ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান: পণ্য ডেলিভারি দিতে হবে ৫ দিনে
দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ক্রেতাদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে ই-কমার্সের ওপর নিয়ন্ত্রণ আনছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এরই অংশ হিসেবে ই-ক্রেতাদের কাছ থেকে অগ্রিম পণ্যমূল্য নেওয়ার ৫ দিনের মধ্যে সংশ্লিষ্ট গ্রাহকের হাতে পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করাতে ই-কমার্স কোম্পানিগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
বুধবার (৩০ জুন) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ সভায় সভাপতিত্ব করেন। এতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও সরকারের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের প্রধান মো. হাফিজুর রহমান বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় প্রণীত ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’-এর চূড়ান্ত নির্দেশিকায় অগ্রিম পণ্যমূল্য নেওয়ার ক্ষেত্রে ৫ দিনের মধ্যে পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। তবে ক্রেতা ভিন্ন জেলা বা গ্রামে অবস্থান করলে মূল্য পরিশোধের ১০ দিনের মধ্যে ডেলিভারি নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি বলেন, নতুন এই নির্দেশিকা ই-কমার্সের মতো দ্রুত বর্ধনশীল খাতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে এবং একটি সুস্থ প্রতিযোগিতার ক্ষেত্র তৈরিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি গ্রাহক প্রতারণা বন্ধ হবে। মূলত ই-কমার্স ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতেই ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা ২০২১’ প্রণয়ন করা হয়েছে।
গত ২৪ জুন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত ‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা’ বিষয়ক এক সভায় বলা হয়েছে, দেশে ব্যবসা পরিচালনারত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে ক্রেতাদের কাছে পণ্য ডেলিভারির পর টাকা পাবে। ই-কমার্স থেকে কেনাকাটায় অগ্রিম পণ্য মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে অর্ডারকৃত পণ্য ক্রেতার হাতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত তা বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে গচ্ছিত থাকবে। পণ্য ডেলিভারির পর গ্রাহকের কাছ থেকে প্রাপ্তি ম্যাসেজ পাওয়ার পর অর্থছাড় করা হবে। অর্থাৎ ই-কমার্সে বিক্রেতা ও ক্রেতার মধ্যকার পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং এ ধরনের লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়ন্ত্রণ করবে। শিগগিরই বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে এ-সংক্রান্ত একটি সার্ভিস ডেভেলপ করা হবে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (মহাপরিচালক, ডব্লিউটিও সেল) হাফিজুর রহমান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, দেশের ই-কমার্সগুলোর বিক্রেতা ও ক্রেতার মধ্যকার পেমেন্ট গেটওয়ে হিসেবে কাজ করবে বাংলাদেশ ব্যাংক। ই-কর্মাস মার্চেন্টকে যে অগ্রিম পেমেন্ট দেওয়া হবে সেটি বাংলাদেশ ব্যাংকে থাকবে। শুধুমাত্র গ্রাহক পণ্য বুঝে পাওয়ার পর এই টাকা মার্চেন্ট বা ওই প্ল্যাটফর্মকে দেওয়া হবে। পেমেন্ট সিস্টেম কন্ট্রোল করা হবে বাংলাদেশ ব্যাংকের মাধ্যমে।
তিনি বলেন, ক্রেতারা যদি অনলাইনে কার্ড বা বিকাশ-নগদের মতো সিস্টেমে পেমেন্ট করে, তাহলে পেমেন্ট কন্ট্রোল করা যাবে। এর বাইরে ভিন্ন পন্থায় যদি তারা অ্যাডভান্স দিয়ে দেয়, তাহলে কিন্তু সমস্যা হতে পারে। তবে ই-কমার্সে ক্রেতাদেরও সতর্ক থাকতে হবে। যারা অস্বাভাবিক অফার দেয়, তারা সন্দেহজনক আচরণ করতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রতারণা বন্ধ করতেই বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিয়ন্ত্রণহীন ই-কমার্স খাতকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আনার উদ্যোগ নিয়েছে।
(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ৩০ জুন, ২০২১)