দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: `যে মেয়েকে আমি দেখেছি ১০০ টাকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে। সেই মেয়ে যখন কদিন পরে ৬ তলা বাড়ির মালিক হয়ে যায়। প্রতিদিন সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে, এই প্রশ্ন সামাজিকভাবে কারো মনে প্রশ্ন আসে না?`

এমনই প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলেন দেশের চিত্রনায়িকা অরুণা বিশ্বাস। একটি রেডিও অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে এমন প্রশ্ন করেন তিনি। এ-ও বলেন তিনি, যে প্রশ্ন সাংবাদিকদের করা উচিত ছিল, যে বিষয়টি দুদকের করা উচিত ছিল সেটা আজ তাকে করতে হলো।

পরীমনির ক্লাব কান্ডের পর শিল্পীদের উপর আঙ্গুল উঠতে শুরু করেছে। শিল্পী সমাজের মানুষদের সম্পর্কে মানুষের যে অন্যরকম ধারণা ছিল তা পরীমনি কান্ডের পর আরও দৃঢ় হয়েছে। তবে আসলেই কি সকল অভিনেতা-অভিনেত্রী তার মত? এসব বিষয় নিয়ে তানভীর তারেকের উপস্থাপনায় জাগো এফএম-এর রাতাড্ডা নামক অনুষ্ঠানে এসে এসব প্রশ্ন তোলেন একসময়ের জনপ্রিয় নায়িকা অরুণা বিশ্বাস। এবং ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

অরুণা বিশ্বাস বলেন, `বর্তমান সময়ে দেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রিতে শাকিব খান সর্বোচ্চ পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত নায়ক, কই শাকিব তো এমন শো অফ করতে পারে না।`

তিনি বলেন, আজকে শিল্পীদের নিয়ে কথা উঠছে। কিন্তু কেন কথা উঠছে? আগে কেন কথা ওঠে নাই? একজন শিল্পী কত টাকা ইনকাম করলে পাঁচ কোটি টাকার গাড়ি চালাতে পারে, পাঁচ কোটি টাকার গাড়ি কিনতে পারে। আমি বলছি, আমার ১০-১২টা ছবি করার পরে একটা গাড়ি কিনতে হয়েছে। তা-ও অনেক কম দামে, ঝক্কি-ঝামেলা পোহানোর পরে।

নিজের পার্টি সম্পর্কে অরুণা বলেন, আমার পার্টি মানে কিন্তু ক্লাব টেলাব না। আমার পার্টি মানে রাতে বাইরে যাওয়া না। আমার পার্টি হলো ঘরে। আমার পার্টি হলো ভাত, মাছ, পোলাও, মাংস, ঘরে আড্ডা মারা- এই পর্যন্তই। আমি ক্লাবে যাই না। আমি ক্লাব চিনিও না। হয়তো প্রফেশনাল কারণে যাই। সিনেমার কোনো প্রগ্রাম আয়োজন করা হলে যাই। কিন্তু মাথায় ক্লাব থাকে না।

অরুণা বলেন, গার্ডিয়ানলেস হলে তো একটা বিষয় থাকেই। পারিবারিকভাবেই তো অনেকে গার্ডিয়ানলেস। অনেকের গার্ডিয়ান নেই। আমার বাবা ছিল না। তাই বলে কিন্তু আমার পদস্খলন হয়নি। এখন বলতেই পারো পার্টিতে গেলে খারাপ নাকি, তা নয়। তবে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে চেক অ্যান্ড ব্যালান্সের প্রয়োজন আছে। স্ফুলিঙের ব্যাপারটা আমি আমার মায়ের কাছ থেকে পেয়েছি। আমি শিল্পী, আমার অনেক কর্তব্য রয়েছে।

আয়ের উৎস সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে অরুণা বিশ্বাস বলেন, অনেকেই বলতে পারে আমি জেলাস। হ্যাঁ, আমি জেলাস। যে মেয়েকে আমি দেখেছি ১০০ টাকার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে, সেই মেয়ে যখন কদিন পরে ছয় তলা বাড়ির মালিক হয়ে যায়। প্রতিদিন সিঙ্গাপুরে যাচ্ছে, এই প্রশ্ন সামাজিকভাবে কারো মনে প্রশ্ন আসে না? দুদক আছে, কারো মনে প্রশ্ন আসে না? সাংবাদিকদের মনেও প্রশ্ন আসে না? তাহলে বলে নাই কেন, লিখে নাই কেন? এই দায়ভার সব শিল্পীর ওপর কেন আসবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০১ জুলাই, ২০২১)