দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের হারে ফের শীর্ষে রয়েছে খুলনা। গত ২৪ ঘণ্টায় এ বিভাগে সর্বাধিক ২৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্তের হার ছিল সর্বোচ্চ ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ।

এর আগে ২২ জুন ও ১৭ জুন খুলনা বিভাগে সর্বোচ্চ মৃত্যু ও শনাক্তের হার ছিল। মাত্র একদিনের ব্যবধানে ফের করোনায় মৃত্যু ও শনাক্তের হারে শীর্ষে উঠে এসেছে খুলনা বিভাগ।

শুক্রবার (২৫ জুন) সকালে খুলনার সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বিষয়টি জানিয়েছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিভাগে করোনার সংক্রমণ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বেড়েছে। শয্যা সংকটের কারণে খুলনা করোনা হাসপাতালে ফ্লোরে রেখে সেবা দিতে হচ্ছে রোগীদের।

এদিকে, সম্প্রতি খুলনায় সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ায় দু’দফায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও তা কাজে আসেনি। সর্বশেষ মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে এক সপ্তাহের কঠোর লকডাউন। বৃহস্পতিবার ছিল লকডাউনের তৃতীয় দিন। এ দিন সকালে লোকজন কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজার ও সড়কে মানুষের সমাগম বাড়তে থাকে। শুক্রবার লকডাউনের চতুর্থ দিন চলছে।

লকডাউনে সড়কে গত দুদিনের তুলনায় আজ প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও রিকশার চলাচল তুলনামূলক বেশি ছিল। এছাড়া, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর কিছু সংখ্যক ইজিবাইক ও থ্রি হুইলার চলাচল করতে দেখা যায়। তবে খুলনার সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। বন্ধ রয়েছে ট্রেন ও বাসসহ গণপরিবহন। এ অবস্থায় স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুন) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে খুলনা বিভাগে সর্বাধিক মৃত্যু হয়েছে। এরপরই রয়েছে রাজশাহী বিভাগ। মারা যাওয়া ৮১ জনের মধ্যে ২৩ জনই খুলনা বিভাগের। এছাড়া রাজশাহীতে ২০ জন, ঢাকায় ১৩ জন, রংপুরে ৭ জন, চট্টগ্রামে ৭, সিলেটে ৫, বরিশালে ৩ ও ময়মনসিংহে ৩ জন মারা গেছেন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ২৪ ঘণ্টায় ২৫ হাজার ৩৩৮ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছে ২৫ হাজার ২৮টি। নমুনা পরীক্ষায় নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন ৬ হাজার ৫৮ জনের। মোট নমুনা পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা রোগী শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি খুলনা বিভাগে। এরপরই রংপুর বিভাগ। খুলনা বিভাগে নমুনা পরীক্ষার তুলনায় করোনা শনাক্তের হার ৩৮ দশমিক ১১ শতাংশ, রংপুরে করোনা শনাক্তের হার ৩৭ দশমিক ৮৫ শতাংশ, বরিশাল বিভাগে ২১ দশমিক ৫২ শতাংশ, সিলেট বিভাগে ২১ দশমিক ০৪ শতাংশ, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৯ দশমিক ০২ শতাংশ, রাজশাহী বিভাগে ১৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ, ময়মনসিংহ বিভাগে ১৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ ও ঢাকা বিভাগে ১৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ জানান, খুলনায় মানুষকে সচেতন করতে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য বিভাগ সার্বক্ষণিক কাজ করছে। এক সপ্তাহের লকডাউন চলছে। লকডাউনে যেহেতু মানুষ ঘরের বাইরে বের কম হচ্ছে, জনসমাগম কম হচ্ছে। সেহেতু সংক্রমণ কমে যাবে এমনটাই প্রত্যাশা করছি আমরা।

খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক রাশেদা সুলতানা জানান, মাস্ক পরিধানের বিকল্প নেই। সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে করোনা সংক্রমণ কমানো সম্ভব।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২৫ জুন, ২০২১)