অফিসগামী মানুষের দুর্ভোগ চরমে
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে কঠোর লকডাউনে যাচ্ছে সরকার। তবে, সোমবার থেকে সীমিত লকডাউনের কারণে বন্ধ রয়েছে গণপরিবহন। অফিস স্টাফদের জন্য প্রতিষ্ঠান থেকে যাতায়াতের ব্যবস্থা করার নির্দেশনা দিয়েছে সরকার। কিন্তু সে নির্দেশনায় হচ্ছে না সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোতে। গণপরিবহন বন্ধের দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীতে হেঁটেই অফিসে যেতে দেখা যায় বহু মানুষকে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকাল থেকে নগরীর সায়েদাবাদ, যাত্রাবাড়ী, কমলাপুর, খিলগাঁও রেলগেট, শাহজাহানপুর, রাজারবাগ, ফকিরাপুল, রামপুরাসহ বিভিন্ন এলাকায় গণপরিবহন না পেয়ে মানুষকে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে। নগরীতে চলাচলকারী গণপরিবহন রিকশার ভাড়া কয়েকগুণ বেশি। এ সময় দুই একটি স্টাফ বাসে যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেলেও তা ছিল খুবই কম। বেশিরভাগ মানুষ অভিযোগ করছেন প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের জন্য নিজস্ব কোনো পরিবহন ব্যবস্থা করেনি।
রামপুরা ব্রিজে বিপুল সংখ্যক লোক কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য দাড়িয়ে ছিলো। ভাড়াও গুনতে হচ্ছে কয়েকগুণ। বাধ্য হয়ে হেঁটে অফিসে রওনা দিতে হয়েছে তাদের। অনেক জায়গায় রিকশা যাচ্ছে না। আবার গেলো কয়েকগুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।
খিলগাঁও রেলগেটে জনতা ব্যাংকের মতিলিঝ শাখার কর্মচারী নাসির উদ্দিন বলেন, অফিসে যেতে বের হয়েছি। রিকশার অভাব নেই। কিন্তু যাত্রীতে সব ভর্তি। এক-দুইটা খালি পাওয়া গেলেও ভাড়া চাচ্ছে দুই গুণ। লকডাউনের প্রজ্ঞাপনে দেখেছি অফিসগুলো নিজস্ব পরিবহনের ব্যবস্থা করবে। কিন্তু কেউ করেনি। এখন হাঁটা শুরু করেছি, আধা ঘণ্টা হাঁটলে অফিসে চলে যেতে পারবো।
মিনাহাজুল ইসলাম কাজ করেন একটি বেসরকারি সংস্থায়। তিনি ধানমন্ডি ২৭ থেকে যাবেন তেজগাঁও এলাকা। তিনি বলেন, লকডাউন হোক, আর হরতাল সব থেকে বেশি কষ্ট আমাদের মত মধ্যবিত্তদের। যাদের নিজস্ব গাড়ি আছে, তাদের জন্য লকডাউন নেই। দেখেন রাস্তায় কি পরিমান প্রাইভেট কার চলছে। তাদের কোথাও যেতেও বাধা নাই। কিন্তু আমার মত যারা বাসে যাতায়াত করি, তারা কিভাবে অফিসে যাব, এটা কেও ভাবেনা। ৪০ টাকার রিক্সাভাড়া এখন দিতে হচ্ছে ৬০ টাকা।
রাসেল নামে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে মালিবাগ রেলগেট এলাকায় রিকশার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। তিনি বলেন, বাস তো নেই। ৪০ মিনিটের বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে আছি। খালি কোনও রিকশা পাচ্ছি না। দাম বলে অনেক বেশি। কী করবো বুঝতে পারছি না।
ফার্মগেটের চিত্রও একই দেখা গেছে। অফিসে যাওয়ার জন্য বিপুলসংখ্যক মানুষকে ব্যক্তিগত গাড়ি ও রিকশার জন্যে অপেক্ষা করতে দেখা যায়। কর্মজীবী এসব মানুষের অভিযোগ প্রতিষ্ঠান তাদের জন্য যাতায়াতের বিশেষ ব্যবস্থা করেনি। ফলে বাধ্য হয়েই দুর্ভোগ ও ঝুঁকি নিয়ে অফিসে যেতে হচ্ছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ২৯ জুন, ২০২১)