দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: দেশজুড়ে চলমান কঠোর বিধিনিষেধের চতুর্থ দিনে ঢাকার সড়কে আগের তিনদিনের চেয়ে গাড়ির চাপ বেড়েছে। ফলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও তৎপর হয়েছে আগের চেয়ে বেশি। কোনো কোনো চেকপোস্টে যানবাহনের দীর্ঘ সারিও দেখা গেছে।

আজ রোববার (৪ জুলাই) সকালে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। ২০০ মিটার থেকে শুরু করে কোনো কোনো চেকপোস্টে গাড়ির এক কিলোমিটার দীর্ঘ সারিও দেখা গেছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছাড় দিচ্ছেন না।

যৌক্তিক কারণ দেখাতে না পারা ব্যক্তিগত গাড়িগুলোকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বলছেন, চলমান লকডাউনে ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় চলার কোনো সুযোগ নেই। তবে প্রতিষ্ঠানের নামে থাকা গাড়িগুলো রাস্তায় চলতে পারবে।

রোববার সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত সাত মসজিদ রোড, মিরপুর রোড ও গাবতলী চেকপোস্ট ঘুরে দেখা যায়, রাসেল স্কয়ার, সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড় ও গাবতলী চেকপোস্টে গাড়ির ব্যাপক জটলা। এসব চেকপোস্টে প্রত্যেকটা গাড়ি থামানো হচ্ছে। অপ্রয়োজনে বের হওয়া গাড়িগুলোকে মামলাও দেওয়া হচ্ছে।

কঠোর বিধিনিষেধে সরকারি-বেসরকারি অফিস বন্ধ রাখার কথা বলা হলেও বেশ কিছু অফিস খোলা রয়েছে। ফলে এসব প্রতিষ্ঠানে যারা কাজ করেন তারা কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য বের হয়েছেন। সেক্ষেত্রে কেউ ব্যক্তিগত গাড়িতে বা অন্যের গাড়িতে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রজ্ঞাপনে বলা ছিল, কোনো ব্যক্তিগত গাড়ি রাস্তায় নামবে না। প্রয়োজনে অফিস তার কর্মীদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করবে। মূলত এই বিষয়টি মাথায় রেখেই পুলিশ গাড়িগুলোকে কঠোরভাবে চেক করছে।

এদিকে চেকপোস্টগুলোতে মানুষকে বিভিন্ন অজুহাতও দিতে দেখা গেছে। দেখা গেছে চিকিৎসকের ব্যক্তিগত গাড়িতে তার পরিবারের লোকজন যাতায়াত করছেন, বিজিএমইএর দেওয়া অনুমতিপত্রের সাথে গাড়ির নম্বরের মিল নেই, প্রতিষ্ঠানের কর্মী পরিবহনের গাড়ি না হওয়ার পরও বলা হচ্ছে কর্মী পরিবহনে নিয়োজিত, জরুরি সেবার কথা বলে ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করাসহ নানা বাহানায় রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে। এসব গাড়িকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করছে পুলিশ, নেওয়া হচ্ছে আইনগত ব্যবস্থা।

রাস্তায় জটের বিষয়ে জানতে চাইলে ধানমন্ডি ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার জাহিদ আহসান এই প্রতিবেদককে বলেন, আজ সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস। এছাড়া লকডাউনের চতুর্থ দিন। বিগত তিনদিনের তুলনায় আজ গাড়ির চাপ একটু বেশি। গাড়ির চাপ বেশি থাকলেও আমাদের সদস্যরা কঠোরভাবেই দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছে। এছাড়া বেশকিছু গাড়ি আমরা ঘুরিয়ে দিয়েছি। কারণ রাস্তায় বের হওয়ার পক্ষে যথাযথ কারণ তাদের ছিল না।

গাবতলী চেকপোস্টে দায়িত্ব পালন করা দারুসসালাম ট্রাফিক জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার ইত্তেখায়রুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন কল-কারখানার যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন তাদের গাড়ি আমরা বেশি দেখছি। কলকারখানার নামে যেসব গাড়ি আছে আমরা তাদের অ্যালাউ করছি। বাকিদের অ্যালাউ করছি না। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিচ্ছি। রাস্তায় যেহেতু গাড়ি বেশি নেমেছে, আর কঠোর চেকিং হচ্ছে, তাই জট একটু হবেই।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ০৪ জুলাই, ২০২১)