুধুমাত্র ক্লাবের মেম্বারদের জন্য। এখান থেকে মদ নিতে হলে তোমাদের কোনো সদস্যের অ্যাকাউন্টের বিপরীতে নিতে হবে। তারপর আমি আমার সিকিউরিটিদের ডাক দেই। নিরাপত্তারক্ষীরা এসে তাদের নিয়ে যায়।’
পরীমনির অভিযোগের বিষয়ে নাসির বলেছেন, সেদিনের ঘটনায় প্রতিবেদন ক্লাবকে দেয়া হয়েছিল। পরের দিনই আমাদের ক্লাবের নিয়ম অনুযায়ী রিপোর্ট করা হয়েছে। আমাদের স্টাফরা লিখিতভাবে সব রিপোর্ট দিয়েছে।
পরীমনির সঙ্গীদের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন উল্লেখ করে নাসির বলেন, ‘তার সঙ্গে যে ছেলেগুলো ছিল, সে আমাকে চড় থাপ্পড় দেয়। ও (পরীমণি) গ্লাস মারলে আমার ঘাড়ে লাগে। এই অবস্থায় আমার সিকিউরিটিদের আমি নির্দেশ দিই, সিকিউরিটিরা তাকে নিয়ে যায়।’ এমনকি ১০ জুন রাতে ওই ঘটনার সময়ে পরীমণি মাতাল ছিলেন বলে দাবি করেন নাসির।
এদিকে, ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে সোমবার ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ ছয়জনের নামে সাভার মডেল থানায় মামলা করেন পরীমনি। সেই মামলায় আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সকাল থেকেই রাজধানীর উত্তরা এলাকায় অভিযান শুরু করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের গুলশান বিভাগ।
গোয়েন্দারা নিশ্চিত হয় উত্তরার এই বাড়িটিতে অবস্থান করছেন প্রধান আসামি নাসির ইউ মাহমুদ। বাড়িটির তৃতীয় তলার একটি ফ্ল্যাট থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি অমিসহ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় আরও তিন নারীকে। জব্দ করা হয় দেশি-বিদেশ মদসহ মাদকদ্রব্য।
পুলিশ বলছে, এই বাসায় প্রতিদিন ডিজে পার্টির আয়োজন করতেন নাসির। উঠতি বয়সী তরুণীদের দিয়ে অনৈতিক কার্যকলাপ করানো হতো। বাড়িটিতে যাতায়াত ছিল অনেকের।
গোয়েন্দা বিভাগ (উত্তর-তেজগাঁও, গুলশান, মিরপুর ও উত্তরা) এবং সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের যুগ্ম-পুলিশ কমিশনার হারুন-অর-রশীদ বলেন, জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনির মামলার পরিপ্রেক্ষিতে নাসির উদ্দিন মাহমুদসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযানকালে নাসিরের বাসা থেকে বিদেশি মদসহ অন্যান্য মাদকদ্রব্য উদ্ধার করা হয়। তার বাসায় উঠতি বয়সী নারীরা এসে মদপান করতেন বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তার বাসায় ডিজে পার্টির আয়োজন ছিল বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৪ জুন, ২০২১)